আপাত ভাবে একটু হলেও সুর নরম করেছে আমেরিকা। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র সঙ্কট নিয়ে তারা আলোচনায় রাজি বলে জানিয়েছে। মার্কিন এই অবস্থানকে বৃহস্পতিবার স্বাগত জানিয়েছে চিন। পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে তাদের যে ঘোর আপত্তি রয়েছে, তা-ও গোপন করেনি বেজিং।
উত্তর কোরিয়ায় পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে গোটা কোরীয় উপদ্বীপ এবং আমেরিকায় যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনার কথা গোড়া থেকেই বলে আসছে চিন। ট্রাম্প প্রশাসন বুধবার বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্র এবং পরমাণু সংক্রান্ত সব কর্মসূচি অবিলম্বে বন্ধ করতে চাপ বাড়ানো হবে উত্তর কোরিয়ার উপরে।
এই সব কর্মসূচি এমনিতেই নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব বিরোধী। এ জন্য আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ অথবা কূটনৈতিক স্তরে চাপ তৈরি করাই আমেরিকার লক্ষ্য। এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, ‘‘কোরীয় উপদ্বীপে শান্তিপূর্ণ পথে পরমাণু অস্ত্র রোধ করা হোক এবং স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক। সেই লক্ষ্যে এগোতে আলোচনার পথ খোলা রয়েছে আমেরিকার দিক থেকে। কিন্তু নিজেদের এবং মিত্র দেশকে বাঁচাতেও আমরা প্রস্তুত।’’
চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেছেন, ‘‘আমেরিকার তরফে এ ধরনের প্রস্তাব আসছে, সেটা আমাদের নজরে রয়েছে। এই বার্তা ইতিবাচক এবং এই পথে কোরীয় দ্বীপে শান্তি ফেরাতে জরুরি।’’
যদিও উত্তর কোরিয়া ফের কোনও রকম বাড়াবাড়ির ইঙ্গিত দিলেই সে দেশের বিরুদ্ধে ‘দ্রুত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ’ করা হবে বলে বৃহস্পতিবার যৌথ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া এবং আমেরিকা। চিনের আপত্তি সত্ত্বেও দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র বিরোধী ব্যবস্থা নিয়ে শীঘ্রই হাজির হবে মার্কিন রণতরী ইউএসএস কার্ল ভিনসন। তা ছাড়াও বুধবার থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সোলের ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে একটি গল্ফ কোর্সে ‘টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স’-এর (সংক্ষেপে থাড, এটিও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বিরোধী ব্যবস্থা) বিভিন্ন অংশ নিয়ে যাচ্ছে। যা থেকে স্পষ্ট থাড প্রস্তুত হওয়া সময়ের অপেক্ষা।
থাড নিয়ে আপত্তি চিনেরও। উল্লেখ্য, কালই চিন তাদের দেশে তৈরি প্রথম বিমানবাহী রণতরীর ছবি প্রকাশ করে চমকে দিয়েছে বিশ্বকে। চিন বা আমেরিকা হুঁশিয়ারি দিলেও দমছে না উত্তর কোরিয়া। সে দেশের মানবাধিকার সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের এক অধিকর্তা সোক চোল ওন মার্কিন সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘আমেরিকা আগ্রাসন বন্ধ না করলে পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি থেকে সরব না।’’
তবে এই প্রথম কিম জং উনের দেশ রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কাউন্সিলের এক মহিলা বিশেষজ্ঞকে নিজেদের দেশে ঢুকতে দিচ্ছে। উত্তর কোরিয়া মানবতার বিরুদ্ধে বহু দিন ধরেই অপরাধ চালাচ্ছে এবং ভয়াবহ কারাগারে ১ লক্ষ ২০ হাজার মানুষকে আটক করে রেখেছে—এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কাউন্সিল আগেই অভিযোগ এনেছিল। তার পরেও পিয়ংইয়ংয়ের কাছ থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছেন কাউন্সিলের বিশেষজ্ঞ ক্যাটালিনা ডিভ্যানডাস-আগুইলার। প্রতিবন্ধীদের অধিকার সংক্রান্তে কাজে তাঁকে দেশে ঢোকার অনুমতি দিয়েছে কিম প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy