উহানে জীবাণুমুক্ত কারার জন্য তৈরি সাফাইকর্মীরা।—ছবি এএফপি।
নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিশ্বের একটা বড় অংশ যখন তালাবন্ধ, তখন খুলে দেওয়া হচ্ছে কোভিড-১৯ রোগের উৎপত্তিস্থল। চিন প্রশাসন আজ জানিয়েছে, হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরে যে বিধিনিষেধ ছিল তা শিথিল করা হচ্ছে। আগামী ৮ এপ্রিল উহানের লকডাউন তুলে নেওয়া হবে।
হুবেই প্রশাসনের তরফে আজ এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লকডাউন তুলে নেওয়ার পরে উহানের বাসিন্দারা দেশের অন্যত্র যাতায়াত করতে পারবেন। গত ১৯ মার্চের পর থেকে উহানে নতুন করে করোনা সংক্রমণ না-হওয়ায় লকডাউন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বেজিং। প্রশাসন জানিয়েছে, যাঁরা করোনভাইরাসে সংক্রমিত নন অথবা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার পরে সেরে উঠেছেন—— তাঁরাই শুধু বার হতে পারবেন। প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত শংসাপত্র থাকতে হবে। বছর চল্লিশের আইরিশ ইয়াও বলেন, ‘‘দু’মাসের লকডাউন তুলে নেওয়া হচ্ছে। এটা খুশির খবর। কিন্তু আমাদের প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হবে।’’ গত কালই স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছিল, সুস্থ ব্যক্তিরা কাজে যোগ দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ওই কর্মীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত শংসাপত্র দিতে হবে। উহানের বাসিন্দা নন, এমন সব ব্যক্তি যাঁরা লকডাউনের কারণে হুবেই প্রদেশের রাজধানীতে আটকে পড়েছিলেন, তাঁরাও নিজেদের গন্তব্যে ফেরার জন্য আবেদন করতে পারবেন বলে জানিয়েছে প্রশাসন। গত কাল থেকেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
উহানের স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত মিলতেই খুলতে শুরু করেছে শহরের হোটেলগুলি। একটি পাঁচতারা হোটেল আজ খুলেছে। তবে তা হয়েছে, শুধু জরুরি বিভাগের কর্মী এবং লকডাউনের সময় হোটেলে আটকে পড়া মানুষদের জন্য। ওই হোটেলের ম্যানেজার লি ওয়েন ওয়াই জানিয়েছেন, হোটেল খুললেও প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকবে। মেনে চলা হবে নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধিও। হোটেলের কর্মীরা মাস্ক, গ্লাভস পরে কাজ করবেন। নিুয়ম করে হোটেলর অতিথিদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে।
গত ডিসেম্বরে উহানে ছড়িয়ে ছিল নোভেল করোনাভাইরাস। যা অতিমারির আকার নিয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে গত ২৩ জানুয়ারি উহানে কার্যত নজিরবিহীন ভাবেই লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছিল চিন প্রশাসন। পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে গত ১০ মার্চ উহান সফর করেছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিংফিন। লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে বেজিংয়ের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন অনেকেই। করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে এখন উহান-পথেই হাঁটছে কার্যত অর্ধেক বিশ্ব।
সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy