বুলেট ট্রেন। ছবি সংগৃহীত।
তেমন ঘাম না ঝরিয়েই চিন থেকে চলে আসা যাবে কলকাতায়! আরও দু’টি দেশ মায়ানমার আর বাংলাদেশ পেরিয়ে। বিমানে নয়, ট্রেনে। বুলেট গতিতে।
এই রুটে বুলেট ট্রেন চালু করতে চাইছে চিন। যোগাযোগব্যবস্থা, বাণিজ্য সম্পর্ক, চারটি দেশের মানুষের মধ্যে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বন্ধনকে জোরদার করে তুলতেই ওই বুলেট ট্রেন চালুর ভাবনা। বুধবার কলকাতায় এ কথা জানিয়েছেন চিনের কনসাল জেনারেল মা ঝানয়ু।
চিনা দূতাবাস ও অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে একটি ‘থিঙ্কট্যাঙ্ক’ সম্মেলনে গত কাল চিনের কনসাল জেনারেল বলেন, ‘‘আমরা এই রুটে বুলেট ট্রেন চালুর অধীর অপেক্ষায় রয়েছি। যার মাধ্যমে অনায়াসেই রেলপথে জুড়ে দেওয়া যাবে চারটি দেশ চিন, ভারত, বাংলাদেশ ও মায়ানমারকে। উপকৃত হবে গোটা এশিয়াই।’’
আরও পড়ুন- ট্র্যাক না ছুঁয়ে এই ভাবেই উড়ে যায় বুলেট ট্রেন
‘চিন ও পূর্ব ভারতের মধ্যে যোগাযোগ, বাণিজ্য সম্পর্ক ও বিনিয়োগের সুযোগ’ শীর্ষক ওই সম্মেলনে ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট (আইআইএম)-এর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকরা। ছিলেন চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস, ইউনান অ্যাকাডেমি অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস ও সিচুয়ান অ্যাকাডেমি অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর বিশেষজ্ঞরাও।
চারটি দেশের কোন কোন জায়গা দিয়ে যাবে ওই বুলেট ট্রেন?
ঝানয়ু তা সবিস্তার না জানালেও, চিনা দূতাবাস সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে যে রুটে বুলেট ট্রেন চালানোর কথা ভাবা হয়েছে, তা হল; দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের কুনমিং থেকে রওনা হয়ে ওই ট্রেন যাবে মায়ানমারের মান্দালয়ে। সেখান থেকে ঢুকবে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম থেকে রওনা হয়ে পৌঁছবে ঢাকায়। সব শেষে আসবে কলকাতায়। আবার তা কলকাতা থেকে কুনমিং-এ পৌঁছবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, মান্দালয় পেরিয়ে। এটাকেই ‘বিসিআইএম (বাংলাদেশ, চিন, ভারত ও মায়ানমার) অর্থনৈতিক করিডর’ বলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষেই চলবে দেশের প্রথম বুলেট ট্রেন
ঝানয়ু এও বলেছেন, ‘‘এই প্রকল্পকে হাতিয়ার করে চিন অন্য দেশে নাক গলাতে চাইছে, এটা মনে করলে ভুল হবে। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারে আমরা রাশিয়ার সঙ্গেও এমন প্রকল্প করেছি। আমরা চাইছে, এমন প্রকল্প হোক ভারতের সঙ্গেও।’’
চিনের আগ্রহ বহু দিন ধরেই
দক্ষিণ-পশ্চিম চিন থেকে কলকাতা পর্যন্ত রুটে বুলেট ট্রেন চালানোর জন্য গত কয়েক বছর ধরেই আগ্রহ প্রকাশ করে চলেছে। তার ভিত গড়ে তোলার চেষ্টায় পাঁচ বছর আগে, ২০১৩-য় কলকাতা থেকে কুনমিং পর্যন্ত একটি ‘কার র্যালি’রও আয়োজন করা হয়।
চিনের বুলেট ট্রেন
আরও দেখুন- দেখে নিন বিশ্বের দ্রুততম ট্রেনগুলি
আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে, সেই সময় যে কার র্যালি হয়েছিল, তাতে কলকাতার যশোহর রোড ধরে যাওয়া হয়েছিল ঢাকায়। সেখান থেকে সিলেট হয়ে শিলচর ঘুরে যাওয়া হয় জিরিবাম, জিরিঘাটে। সেখান থেকে ইম্ফল হয়ে মোরে-টামু পেরিয়ে মায়ানমারের মান্দালয়ে। তার পর সেখান থেকে চিনের ইউনান প্রদেশের রুইলিতে। তার পর কুনমিং-এ।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy