Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বিতর্কিত কৃত্রিম দ্বীপ বাঁচাতে সমুদ্রে পরমাণু কেন্দ্র ভাসাচ্ছে চিন!

সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ আগেই তৈরি করেছিল। এ বার সাগরে ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দক্ষিণ চিন সাগরে কর্তৃত্ব আরও দৃঢ় করতে এমনই পরিকল্পনা বেজিং-এর। কৃত্রিম দ্বীপে তৈরি করা বিশাল সামরিক পরিকাঠামো চালু রাখতে প্রচুর বিদ্যুতের প্রয়োজন।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ১১:৪৬
Share: Save:

সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ আগেই তৈরি করেছিল। এ বার সাগরে ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দক্ষিণ চিন সাগরে কর্তৃত্ব আরও দৃঢ় করতে এমনই পরিকল্পনা বেজিং-এর। কৃত্রিম দ্বীপে তৈরি করা বিশাল সামরিক পরিকাঠামো চালু রাখতে প্রচুর বিদ্যুতের প্রয়োজন। তাই মাঝ সাগরেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভাসিয়ে দেওয়ার পথে এগোতে শুরু করেছেন শি চিনফিং।

প্যারাসেল আইল্যান্ডস আর স্প্র্যাটলি আইল্যান্ডস এখন হল পৃথিবীর মানচিত্রে সেই কয়েকটি বিন্দু, যেগুলিকে ঘিরে আন্তর্জাতিক রাজনীতি এখন সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত। বলছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ এবং গৃহযুদ্ধ চলছে ঠিকই। কিন্তু দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপ প্যারাসেল আর স্প্র্যাটলিকে ঘিরে পৃথিবীর বৃহত্তম শক্তিগুলি যে ভাবে হুঁশিয়ারি আর পাল্টা হুঁশিয়ারি ছুড়তে শুরু করেছে পরস্পরকে, তাতে বড় বিপদ ঘনিয়ে ওঠার আশঙ্কা কেউই উড়িয়ে দিচ্ছেন না। আমেরিকা-সহ ন্যাটোভুক্ত সব দেশতো বটেই, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং দক্ষিণ চিন সাগরের আশেপাশে অবস্থিত অনেকগুলি দেশই বলছে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় ঢুকে কৃত্রিম দ্বীপ বানিয়েছে চিন। কিন্তু সব অভিযোগ নস্যাৎ করে চিন পরিকাঠামো বাড়িয়ে চলেছে কৃত্রিম দ্বীপে। আমেরিকা একাধিক বার চিনের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপের আশেপাশে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে চিনকে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছে, দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিং-এর আধিপাত্য কায়েমের চেষ্টা মেনে নেবে না ওয়াশিংটন। চিন পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে দ্বীপগুলিতে সামরিক পরিকাঠামো দ্রুত বাড়াতে শুরু করেছে। রেডার সিস্টেম, লাইট হাউজ, সেনা ব্যারাক, বন্দর, বিমানঘাঁটি— সবই তৈরি হয়েছে বা হচ্ছে ওই সব দ্বীপে। কিন্তু এই বিপুল পরিকাঠামো চালু রাখার জন্য প্রচুর বিদ্যুৎ প্রয়োজন। প্যারাসেল এবং স্প্র্যাটলি মূল ভূখণ্ড থেকে বহু দূরে মাঝ সাগরে অবস্থিত হওয়ায় চিনের পাওয়ার গ্রিড থেকে সেখানে বিদ্যুৎ পাঠানো সম্ভব নয়। তাই বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সমুদ্রে সুবিশাল জাহাজ ভাসিয়ে তাতে পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিন। সেই ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কৃত্রিম দ্বীপে সরবরাহ করা হবে বিদ্যুৎ।

আরও পড়ুন:

গঠিত হল জয়েন্ট ব্যাটল কম্যান্ড, যুদ্ধের জন্য তৈরি থাকছে চিন?

চিনের সরকারি সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থা চায়না শিপ বিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন এই ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করবে। চিনই যে ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রথম তৈরি করছে, তা নয়। আমেরিকা অনেক আগেই একাধিক যুদ্ধজাহাজ এবং সাবমেরিনে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। কিন্তু এক বা একাধিক দ্বীপের সামগ্রিক বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সমুদ্রে ভাসমান জাহাজে তৈরি হবে পরমাণু বিদ্যুৎ, এমন বৃহৎ প্রকল্প সচরাচর দেখা যায় না। চিনের এই প্রকল্পের দিকে স্বাভাবিক ভাবেই নজর রাখছে গোটা বিশ্ব। তবে দক্ষিণ চিন সাগরে মাঝেমধ্যেই ঘনিয়ে ওঠা টাইফুন, এই ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। টাইফুন ধেয়ে আসার খবর পাওয়া গেলেই দক্ষিণ চিন সাগরে দ্রুত অবস্থান পরিবর্তন করে জাহাজগুলি। কিন্তু যে বিশাল জাহাজে পরমাণু বিদ্যুৎ তৈরি করবে চিন, টাইফুন থেকে বাঁচতে তা কত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করতে পারবে, সে নিয়ে সংশয় রয়েই গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE