Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

‘চিনা ভাইরাস’ বললেন ট্রাম্প, করোনা নিয়ে দোষারোপ জারি

শুরুতে নোভেল করোনার প্রকোপকে তেমন আমল দেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু গত কয়েক দিনে মার্কিন মুলুকে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস।

করোনা মন্তব্যে সমালোচিত ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

করোনা মন্তব্যে সমালোচিত ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ১৬:২৬
Share: Save:

নোভেল করোনাভাইরাসের জেরে বিশ্ব জুড়ে মৃত্যুমিছিল অব্যাহত। এই পরিস্থিতির জন্য এ বার সরাসরি চিনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইরে থেকে এই ভাইরাস আমেরিকায় ঢুকেছে বলে এর আগেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। তবে এ বার প্রাণঘাতী এই ভাইরাসকে সরাসরি ‘চিনা ভাইরাস’ বলেই দাগিয়ে দিলেন তিনি। তাঁর এই মন্তব্যে চিন-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে সঙ্ঘাতের আবহ তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা কূটনীতিবিদদের।

শুরুতে নোভেল করোনার প্রকোপকে তেমন আমল দেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু গত কয়েক দিনে মার্কিন মুলুকে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। প্রাণ হারিয়েছেন ৮৭ জন। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে দেশ জুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করতে হয়েছে। নিজেও ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়েছেন ট্রাম্প। আর তার পরেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া নিয়ে যাবতীয় গড়িমসির অভিযোগ ঝেড়ে ফেলতে উদ্যত হয়েছেন তিনি।

নভেল করোনার প্রকোপ ঠেকাতে সম্প্রতি বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে মার্কিন সরকার। ইউরোপীয় নাগরিকদের আমেরিকা ভ্রমণ সাময়িক ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাতে একাধিক বিমান সংস্থা ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। আগামী দিনে অন্যান্য শিল্পক্ষেত্রও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন অর্থনীতিবিদরা। তা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়েই সোমবার চিনকে নিশানা করেন ট্রাম্প। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘চিনা ভাইরাসের প্রকোপে বিমানসংস্থা-সহ আর যে যে শিল্পগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আগামী দিনেও মার্কিন সরকার তাদের পাশে থাকবে।’’

আরও পড়ুন: দেশে আক্রান্ত বেড়ে ১২৬, ফ্রান্সে লকডাউন, করোনা আপডেট এক নজরে​

আরও পড়ুন: ঘটনার দিন দিল্লিতেই ছিলাম না, ফাঁসির তিন দিন আগে দাবি নির্ভয়ার ধর্ষক মুকেশের​

এই মন্তব্যের জন্য দেশের অন্দরেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিউইয়র্কেই এখনও পর্যন্ত নোভেল করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। সেখানকার মেয়র বিল ডি ব্লাসিও ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁদের সেবায় আপনি নিযুক্ত, সেই এশীয়-মার্কিন নাগরিকরা এমনিতেই নাজেহাল। এমন অবস্থায় বিভেদে এ ভাবে ইন্ধন না জোগালেই পারেন আপনি।’’

গত বছরের শেষ দিকে চিনের উহান প্রদেশ থেকেই কোভিড-১৯ ভাইরাস সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। তবে উহানেই যে এই ভাইরাসের উৎপত্তি, এখনও পর্যন্ত তা প্রমাণিত হয়নি। তাই এই ভাইরাসের উৎপত্তির জন্য কোনও ভাবেই চিনকে দায়ী করা যাবে না বলে ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। তার পরেও নিজে থেকে এমন মন্তব্য করলেন ট্রাম্প।

যদিও ট্রাম্প একা নন, মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োও আগাগোড়া করোনাভাইরাসকে ‘উহান ভাইরাস’ বলে উল্লেখ করে এসেছেন। তার পাল্টা আমেরিকাকে দোষারোপ করেছেন চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র জাও লিজিয়াও। মার্কিন সেনাবাহিনীর মাধ্যমেই করোনাভাইরাস উহানে পৌঁছয় বলে দাবি করেছেন তিনি। নোভেল করোনা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে এই বাগযুদ্ধেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন কূটনীতিকরা। তাঁদের আশঙ্কা, পারস্পরিক দোষারোপের ফলে দু’দেশের সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE