Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
International

মার্কিন কূটনীতি ভেঙে ট্রাম্পের ফোন তাইওয়ানে, তীব্র ক্ষোভ বেজিঙের

বেজিং কিছু টের পাওয়ার আগেই তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনে কথাবার্তা হয়ে গেল ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। খানিকটা চুপিসাড়েই, শুক্রবার। আর সে কথা তাইওয়ানের সংবাদমাধ্যম চাউর করে দিতেই রাগে ফুঁসে উঠেছে চিন।

ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৭:০৬
Share: Save:

বেজিং কিছু টের পাওয়ার আগেই তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনে কথাবার্তা হয়ে গেল ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। খানিকটা চুপিসাড়েই, শুক্রবার। আর সে কথা তাইওয়ানের সংবাদমাধ্যম চাউর করে দিতেই ‘রাগে’ ফুঁসে উঠেছে চিন। কারণ, তাইওয়ানকে ‘চিনেরই অঙ্গ’ বলে মনে করে বেজিং।

তাই তার যে যে ‘স্পর্শকাতর’ বিষয়ে অন্য কোনও দেশ হাত ছুঁইয়ে ফেললে একেবারে রে’ রে’ করে ওঠে চিন, সেই দলাই লামা আর হংকঙের মতো ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাইওয়ানে ‘হাত দিয়েছেন’ শুনেই বেজিং রীতিমতো রেগে টং!

শনিবার সাতসকালেই বেজিংয়ের সেই ‘রাগ’ ফেটে পড়েছে কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ‘পিপলস্‌ ডেলি’র একটি টুইটে। তাতে দেওয়া হয়েছে চিনা বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতি। সেই বিবৃতিতে বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘তাইওয়ানের সঙ্গে আমেরিকার কোনও রকম সরকারি বা সামরিক যোগাযোগের তীব্র বিরোধিতা করছে চিন। তা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।’’


টুইটে চিনা বিদেশমন্ত্রকের সেই ফুঁসে ওঠা!

১৯৭৯ সালে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেই থেকে আমেরিকা তার দূতাবাস গুটিয়ে নেওয়ার পর এই প্রথম কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি বাক্যালাপ হল তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইয়াং-ওয়েনের। টেলিফোনে। কাকপক্ষী টের পাওয়ার আগেই। প্রথম সারির মার্কিন দৈনিক ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ জানাচ্ছে, হোয়াইট হাউসে ওবামা প্রশাসনের আমলারাও ট্রাম্প ও ইয়াং-ওয়েনের দূরভাষে ওই ‘আলাপচারিতা’র খবর আগে জানতেন না। টেলিফোনের পরেই ট্রাম্পের সতীর্থরা সে খবর জানিয়ে দেন ‘সাদা বাড়ি’তে (হোয়াইট হাউস)।

তার পরেই হইহই শুরু হয়ে যায়, মার্কিন মুলুকে। কারণ, ৩৭ বছর পর ফের তাইওয়ানের সঙ্গে ‘টেলিযোগাযোগ’ গড়ে যাকে বলে ‘ঐতিহাসিক’ কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন ভাবী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আর টনক নড়ে যায় চিনের, দলাই লামা (তিব্বত), হংকঙের মতো ‘স্পর্শকাতর’ বিষয় তাইওয়ানে ট্রাম্পের ‘হাত পড়ায়’। হিলারি বিজয়ের পর ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আগবাড়িয়ে ফোনটা করেছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙ, নভেম্বরের ১৩ তারিখে। শুভেচ্ছা জানাতে। তার পরেও ট্রাম্প তাইওয়ানে ‘হাত দেওয়ায়’ বেশ কিছুটা হকচকিয়েই গিয়েছে চিন। আর ‘পিপলস্‌ ডেলি’র মাধ্যমে সেই ‘রাগ’ প্রকাশ করতে দেরিও করেনি বেজিং।


‘ব্যালান্সের খেলা’ শুরু ট্রাম্পের, টুইটে

তার পরেই ‘ব্যালান্সে’র খেলা শুরু হয়ে যায় ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সতীর্থ মহলে! জল্পনা শুরু হয়ে যায় কে কাকে প্রথম ফোনটা করেছিলেন। এর পর ট্রাম্প নিজেই টুইট করে জানিয়ে দেন, ফোনটা তাঁকে প্রথমে করেছিলেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট ইয়াঙ-ওয়েনই। শুভেচ্ছা জানাতে। কিন্তু তার পরেও জল অনেক দূর গড়াচ্ছে বুঝে আবার টুইট করেন ট্রাম্প। তাতে লেখেন, ‘‘আমেরিকা যদি তাইওয়ানকে কয়েকশো’ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বেচতে পারে (পড়ুন, ওবামা প্রশাসনের ঘাড়ে বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা), তা হলে টেলিফোনে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের শুভেচ্ছা-বার্তা নিতে আমার বাধাটা কোথায়?’’

এর পর চিনের ‘রাগ’ও দৃশ্যতই কিছুটা নেমে যায়! বেজিংয়ের তরফে শুরু হয়ে যায় ‘জল মেপে খেলা’! সম্ভবত দক্ষিণ চিন সাগরের কথা মাথায় রেখে কে কাকে আগে ফোনটা করেছিলেন, সে ব্যাপারে ট্রাম্পকেই ‘বেনিফিট অফ ডাউট’-এর সুযোগ দেওয়ার তৎপরতা শুরু হয়ে যায় বেজিঙের। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াঙ ই টুইট করে বলেন, ‘‘তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের ওই কুশলী টেলিফোনে বেজিঙের ‘এক চিন’ নীতি যেমন বদলাবে না, তেমনই আমেরিকার সঙ্গে চিনের সুস্থ সম্পর্কেও তা কোনও প্রভাব ফেলবে না।’’


সুর নরম চিনের! ‘জল মেপে খেলা’ শুরু বিদেশমন্ত্রীর! টুইটে

ফলে, ২৪ ঘণ্টা আগে ওঠা ‘ঝড়’কে সামলানোর জন্য দৃশ্যতই উদ্যোগী হয়ে ওঠেন ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও চিনা প্রশাসন- ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’!

আরও পড়ুন- নয়া প্রতিরক্ষাসচিব ‘ম্যাড ডগ’ ম্যাটিস

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE