পিটার হান্টকে। ছবি: এএফপি।
সাবেক ইউগোস্লাভিয়ার পতনের সময়ে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধে সার্বীয়দের সমর্থনের কথা বলতেন যে অতি দক্ষিণপন্থী সাহিত্যিক, সেই পিটার হান্টকে-কে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেওয়ায় অ্যালবেনিয়া, বসনিয়া ও কসোভো জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অ্যালবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইদি রামা টুইট করেছেন, ‘‘কোনও নোবেল পুরস্কারের কথা শুনে বমি পাবে, ভাবিনি!’’ আর বসনিয়ার মুসলিম নেতা সেফিক জ়াফেরোভিচের কথায়, ‘‘এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। অসংখ্য যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্তদের সমর্থনে বারবার মুখ খুলেছেন হান্টকে, এই তথ্য কী করে ভুলে গেল নোবেল কমিটি!’’ কসোভোর প্রেসিডেন্ট হাশিম থাচিও বলেন, ‘‘যুদ্ধে আক্রান্ত অসংখ্য মানুষকে সেই ভয়াবহ স্মৃতি মনে পড়িয়ে দিল হান্টকের এই শিরোপা।’’ অ্যালবেনিয়ার বিদেশমন্ত্রী জেন্ট সাকাজ মন্তব্য করেন, ‘‘যিনি চিরকাল বলে এসেছেন সাবেক ইউগোস্লাভিয়ায় কোনও গণহত্যাই হয়নি, তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া খুবই লজ্জাজনক।’’
১৯৯০-এর দশকে ইউগোস্লাভিয়া যখন গৃহযুদ্ধে চুরমার হয়ে যাচ্ছে, তখন সার্বিয়ার প্রখর সমর্থক ছিলেন অস্ট্রিয়ার এই লেখক। এমনকি, তিনি ইউগোস্লাভিয়ায় সার্বীয়দের অবস্থাকে নাৎসিদের হাতে ইহুদিদের অবস্থার সঙ্গে তুলনাও করেছিলেন। পরে অবশ্য সেই মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করে নিয়েছিলেন হান্টকে। সার্বীয় নেতা স্লোবোদান মিলোসেবিচের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন তিনি। মিলোসেবিচের দুই সেনাপ্রধান রাদোভান কারাদজ়িচ এবং রাটকো মিলাদিচের সমর্থনেও অসংখ্য বিবৃতি দিয়েছিলেন। এই তিন জনকেই ‘যুদ্ধাপরাধী’ তকমা দিয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। মিলোসেবিচ চেয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলায় সাক্ষ্য দিন হান্টকে। সেই মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই অবশ্য মারা যান সার্বীয় নেতা। তাঁর স্মরণসভায় মিলোসেবিচের হাজার হাজার অনুরাগীর সামনে হৃদয়বিদারক বক্তৃতাও দিয়েছিলেন পিটার।
তাঁর এই সার্ব-পন্থী অবস্থানের জন্য এর আগেও বহু বার সমালোচিত হয়েছেন হান্টকে। তাঁর ১৯৯৬ সালে লেখা ভ্রমণকাহিনি ‘আ জার্নি টু দ্য রিভার্স: জাস্টিস ফর সার্বিয়া’ নিয়েও প্রচুর বিতর্ক হয়েছিল। কাল পুরস্কার জেতার খবর পেয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন হান্টকে নিজেও। বলেন, ‘‘এটি খুবই সাহসী সিদ্ধান্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy