পড়াশোনার জন্য থাকি সুইৎজ়ারল্যান্ডে। কিন্তু মন পড়ে থাকে হাজার কিলোমিটার দূরের জন্মভূমিতে। আর এখন তো কথাই নেই। আমাদের ফুটবল টিম রাশিয়ার মাঠ দাপাচ্ছে। আর আমি দেশের বাইরে পড়ে থাকব? তা আবার হয় নাকি! ফলে চটপট টিকিট কেটে কয়েক দিনের জন্য দেশে ফেরা গেল।
আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই ফুটবল-পাগল। এ বার বিশ্বকাপে দল এগিয়ে চলেছে। আর আমাদেরও আনন্দের পারদ চড়েছে। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচ থেকেই দারুণ খেলছেন মদ্রিচরা। তারপর আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলে হারানো! উফ্! সে তো এক স্বপ্নের ফল। ক্রোয়েশীয় ফ্যানেরা তখন থেকেই সপ্তম স্বর্গে। আর এখন তো এমন উল্লাস-উদ্যাপন শুরু হয়ে গিয়েছে যে, মনে হবে আমরা এর মধ্যেই বিশ্বকাপ জিতে গিয়েছি। রাশিয়াকে হারানোর পরে ৭ তারিখ সারা রাত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছি। সমানতালে চলেছে গান-বাজনা, খানাপিনা। যাঁরা দেশের বাইরে থাকেন, তাঁরাও চুপ করে বাড়িতে বসে থাকেননি। আমার এক বন্ধু থাকে জার্মানিতে। তার কাছে শুনলাম, দেশওয়ালি বন্ধুদের জড়ো করে ড্রাম নিয়ে তারাও সে দিন বেরিয়ে পড়েছিল রাস্তায়।
আর হবে না-ই বা কেন? গত কুড়ি বছরে আমরা ফুটবলে সে রকম ভাল ফল করতে পারিনি। আর এ বার? প্রথমে ডেনমার্ক। আর তার পরে রাশিয়াকে হারিয়ে এক্কেবারে সেমিফাইনালে। কোয়ার্টার ফাইনালে রাশিয়াকে হারানোর পরে আমাদের প্রেসিডেন্টকে দেখেছিলেন তো? ফিফা বক্সেই কেমন নাচতে শুরু করে দিয়েছিলেন। দেশের প্রেসিডেন্টের এই উল্লাস বলে দিচ্ছে, আমরা কী ভাবে ফুটবল-জোয়ারে ভাসছি।
দুরন্ত ক্যাপ্টেন্সি করছেন লুকা মদ্রিচ। দলে রয়েছেন ভেদ্রান করলুকা এবং মারিয়ো মান্দজ়ুকিচের মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রাও। তবে আমরা ক্রোয়েশীয় মেয়েরা মজে রয়েছি ২৪ বছর বয়সি আন্তে রেবিচকে নিয়ে। কী যে মিষ্টি দেখতে! তিনিই আমাদের সকলের ‘দ্রাগা’। ক্রোয়েশিয়ান ভাষায় যার মানে, প্রিয়তম।
বুধবার ইংল্যান্ডের সঙ্গে খেলা। জানি, ওরা বেশ শক্তিশালী দল। তবে আমরাও আশাবাদী। স্বপ্ন দেখছি, এ বছর কাপ আসবে অ্যাড্রিয়াটিক সাগর পাড়ে, আমাদের দেশে। আসবেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy