হাতে সাইলারের নামে ট্যাটু এঁকেছেন ঝৌ। ছবিটি ফেসবুক থেকে নেওয়া।
বছর চারেক আগে মুক্তি পাওয়া ‘এন্টারটেনমেন্ট’ ছবির কথা মনে আছে? কোটিপতি মালিক তাঁর সমস্ত সম্পত্তি লিখে দিয়েছিলেন আদরের পোষ্য ‘এন্টারটেনমেন্ট’কে। ঠিক যেন তার বিপরীত ঘটনা এ বার চিনে। একটি সারমেয়র দৌলতে ধনকুবের হয়ে গিয়েছেন তার মালিক।
বেজিংয়ের কাছে এক পরিত্যক্ত বাড়ি। আশপাশে কেউ ঘেঁষতও না এত দিন। সেখানেই এখন বিশাল ম্যানসন। মে মাস থেকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে প্রাসাদটি। দু’ একর জমিতে রয়েছে অতিথিশালা, রয়েছে স্পা, ইন্ডোর পুল, ট্রাম্পোলিন। রয়েছে পার্টি রুম। চকবোর্ড ওয়ালও রয়েছে আঁকিবুকির জন্য। আর রয়েছে সাইলারের দুটো মূর্তি। সাইলার কে জানতে ইচ্ছে করছে নিশ্চয়ই! পাঁচ লক্ষ ডলারের বাড়িতে যে থাকে, সে নিশ্চয়ই বিশেষ কেউ। সাইলার আসলে সেই কুকুর। চিনে যাকে বলা হচ্ছে ‘কালচারাল অবসেশন’।
‘‘ওর জন্যই আমার সব কিছু। ও আসার আগে আমার কিছুই ছিল না’’— বললেন সাইলারের মালিক বছর একত্রিশের ঝৌ তিয়াংশিয়াও। বেজিং শহরের চারপাশে কান পাতলেই সাইলারের নাম শোনা যাচ্ছে। সে যে ‘সেলেব্রিটি অ্যানিম্যাল।’
আদরের পোষ্যর সঙ্গে খেলায় মত্ত ঝৌ।
সাইলার আর ঝৌ-এর গল্পটা কিন্তু একদম ফিল্মের মতোই। চিনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মাও জে দংয়ের আমলে সারমেয় নিয়ে নানারকম বিধিনিষেধ ছিল। তবে পরবর্তীতে তা শিথিল হয়। চার বছর আগে পর্যন্ত স্কুলছুট ঝৌ ঠাকুরমার সঙ্গে থাকতেন আর ভিডিও গেমস খেলে দিন কাটাতেন। কোনও রকমে খাওয়াটুকু জুটত তাঁদের। এমন সময় তাঁর বন্ধু পোষ্য কেনার কথা বলেন। ঝৌ খুব সস্তায় একটি কুকুরছানা কেনেন।
আরও পড়ুন: সপ্তাহে মাত্র চার দিন কাজ আর তিন দিন ছুটি!
প্রিয় শো-র সুপারহিরোর চরিত্র থেকে ঝৌ তাঁর পোষ্যের নাম দেয় সাইলার। আসলে সাইলার তার কাছে, ‘লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট’। সাইলার তো মানুষের মতোই হাঁটে। হাই ফাইভের মানে জানে। টেবিলের উপর বালিশ মাথায় ঘুমাতে যায়। আর এই সবই ইউটিউব ভিডিয়ো দেখে ঝৌ শিখিয়েছিলেন সাইলারকে। শিখিয়েছিলেন লেডি গাগার গানের সঙ্গে নাচতেও। সাইলারের এই ভিডিও শেয়ার করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তারপরই সাদা-কালো রঙের মিশেলে এই দস্যিটা সব্বার মন জয় করে নিয়েছে। সাইলারের আট লক্ষেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
দেখুন ভিডিয়ো:
ভিডিয়ো জনপ্রিয় হওয়ার পর থেকেই ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে ঝৌয়ের। ভিডিয়ো প্রতি মিলতে থাকে টাকা। প্রত্যেকে সাইলারকে দেখতে চায়। আদর করতে চায়। ভিডিয়ো থেকে পাওয়া টাকা জমিয়েই সাইলারের জন্যই ওই পরিত্যক্ত বাড়িটাকে বছর দু’য়েক আগে কেনে ঝৌ। শুরু হয় তার মেকওভার। পোষ্যদের জন্য বিশেষ খাবার আর খেলনার ই-কমার্স সাইটও খুলে ফেলে। ফুলে ফেঁপে ওঠে ব্যবসা। এই ম্যানসনেই তার পোষ্যদের জন্য পার্লার ও স্পা রয়েছে। যেখানে সারমেয়রা অয়েল ম্যাসাজও করতে পারে ৪০০ ডলারের বিনিময়ে। রয়েছে ২৬ ডলারে পোষ্যদের মেডিসিনাল স্পা-এর ব্যবস্থাও। এ ভাবে দু’বেলা ঠিকমতো খেতে না পাওয়া ঝৌ এখন ধনকুবের ব্যবসায়ী।
আরও পড়ুন: জন্মের আগে থেকেই উইকিপিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট রয়েছে জর্জের!
তবে ঝৌয়ের একটাই ভাবনা। প্রিয় সাইলার যেন ভাল থাকে। এতজন সঙ্গীর সঙ্গে দৌড়ঝাঁপ করে যেন ক্লান্ত না হয়ে পড়ে সাড়ে চার বছরের সাইলার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy