Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গোটা মন্ত্রিসভা বরখাস্ত চিলিতে

বরখাস্ত করে দিলেন চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনিয়েরা। জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে বদল আনবেন দেশের আর্থ-সামাজিক কাঠামোয়। এবং সে জন্যই ঢেলে সাজাবেন মন্ত্রিসভা।

লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি ও বেড়ে চলা আর্থিক বৈষম্যের প্রতিবাদে কয়েক সপ্তাহ ধরেই প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন চিলির সাধারণ মানুষ।—ছবি এএফপি।

লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি ও বেড়ে চলা আর্থিক বৈষম্যের প্রতিবাদে কয়েক সপ্তাহ ধরেই প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন চিলির সাধারণ মানুষ।—ছবি এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
সান্তিয়াগো শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৪৩
Share: Save:

দাবি ছিল, পদত্যাগ করতে হবে তাঁকে। সেই পথে না-হেঁটে তাঁর পুরো মন্ত্রিসভাই বরখাস্ত করে দিলেন চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনিয়েরা। জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে বদল আনবেন দেশের আর্থ-সামাজিক কাঠামোয়। এবং সে জন্যই ঢেলে সাজাবেন মন্ত্রিসভা।

লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি ও বেড়ে চলা আর্থিক বৈষম্যের প্রতিবাদে কয়েক সপ্তাহ ধরেই প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন চিলির সাধারণ মানুষ। সেই বিক্ষোভ বিপুল আকার ধারণ করে শুক্রবার। সান্তিয়াগো-সহ দেশের বিভিন্ন শহরে সে দিন রাস্তায় নেমেছিলেন কয়েক লক্ষ মানুষ। অন্তত দশ লক্ষ মানুষের সমাবেশে অচল হয়ে যায় রাজধানী। পিনিয়েরার পুলিশ অবশ্য চুপ করে থাকেনি। শান্তিপূর্ণ সেই মিছিলেও তারা লাঠি-গুলি-কাঁদানে গ্যাস চালায় নির্বিশেষে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী কয়েক’শো মানুষ গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। যদিও সরকারি ভাবে কোনও আহত বা মৃতের সংখ্যা জানানো হয়নি। গত সপ্তাহে বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশের লাঠি-গুলি চলায় নিহত হয়েছিলেন অন্তত ১৭ জন। প্রাক্তন স্বৈরাচারী শাসক আউগুস্তো পিনোশের জমানা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে গত তিন দশকে এত রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম আর দেখেনি চিলি।

কেন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চিলির সাধারণ মানুষ?

সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, চিলিতে গত পাঁচ বছরে গড় আর্থিক মজুরি অনেকটা বেড়েছে। তার সঙ্গে গত দশ বছরে কমেছে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষের সংখ্যাও। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, চিলির অর্থনৈতিক অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু বাস্তবচিত্রটা আলাদা।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)-র হিসেব বলছে, পৃথিবীর ৩০টি ধনী রাষ্ট্রের মধ্যে চিলিতেই অার্থিক বৈষম্যের হার সব থেকে বেশি। এবং গত কয়েক বছরে এই বৈষম্য আরও বেড়েছে। ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে এই বিপুল ফারাকের ফলে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে সাধারণ মানুষের মনে। গত বছরে পিনিয়েরা দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে (এর আগে ২০১০ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি) নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ও পরিষেবার খরচ ক্রমাগত বাড়ে। তার পর গত সপ্তাহে মেট্রোর ভাড়া এক লাফে অনেকটাই বেড়ে যাওয়ায় বিক্ষোভ ও অসন্তোষের আগুনে ঘি পড়ে।

কবে মন্ত্রিসভা ঢেলে সাজাবেন প্রেসিডেন্ট, সে কথা অবশ্য তিনি আজ স্পষ্ট করেননি। শুধু বলেছেন, ‘‘চিলি আজ এক নতুন বাস্তবের সামনে দাঁড়িয়ে। এক সপ্তাহ আগেও ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে পরিবর্তন আনবই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chile Chile Cabine Protest at Chile
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE