ছবি সংগৃহীত।
অতলান্তিক মহাসাগরের তীরে লিসবন শহরটি ভীষণ সুন্দর। সমুদ্রের পাড়ে অনেকগুলো সুন্দর সৈকত আছে যা ইউরোপের অন্যতম আকর্ষণ। সারা পৃথিবীর মানুষই এর আকর্ষণে এখানে ছুটি কাটাতে আসেন। গমগমে সেই সৈকতগুলি খাঁ খাঁ করছে।
পর্তুগালও ব্যতিক্রম নয়। মাস দু’য়েক আগে কলকাতায় বড়দিনের ছুটি কাটিয়ে গত ৮ই জানুয়ারি লিসবন ফিরলাম। ২০১৬ সাল থেকে স্বামী-ছেলেকে নিয়ে এ শহরে থাকি। কলকাতা থেকে ফেরার কিছু দিনের মধ্যেই চেনা লিসবন ধীরে ধীরে পাল্টাতে শুরু করল। তত দিনে চিন-সহ বেশ কয়েকটি দেশে মারাত্মক ভাবে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। গোড়ার দিকে পর্তুগালে করোনার ছোঁয়া লাগেনি। খবরের শিরোনামে তখন ইটালি, স্পেন, ফ্রান্স, ব্রিটেন। আমার যে সব বন্ধু জার্মানি, সুইৎজ়ারল্যান্ড থাকে, তাদের থেকেও নিয়মিত খবর পাচ্ছিলাম। মাসখানেকের মধ্যে করোনার থাবা এসে পড়ল এ দেশের মাটিতেও। দিনটা ২ মার্চ।
১২ মার্চ থেকে আমাদের ইনস্টিটিউট বন্ধ হয়। ১৩ মার্চের পর থেকে লিসবনের স্কুল ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যায়। দ্রুত বিপদের আঁচ করে ২-৩ মাসের খাবার বাড়িতে মজুত করে রেখেছিলাম। ১৮ই মার্চ পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট দেশে ইমার্জেন্সি ঘোষণা করেন। সেই তখন থেকেই আমরা ঘরবন্দি। বাড়িতে গবেষণার কাজ করছি। ছেলেকে অনলাইনে ওর ক্লাস টিচার হোমওয়ার্ক দিচ্ছেন রোজ।
এ দেশে এখন ইমার্জেন্সি চললেও অত্যাবশ্যক পরিষেবাগুলি চালু আছে। সুপার মার্কেট কম সময়ের জন্য খোলা থাকছে। সময়ের অন্তর বেশি হলেও বাস, মেট্রোও চলছে। কিন্তু সবই ফাঁকা ফাঁকা। তবে ইমার্জেন্সি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রাস্তায় পুলিশ নেই। লোকজন নিজেরাই ভয়ে বেরোচ্ছেন না।
(লেখক লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy