Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হংকং নিয়ে ফের কড়া সুর চিনের

দিন কয়েক আগে কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে প্লেনাম শুরু হয়েছিল বেজিংয়ে। চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং স্বয়ং তার পৌরোহিত্য করেছেন। সেই সম্মেলনে আলোচনার পুরোভাগে ছিল হংকংয়ের বর্তমান পরিস্থিতি।

হংকংয়ের রাস্তায় প্রতিবাদীরা।—ছবি এএফপি।

হংকংয়ের রাস্তায় প্রতিবাদীরা।—ছবি এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
বেজিং শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১৭
Share: Save:

পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে হংকংয়ে। অর্ধ স্বায়ত্তশাসিত এই অঞ্চলের পরিস্থতি নিয়ে আরও এক বার কড়া বার্তা দিল বেজিং। হংকং নিয়ে তাদের ‘এক দেশ দুই ব্যবস্থা’ নীতিতে কেউ আঘাত আনতে গেলে, তা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে চিন।

দিন কয়েক আগে কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে প্লেনাম শুরু হয়েছিল বেজিংয়ে। চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং স্বয়ং তার পৌরোহিত্য করেছেন। সেই সম্মেলনে আলোচনার পুরোভাগে ছিল হংকংয়ের বর্তমান পরিস্থিতি। ১৯৯৭ সালে ব্রিটেন থেকে চিনের কাছে হংকংয়ের ক্ষমতা হস্তান্তরের পরে এত বড় ও জোরালো প্রতিবাদ দেখা যায়নি। টানা কয়েক মাস ধরে চলা সেই অশান্ত পরিস্থিতি কী ভাবে সামলানো যায়, তা নিয়ে কিছু নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বেজিং ভাবছে বলে জানিয়েছেন হ‌ংকং ও ম্যাকাওয়ের আইন কমিশনের অধিকর্তা শেন চুনইয়াও। যার মধ্যে অন্যতম হল প্রশাসনিক প্রধান বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় রদবদল এবং হংকংয়ের বাসিন্দাদের মধ্যে দেশাত্মবোধ বাড়ানোর ভাবনা।

হংকংয়ে প্রশাসনিক প্রধান নির্বাচিত হন না। ১২০০ সদস্যের কমিটি দ্বারা মনোনীত হন, যাতে সায় থাকে বেজিংয়ের। ২০১৬ সালে ৭৭৭ জন সদস্যের সম্মতিক্রমে

হংকংয়ের কার্যনির্বাহী প্রধান হন ক্যারি ল্যাম। বিক্ষোভ সামলাতে এত দিন ল্যাম ও তাঁর পুলিশের উপরেই আস্থা রেখে এসেছে বেজিং। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরেই কানাঘুষো যে, গোটা বিক্ষোভ পর্বে ল্যামের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট বেজিং তাঁকে সরাতে পারে। সরাসরি সে বার্তা এখনও না দিলেও প্রধান বাছাই প্রক্রিয়ায় রদবদলের ভাবনা সেই জল্পনাই আরও উস্কে দিয়েছে। একই ভাবে হংকংয়ের সাধারণ মানুষ যাতে চিনা ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বেশি করে জানতে পারেন, তার জন্য স্কুল-কলেজের পাঠ্যবইয়েও বদল আনার কথা ভাবা হচ্ছে। সেই সঙ্গে জরুরি ভিত্তিক আইনেও পরিবর্তন আনা হতে পারে।

তবে চিনের হুঁশিয়ারি থাকলেও হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদের রাস্তা থেকে সরছেন না। যার প্রভাব পড়েছে এ বারের হ্যালোউইন উৎসবেও।

অক্টোবরে চিনের জাতীয় দিবসে প্রবল বিক্ষোভের জেরে গোটা হংকংয়ে মুখোশ পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন ল্যাম। কিন্তু হ্যালোউইনের সাজকে হাতিয়ার করে বিক্ষোভকারীরা ফের বড় আন্দোলনে নামতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আর সেই জন্যই বিভিন্ন এলাকায় পার্টিগুলোতেও তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। আজই হংকংয়ের বিভিন্ন এলাকায় মুখোশ পরে প্রতিবাদে নেমেছেন চিন-বিরোধী বিক্ষোভকারীরা। উপায় না দেখে বিভিন্ন হ্যালোউইন কস্টিউম পার্টিতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। পার্টিতে অংশ নেওয়া তরুণ-তরুণীরা প্রবল ক্ষুব্ধ।

অনেকেরই দাবি, বছরের একটা দিন মজা করার সুযোগ হাতছাড়া করতে হচ্ছে পুলিশের জন্য। পুলিশ প্রধান অবশ্য কড়া বার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, চাইলে যে কোনও সময়ে যে কোনও ব্যক্তিকে পুলিশ মুখোশ খুলে বা মুখের রং সরিয়ে নিজের পরিচয় প্রকাশে বাধ্য করতে পারে। আইন অনুযায়ী, পুলিশকে কেউ আটকাতে পারেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hong Kong China Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE