Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দিল্লিকে তোয়াক্কা না করেই প্রকল্প চিনের

ভারতের আপত্তির তোয়াক্কা না করেই নিঃশব্দে সিপিইসি-র (যা কিনা চিনের মহাযোগাযোগ প্রকল্প ওবর-এর আওতাধীন) ৪৩টি প্রকল্প প্রায় শেষ করে ফেলেছে চিন। বাকি ১৫৭টি প্রকল্পের কাজও শুরু হতে চলেছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০৩:২২
Share: Save:

দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠকই হোক অথবা ঘরোয়া আলোচনা। চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে যখনই কথা হয়েছে, চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি) নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সম্প্রতি পাওয়া একটি রিপোর্ট সাউথ ব্লকের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ভারতের আপত্তির তোয়াক্কা না করেই নিঃশব্দে সিপিইসি-র (যা কিনা চিনের মহাযোগাযোগ প্রকল্প ওবর-এর আওতাধীন) ৪৩টি প্রকল্প প্রায় শেষ করে ফেলেছে চিন। বাকি ১৫৭টি প্রকল্পের কাজও শুরু হতে চলেছে।

সিপিইসি নিয়ে ভারতের প্রধান আপত্তির কারণ, বাণিজ্য করিডরটি গিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে। নয়াদিল্লি বারবার বেজিংকে জানিয়েছে, ইসলামাবাদ এই এলাকাকে বেআইনি ভাবে দখল করে রেখেছে। তাই ভারত চায় না, এখানে কোনও তৃতীয় রাষ্ট্র পরিকাঠামো তৈরি করুক। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ডোকলাম পরবর্তী পর্যায়ে চিনের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরিতে একের পর এক কূটনৈতিক উপঢৌকন দিয়ে যাচ্ছে ভারত। আর নয়াদিল্লির স্পর্শকাতর ক্ষেত্রগুলিতে চাপ বাড়িয়েই চলেছে বেজিং।

পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীতে (এনএসজি) ভারতের অন্তর্ভূক্তি, পাক জঙ্গি মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা, ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে ইতিবাচক ভূমিকা নেওয়া — কোনও ক্ষেত্রেই পদক্ষেপ করতে দেখা যাচ্ছে না চিনকে। বরং ভারতের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলতে পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মলদ্বীপে বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত সহযোগিতা বাড়িয়ে চলেছে চিন। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে একঘরে করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। অথচ উহানে ১২ঘণ্টা কথা বলেছেন দুই নেতা। সহযোগিতা বাড়াতে অনেক শব্দই খরচ করেছেন চিনফিং।

অথচ ভারত দীর্ঘদিনের অবস্থান বদলে এক-চিন নীতি মেনে নিয়েছে। তাইওয়ানগামী ভারতীয় বিমানের নাম বদলে দেওয়া হয়েছে চিনের নামে। আমেরিকার অনুরোধ সত্ত্বেও সম্প্রতি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যৌথ পরিকাঠামো প্রকল্প থেকে সরে এসেছে নয়াদিল্লি। মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একাধিপত্য খর্ব করার জন্যই গত বছর আমেরিকা-জাপান-অস্ট্রেলিয়ার ত্রিদেশীয় অক্ষের সঙ্গে নয়াদিল্লি যুক্ত হয়েছিল। তবে কূটনৈতিক শিবিরের মতে, বেজিং-কে খুশি রাখতেই ভারতের এই সরে আসা। শুধু তাইওয়ান নয়, তিব্বত নিয়ে চিনের স্পর্শকাতরতার দিকটি মাথায় রেখে ফেব্রুয়ারি মাসে তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামার অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ার জন্য সরকারের শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক চুক্তি, আন্তর্জাতিক বিরোধ, আন্তর্জাতিক সংঘর্ষ- সব গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE