ভারত এবং চিনের মধ্যে সঙ্ঘাতের আর একটি বিন্দু হয়ে উঠুক মলদ্বীপ, বেজিং এমনটা চায় না। সেই কারণে মলদ্বীপের সঙ্কট নিরসনের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে চিন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই চিনা বিদেশ মন্ত্রকের সূত্রকে উদ্ধৃত করে শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে।
বেজিঙের তরফে বার বারই বলা হচ্ছে, মলদ্বীপের সঙ্কট নিরসনে কোনও বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। কিন্তু ভারত মলদ্বীপে পাঠানোর জন্য বিশেষ বাহিনী প্রস্তুত রেখেছে বলে নয়াদিল্লি সূত্রের খবর। ভারত মহাসাগরের ওই দ্বীপরাষ্ট্রে যে ভারতীয়রা রয়েছেন, তাঁদের নিরাপত্তার স্বার্থেই বিশেষ বাহিনী প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার ফোনে মলদ্বীপের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। দ্বীপরাষ্ট্রে যে রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তার নিরসনকে কতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে দিল্লি, এই ফোনালাপেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই রক্তচাপ আরও বেড়েছে চিনের। বলছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা।
আরও পড়ুন
সেনা পাঠালে জ্বলবে মলদ্বীপ, হুমকি চিনের
চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গেং শুয়াং শুক্রবার বলেছেন, মলদ্বীপের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত আন্তর্জাতিক মহলের। ‘‘মলদ্বীপের বর্তমান পরিস্থিতি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে এই সমস্যার উপযুক্ত সমাধান খুঁজে বার করা উচিত।’’ মন্তব্য চিনা মুখপাত্রের। অর্থাৎ, চিন খুব স্পষ্ট করে বোঝাতে চাইছে, কোনও সামরিক হস্তক্ষেপ নয়, বেজিং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের পক্ষে।
আরও পড়ুন
মলদ্বীপে গর্জন ড্রাগনের, ঘুম ছুটেছে দিল্লির
বিরোধী দলগুলির শীর্ষনেতাদের আগেই বন্দি করেছিলেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট জেলবন্দি নেতাদের মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিতেই ইয়ামিন আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তিনি দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন এবং সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতিকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতার করেন মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট অশীতিপর মামুন আবদুল গায়ুমকেও। চাপের মুখে সুপ্রিম কোর্টের অন্য বেঞ্চ বিরোধী নেতাদের মুক্তির নির্দেশ বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু বিরোধী দল এমডিপি-র প্রধান তথা মলদ্বীপের আর এক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদ (তিনি এখন শ্রীলঙ্কার আশ্রয়ে) আহ্বান জানিয়েছেন ইয়ামিন সরকারকে উৎখাত করার। মলদ্বীপে গণতন্ত্র ফেরাতে সে দেশে সেনা পাঠানোর জন্য ভারতকে অনুরোধ করেছেন নাশিদ। আর পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে চিন-পন্থী হিসেবে পরিচিত ইয়ামিন তাঁর অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী মোহামেদ সইদকে তড়িঘড়ি বেজিং পাঠিয়েছেন চিনের সহায়তার আশ্বাস পেতে।
প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন ভারতেও দূত পাঠাতে চেয়েছিলেন বলে খবর। নিজের বিদেশ মন্ত্রীকেই তিনি দিল্লিতে পাঠাতে চেয়েছিলেন বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু ইয়ামিনের দূতের সঙ্গে বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছে দিল্লি।
ভারতের এই অবস্থান দেখে চিন বুঝেছে, আবদুল্লা ইয়ামিনের সরকারকে সহায়তা করার পথে দিল্লি হাঁটবে না। সেই কারণেই ভারতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে চিন আলোচনা শুরু করেছে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy