Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বিমানে মদ্যপান, দুবাইয়ে আটক শিশু-সহ ব্রিটিশ মা

পেশায় দন্তচিকিৎসক, বছর চুয়াল্লিশের এলি হলম্যান ইংল্যান্ডে কেন্টের বাসিন্দা। দিন পাঁচেকের ছুটি কাটাতে মেয়েকে নিয়ে ১৩ জুলাই এমিরেটস-এর বিমানে দুবাই আসেন। অভিযোগ, বিমানবন্দরে পা রাখতে না রাখতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন এক অভিবাসন আধিকারিক।

দুবাই
সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ০১:৫৪
Share: Save:

ভিসা নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। অভিবাসন আধিকারিকের সঙ্গে কথা কাটাকাটির ছবি তুলতে শুরু করেছিলেন পর্যটক। তাতে সমস্যা আরও বাড়ল। সঙ্গে জুড়ে গেল মদ্যপানের অভিযোগও।

দুবাই বিমানবন্দরে নেমে এক ব্রিটিশ মহিলা চার বছরের মেয়েকে নিয়ে দুর্বিষহ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। বিমানবন্দর কর্মী তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি মদ্যপান করেছিলেন কি না। তিনি উত্তরে বলেন, দুবাইয়েরই বিমান সংস্থার বিমানে ‘কমপ্লিমেন্টারি ওয়াইন’ দেওয়া হয়েছিল। তিনি সেটাই পান করেছিলেন। তার পরেই মা-মেয়েকে তিন দিন আটক করে রাখা হয়। অভিযোগ, ডিটেনশন সেন্টারের সেই নোংরা ঘরে ঠিক মতো খাবার বা পানীয় জলও দেওয়া হয়নি। এমনকি ওই মহিলাকে শৌচাগার পরিষ্কার করতে বাধ্য করা হয় বলে দাবি করেছে ‘ডিটেইনড ইন দুবাই’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

পেশায় দন্তচিকিৎসক, বছর চুয়াল্লিশের এলি হলম্যান ইংল্যান্ডে কেন্টের বাসিন্দা। দিন পাঁচেকের ছুটি কাটাতে মেয়েকে নিয়ে ১৩ জুলাই এমিরেটস-এর বিমানে দুবাই আসেন। অভিযোগ, বিমানবন্দরে পা রাখতে না রাখতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন এক অভিবাসন আধিকারিক। জানান, এলির ভিসাটি অবৈধ। লন্ডনে ফিরে যেতে হবে তাঁকে। ভদ্রলোক অত্যন্ত অভদ্র আচরণ করছিলেন বলে এলির অভিযোগ। তিনি ঘটনাটার ছবি তুলে রাখছিলেন। নতুন ভিসা নিতে পারবেন কি না জানতে চাইতেই আধিকারিক প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘আপনি কি বিমানে মদ্যপান করেছিলেন?’ এলির উত্তর শোনা মাত্র মেয়ে-সহ আটক করা হয় তাঁকে। কেড়ে নেওয়া হয় পাসপোর্ট এবং ফোন। এলির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে দেওয়া এক বয়ানে এলির দাবি, ‘তিন দিন একটি বদ্ধ, অপরিষ্কার ঘরে রাখা হয়েছিল আমাদের। যে খাবার পরিবেশন করা হয় তা মুখে তোলার অযোগ্য। ওই তিন দিন পুরোটাই প্রায় জেগে কাটিয়েছি।’ দুবাইয়ে থাকা বন্ধু-বান্ধবরা দেখা করতে এলে তাঁদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। তিন দিন পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন এলি। তবে মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে তাঁকে। তত দিন দুবাই ছেড়ে যাওয়ার উপায় নেই তাঁর।

দুবাইয়ে প্রকাশ্যে মদ্যপান নিষিদ্ধ। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, বিমানে মদ্যপান অপরাধ হবে কেন? তা ছাড়া বিদেশি পর্যটকদের জন্য যে ছাড়ের কথা শোনা যায়, তারই বা কী হল? স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির প্রধান কার্যনির্বাহী আধিকারিক রাধা স্টারলিং দাবি করছেন, ‘‘পর্যটকদের ক্ষেত্রে মদ্যপান বেআইনি নয় বলে ইচ্ছাকৃত একটা ভুয়ো ধারণা তৈরি করেছে আরব আমিরশাহী।’’ ওয়াকিবহাল শিবিরের মতে, ছাড় পেতে হলে পর্যটকদের বিশেষ পারমিট লাগে। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন হল, তা হলে বিমানে মদ পরিবেশন করা হয় কেন? জেনেশুনে পর্যটকদের টোপ দেওয়ার জন্য বিমানসংস্থাকেই দোষ দিচ্ছেন রাধা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dentist Detention Dubai Airport
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE