Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ভারত না পিছোলে ‘স্বাধীন সিকিম’এ উস্কানির হুমকিও দিচ্ছে চিন

হুমকির সুরেই ‘গ্লোবাল টাইমস’ আজ প্রথমে সম্পাদকীয়তে বলেছিল, ‘‘ভারত যদি চিনের সঙ্গে এ বার সংঘাতে যেতে চায়, তা হলে ১৯৬২ সালের থেকেও বেশি লোকসান হবে তাদের। ভারত নিজেদের সম্মান বজায় রেখে ডোকলাম এলাকা থেকে তাদের সেনা সরিয়ে নিক। না হলে ভারতীয় সেনাকে আমরা তাড়িয়ে ছাড়ব।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
বেজিং শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৭ ০২:৫৬
Share: Save:

দিল্লিকে প্যাঁচে ফেলতে এ বার সিকিম ও ভুটানে ভারত-বিরোধী আবেগ খুঁচিয়ে তোলার হুমকি দিল চিন। সে দেশের সরকারি সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’-এর একটি উত্তর-সম্পাদকীয়তে দিল্লির উদ্দেশে বলা হয়েছে, দলাই লামাকে ব্যবহার করার কৌশল পুরনো হয়ে গিয়েছে। ওই পথে ভারতের কোনও লাভ হবে না। উল্টে দিল্লির পক্ষে সংবেদনশীল বিষয়গুলি নিয়ে পাল্টা তাস খেলতে পারে বেজিং। তার জেরে এমনিতেই অশান্ত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল আরও অশান্ত হয়ে উঠেতে পারে। বদলে যেতে পারে দক্ষিণ হিমালয়ের ভূ-রাজনীতি।

সিকিম সীমান্তে টানাপড়েন নিয়ে রোজই দিল্লিকে নানারকম কটাক্ষ ছুড়ে দিচ্ছে ড্রাগন। সেই হুমকির সুরেই ‘গ্লোবাল টাইমস’ আজ প্রথমে সম্পাদকীয়তে বলেছিল, ‘‘ভারত যদি চিনের সঙ্গে এ বার সংঘাতে যেতে চায়, তা হলে ১৯৬২ সালের থেকেও বেশি লোকসান হবে তাদের। ভারত নিজেদের সম্মান বজায় রেখে ডোকলাম এলাকা থেকে তাদের সেনা সরিয়ে নিক। না হলে ভারতীয় সেনাকে আমরা তাড়িয়ে ছাড়ব।’’ ভারতীয় সেনাকে উৎখাত করার প্রয়োজনীয় শক্তি যে পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) রয়েছে, তা-ও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সেই হুমকিই পরে কয়েক পর্দা চড়েছে। কাগজটি সরাসরি বলেছে, ‘সিকিমের ভারতে অন্তর্ভুক্তি ২০০৩ সালে মেনে নিয়েছিল বেজিং। কিন্তু তা পুনর্বিবেচনার সময় এসেছে। সিকিমের স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থনের সুর এখনও রয়েছে চিনে। সেই সমস্ত কণ্ঠস্বর সিকিমের স্বাধীনতার দাবিকে তুলে ধরবে।’’ একই সঙ্গে বলা হয়েছে, ‘‘ভুটানের কূটনৈতিক সার্বভৌমত্ব ও প্রতিরক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করছে ভারত। ভারতের চাপেই চিন বা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়তে পারছে না ভুটান। চিনের এলাকায় ঢুকে রাস্তা তৈরিতে বাধা দিচ্ছে ভারত। আর মুখে বলছে ভুটানের সার্বভৌমত্বের কথা। ভারতকে এর মাসুল দিতে হবে।’’

আরও পড়ুন: এই যৌথ বিবৃতি চাপে ফেলবে পাকিস্তানকে

সিকিম সীমান্তের ডোকা লা-য় চিনা সেনার রাস্তা বানানোর উদ্যোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি তুলেছে ভুটান। এর পরেই রাস্তা বানানোর বিষয়ে আপত্তি তোলে নয়াদিল্লিও। ভারতের মতে, ওই এলাকা চিনের নিজের নয়। সেখানে সামরিক উদ্দেশে রাস্তা বানানোর অধিকার নেই তাদের। এই প্রেক্ষাপটেই বেজিং আজ দাবি করেছে, ডোকলাম এলাকা নিয়ে থিম্পুর সঙ্গে তাদের কোনও রকম বিতর্ক নেই। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জেং শুয়াং মন্তব্য করেছেন, ‘‘প্রাচীন কাল থেকেই এই এলাকা চিনের। এ নিয়ে কখনও কোনও বিতর্ক ছিল না।’’ চিন ও ভুটান সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই ২৪ বার আলোচনাও সেরে ফেলেছে বলে দাবি করেছেন তিনি। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে ভুটানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা চালাতেই পারি।’’ ভারতের উদ্দেশে তাঁর অভিযোগ, ‘‘দিল্লি পঞ্চশীল নীতিকে অসম্মান করেছে। এখন নিজেদের ভুল শুধরে তাদের উচিত ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করা।’’

দু’দেশের এই টানাপড়েনের মধ্যে বেজিং সে দেশের নাগরিকদের ভারতে আসার বিষয়ে সতর্কতাও জারি করতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র।

বেশি রাতে চিন অবশ্য বলেছে, নাথুলা পাস দিয়ে যে তীর্থযাত্রীরা কৈলাস মানস সরোবরে যেতে চেয়েছিলেন, তাঁদের বিকল্প রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE