Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

চুক্তিতে থাকতে চাই, ইরানকে বার্তা ইউরোপের

২০১৫ সালের ইরান চুক্তির শর্তগুলি এর পর থেকে তাঁরা আর মানবেন না বলে কাল হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রৌহানি। গত বছর এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ছবি রয়টার্স।

ছবি রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
তেহরান শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৯ ০২:৫৪
Share: Save:

ইউরোপের তিনটি দেশকে গত কালই ষাট দিনের সময় দিয়েছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি। জানিয়েছিলেন, এই সময়ের মধ্যে ইরানের তেল আর ব্যাঙ্কিং শিল্প নিয়ে কোনও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না নিলে দেশের উৎপাদিত অতিরিক্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম আর ভারী জল বিদেশে রফতানি বন্ধ করে দেবেন তাঁরা। এ বার একটি যৌথ বিবৃতিতে ব্রিটেন, ফ্রান্স আর জার্মানি জানাল, ইরানের কোনও হুঁশিয়ারি তারা মানবে না। তবে ইরান চুক্তির মধ্যে থেকেই ইরানের ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি চাঙ্গা করতে চায় তারা। ইরান সরকারও আজ অবশ্য জানিয়েছে, চুক্তির শর্ত না ভেঙে নিজেদের অর্থনীতি ফের সমৃদ্ধ করতে আগ্রহী তারা।

২০১৫ সালের ইরান চুক্তির শর্তগুলি এর পর থেকে তাঁরা আর মানবেন না বলে কাল হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রৌহানি। গত বছর এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গেই ইরানের ঘাড়ে চাপানো হয় একাধিক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হাত থেকে বাঁচতে প্রেসিডেন্ট রৌহানি কাল চুক্তির বাকি পক্ষগুলিকে (ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, চিন) জানিয়েছিলেন, দু’মাসের মধ্যে ব্যাঙ্ক আর তৈলক্ষেত্র নিয়ে সিদ্ধান্ত না নিলে চুক্তির শর্ত ভাঙতে বাধ্য হবে তারা। যার অর্থ পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি ফের শুরু করতে পারে তেহরান। আজ সেই হুঁশিয়ারি নিয়েই মুখ খুলেছে ব্রিটেন, ফ্রান্স আর জার্মানি। ওই তিন দেশের বিদেশমন্ত্রী সম্মিলিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তাঁরাও চুক্তিতে থাকতে চান। তবে ইরানের বেঁধে দেওয়া ষাট দিনের সময়সীমা তাঁরা মানবেন না। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার শর্ত না লঙ্ঘন করে অন্য দেশের সঙ্গে যাতে ইরান ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখতে পারে, সে চেষ্টা প্রথমে করেছিল ইউরোপের এই বাকি তিন দেশ। কিন্তু তাতে ইরানের অর্থনীতির উপরে চাপ কমেনি। ট্রাম্পের আরোপ করা শর্তের বিরোধিতাও করেছিল তারা। কিন্তু ট্রাম্পের বক্তব্য ছিল, এই চুক্তি স্থায়ী নয়, তাই এর কোনও ভবিষ্যৎ নেই। আজ ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাধ্যমে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে ইরানের উপরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছে এই তিন দেশ।

গত কাল ইরানের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিল মস্কো। বাকি দেশগুলিকে সমাধানের পথে হাঁটতে আর্জি জানিয়েছিল রুশ সরকার। আজ ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারাও চুক্তির মধ্যেই থাকতে চায়। পরমাণু অস্ত্র তৈরির কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই।

অন্য দিকে, আমেরিকার বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ আব্রাহাম লিঙ্কন গত কাল সুয়েজ খাল অতিক্রম করেছে। মিশর সরকার আজ সে কথা জানিয়েছে। ইরানকে চাপে রাখতে উপসাগরীয় অঞ্চলে তিন দিন আগে থেকেই রণতরী আর যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা শুরু করেছে আমেরিকা। ওয়াশিংটনের বক্তব্য, তাদের দিকে হামলা হলে পাল্টা আঘাত করতে প্রস্তুত মার্কিন বাহিনী। যদিও ইরান সরকার জানিয়েছে আমেরিকাকে আক্রমণের কোনও উদ্দেশ্য তাদের নেই। মার্কিন হুমকিতে তারা ভয়ও পাচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Oil Iran Britain Germany France OPEC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE