Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কিমের পাশে দাঁড়িয়ে চাপে, ট্রাম্প তবু মুগ্ধই

উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের প্রতি তবু যেন মুগ্ধতা কাটছে না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আর এ বার পরোক্ষে সেই কিমের পাশে দাঁড়াতে গিয়েই স্বদেশে ক্ষোভের শিকার হলেন ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯ ০৩:৫১
Share: Save:

কাজের কাজ কিছুই হয়নি ভিয়েতনামে। উত্তর কোরিয়ার শর্ত মানতে চায়নি আমেরিকা। মাঝপথেই ভেস্তে গিয়েছে হ্যানয়ের বৈঠক। উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের প্রতি তবু যেন মুগ্ধতা কাটছে না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আর এ বার পরোক্ষে সেই কিমের পাশে দাঁড়াতে গিয়েই স্বদেশে ক্ষোভের শিকার হলেন ট্রাম্প।

ফের শিরোনামে মার্কিন ছাত্র ওটো ওয়ার্মবিয়ারের রহস্য-মৃত্যু। ছাত্রটির পরিবার তো বটেই, বিশ্বের একটা বড় অংশের দাবি— বছর বাইশের এই যুবককে দেড় বছর জেলে রেখে তিলে তিলে মেরেছে উত্তর কোরিয়াই। হ্যানয়ের বৈঠকেও সেই প্রসঙ্গ ওঠে। সূত্রের খবর, কিম ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে বলেছিলেন, তিনি এ সবের কিছুই জানতেন না। ধারাবাহিক ভাবে কিমের প্রশংসা করতে গিয়ে ট্রাম্প তাঁর এই দাবিও মেনে নিয়েছেন। কাল তার জেরেই প্রতিবাদে সরব হলেন ওটোর বাবা-মা। বললেন, ‘‘শান্তি বৈঠককে আমরা সম্মানের চোখেই দেখি। এত দিন তাই কিছুই বলিনি। কিন্তু আর চুপ থাকা যায় না। কিম ও তাঁর প্রশাসনই আমার ছেলেকে মেরেছে। হাজার প্রশংসা করেও সেই সত্যিটা পাল্টানো যাবে না।’’

এই প্রসঙ্গে ট্রাম্প যদিও দাবি করেছেন, তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনি টুইট করেন, ‘‘ওটোকো যে ভাবে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে, সে জন্য উত্তর কোরিয়াই দায়ী। তবে

এ-ও বলি, আমি ওটোকে ভালবাসি, প্রায়ই তাঁর কথা ভাবি। আগের প্রশাসন তো হাত গুটিয়ে বসিয়েছিল, আমিই ওঁকে নরকযন্ত্রণা থেকে বার করে আনি।’’

২০১৬-র জানুয়ারিতে বন্ধুদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে উত্তর কোরিয়ায় গিয়েছিলেন ওটো। সেখানকার এক হোটেল থেকে সরকারি প্রচারমূলক পোস্টার চুরির দায়ে সে বছরই তাঁকে সশ্রম কারাদণ্ড দেয় পিয়ংইয়্যাং। দেড় বছর পরে ওটোকে ‘মানবিক’ কারণে ছেড়ে দেয় কিমের দেশ। কিন্তু জানা যায়, জেলে যাওয়ার পর-পরই কোমায় চলে যান ওই মার্কিন ছাত্র। এবং দেশে ফিরেই মারা যান।

ট্রাম্প বলছেন, ওটোর মৃত্যু বিফলে যাবে না। আবার হ্যানয়ের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরেও তিনি ভরপুর আস্থা রাখছেন কিমে। এখনও বলছেন, ‘‘দেখা যাক কী হয়! আমাদের দু’জনের সম্পর্ক খুব ভাল। পরস্পরকে ভালবাসি। আশা করি, সুফল মিলবে।’’ কাল এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে প্রেসিডেন্ট এ কথা বলার পরেই পুরনো ঘটনার কথা মনে করাচ্ছেন অনেকে। গত বছর জুলাইয়ে হেলসিঙ্কির শীর্ষ সম্মলনে যাওয়ার আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্পর্কে এমন ভাল-ভাল কথাই বলেছিলেন ট্রাম্প। বলছিলেন, ‘‘পুতিন অন্তত আমার শত্রু নয়। যে ক’বার ওঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে, ভালই অভিজ্ঞতা হয়েছে।’’

গত বছর সিঙ্গাপুরের বৈঠকের আগে আবার ধারাবাহিক পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে কিমকে কথায়-কথায় ধরাশায়ী করতেন ট্রাম্প। তাই আগামী দিনে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি এবং ট্রাম্প-কিম সম্পর্কের কী হয়, সে দিকে তাকিয়ে গোটা দুনিয়া।

তবে হ্যানয়ে যা-ই হয়ে থাক, ট্রাম্প পিয়ংইয়্যাংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করার চেষ্টা করছেন বলেই ওয়াশিংটন সূত্রে খবর। সেই কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ বার্ষিক সেনা মহড়াও প্রেসিডেন্ট বন্ধ করতে চাইছেন বলে জানিয়েছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা। গত বছরেও কোরীয় উপদ্বীপে মহড়া চালায় ২ লক্ষ দক্ষিণ কোরীয় সেনা ও ৩০ হাজার মার্কিন সেনা। পিয়ংইয়্যাং যে এই মহড়াকে ভাল চোখে দেখে না, সেটাও বারবার স্পষ্ট করেছে তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Donald Trump Kim JOng Un USA North Korea Hanoi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE