Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus Treatment

টিকা নয়, ওষুধে সারবে করোনা, দাবি পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের

গবেষকরা দাবি করছেন, ওই ওষুধ তৈরিতে বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। প্রাণীদের উপর তার পরীক্ষা করে সাফল্য মিলেছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সংবাদ সংস্থা
বেজিং শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২০ ১৭:২৫
Share: Save:

মারণ করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির জন্য কোমর বেঁধে নেমেছে গোটা দুনিয়ার একাধিক সংস্থা। সেই দৌড়ে রয়েছে চিনও। তবে টিকা তৈরি নয়, ভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে আসরে নেমেছে চিনেরই পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের লক্ষ্য, দ্রুত করোনার ওষুধ তৈরি করে ফেলা। যাতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাবে। এক দিকে করোনাও যেমন আটকানো যাবে, তেমনই এক ধাক্কায় রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দাবি করছেন, ইতিমধ্যেই ওই ওষুধ তৈরিতে বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। প্রাণী দেহের উপর তার পরীক্ষা করে সাফল্যও মিলেছে।

গোটা দুনিয়া জুড়ে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে করোনাভাইরাস। এমন পরিস্থিতিতে ওই মারণ রোগের টিকা তৈরির প্রতিযোগিতায় নেমেছে একাধিক সংস্থা। কিন্তু ভিন্ন পথেই হাঁটছে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁরা চাইছেন, এমন একটা ওষুধ তৈরি করতে যা খুব কম সময়ে করোনা সংক্রমণ কমিয়ে দেবে। অন্য দিকে ওই ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য মানুষের মধ্যে সাময়িক ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও গড়ে তুলবে। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনতত্ত্ববিদ্যা বিভাগের অধিকর্তা সানি জি বলছেন, ‘‘করোনা সংক্রমিত ইঁদুরের শরীরে ওই ওষুধ ইনজেক্ট করে আমরা ফল পেয়েছি। তার দেহে ভাইরাসের প্রকোপ কমেছে। তার অর্থ, এই সম্ভাব্য ওষুধটা ফল দিচ্ছে।’’

করোনা আটকানোর জন্য ওই ওষুধ কী ভাবে তৈরি করা হচ্ছে? যে সব রোগী ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাঁদের মধ্যে ৬০ জনের রক্ত সংগ্রহ করেছেন পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই বিভাগের গবেষকরা। রক্তে থাকা অ্যান্ডিবডি সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। আর সেই নিষ্ক্রিয় করা অ্যান্টিবডিই কাজে লাগানো হচ্ছে পরীক্ষায়। সম্প্রতি একটি গবেষণাপত্রেও এ নিয়ে বলা হয়েছে, ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষের দেহ যে অ্যান্টিবডি তৈরি করে তা ব্যবহার করে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন: আমপান আছড়াবে সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে, তাণ্ডব চালাবে ৭ জেলায়​

সানি জি বলছেন, ‘‘ইমিউনোলজি বা ভাইরোলজি নয়, এককোষী প্রাণীদের জিনবিদ্যায় আমরা বিশেষজ্ঞ। আমরা যখন দেখলাম যে একটি মাত্র কোষ নিয়ে পরীক্ষায় ফল মিলছে, তখন রোমাঞ্চিত হলাম। এখন আমাদের দিন রাত কাজ চলছে।’’ জি-র দাবি, প্রাণী দেহে ওই ওষুধের ফল মিলেছে। তবে এখনও মানুষের উপর পরীক্ষা এখনও বাকি। তার প্রস্তুতি চলছে বলেই জানিয়েছেন তিনি। জি আশা করছেন, ‘‘নিষ্ক্রিয় করা এই অ্যান্টিবডি থেকেই এই অতিমারি রোখার মতো ওষুধ তৈরি করা যেতে পারে।’’

আরও পড়ুন: ৩০ কিমি গতিতে কলকাতাকে তছনছ করতে পারে আমপান, বাড়িতে থাকার পরামর্শ​

সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর অ্যান্টিবডি ব্যবহার করে চিকিৎসা নতুন নয়। এর আগে এইচআইভি, ইবোলা, মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (মার্স)-এর মতো রোগের ক্ষেত্রেও এমন ভাবে চিকিৎসা করার উদাহরণ রয়েছে। করোনার টিকা আবিষ্কার নিয়ে গবেষণা চলছে দুনিয়া জুড়ে। ব্রিটেন,রাশিয়া, আমেরিকা, ইটালি, জাপান-সহ একাধিক দেশের সঙ্গে সেই দৌড়ে রয়েছে চিনও। সেখানে অন্তত পাঁচটি সম্ভাব্য টিকা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ওয়ার্ল্ড হেল্থ ওর্গানাইজেশন) বলছে, টিকা তৈরি করতে অন্তত ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে। অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যখন নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে সেই সময়ে প্লাজমা থেরাপির কথাও উঠে এসেছে বার বার। চিনেই অন্তত ৭০০ রোগীর উপরে প্লাজমা থেরাপি চালানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE