Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

মাইকেল ঝড়ে লন্ডভন্ড ফ্লরিডা

অন্ধকারে ডুবে বিস্তীর্ণ এলাকা, বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। শয়ে শয়ে গাছ উপড়ে পড়ে রয়েছে রাস্তায়। সেই সঙ্গে এক হাত অন্তর ইট-কাঠ-পাথরের স্তূপ। ভাঙা ঘরের দিকে তাকিয়ে হাহাকার করছেন বাসিন্দারা।

তাণ্ডব: মাইকেলের দাপটে জলমগ্ন উপকূলে উঠে এসেছে নৌকা। ফ্লরিডার পোর্ট সেন্ট জো মারিনায়। ছবি: পিটিআই।

তাণ্ডব: মাইকেলের দাপটে জলমগ্ন উপকূলে উঠে এসেছে নৌকা। ফ্লরিডার পোর্ট সেন্ট জো মারিনায়। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ০২:১০
Share: Save:

অন্ধকারে ডুবে বিস্তীর্ণ এলাকা, বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। শয়ে শয়ে গাছ উপড়ে পড়ে রয়েছে রাস্তায়। সেই সঙ্গে এক হাত অন্তর ইট-কাঠ-পাথরের স্তূপ। ভাঙা ঘরের দিকে তাকিয়ে হাহাকার করছেন বাসিন্দারা।

বুধবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ ‘ফ্লরিডা প্যানহ্যান্ডেল’-এ আছড়ে পড়ে ক্যাটেগরি-৪ হারিকেন। ফ্লরিডার উত্তরপশ্চিমের ২০০ মাইল বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড স্থানীয়দের কাছে ‘ফ্লরিডা প্যানহ্যান্ডেল’ নামেই পরিচিত। হারিকেন-পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির ছবিটা সেখানে এমনই। এখনও পর্যন্ত দু’জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে সেখানে।

ফ্লরিডা ও জর্জিয়া দাপিয়ে মাইকেল এখন ক্যারোলাইনার দিকে এগোচ্ছে। শক্তি খুইয়ে ক্রান্তীয় ঝড়ে পরিণত হলেও দুর্যোগ কাটেনি। বাঁধভাঙা বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ায় কাঁপছে দুই প্রদেশ।

এ দিন গাল্ফ কোস্ট পরিদর্শনে যাওয়ার আগে গভর্নর রিক স্কট ফ্লরিডাবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘এমন একটা ঝড়কে যে আমরা হারিয়ে দিয়েছি, ভাবাই যায় না। সবাই সাবধানে থাকুন। ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাড়িতেই থাকুন, বেরোবেন না। সেই পরিস্থিতিও না থাকলে পড়শিদের সাহায্য নিন। একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।’’

‘‘ফ্লরিডার পরিস্থিতি সত্যিই ভয়ানক,’’ বললেন ট্যাম্পা-বাসী অনুপম বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, ‘‘সব চেয়ে খারাপ হল, কোথাও বিদ্যুৎ নেই। ফলে ইন্টারনেট সংযোগ নেই। ওখান থেকে কোনও খবর পাওয়া যাচ্ছে না। ড্রোন আর হেলিকপ্টার পাঠিয়ে খোঁজ চালাচ্ছে প্রশাসন।’’

একই কথা বললেন মেগান ম্যাকল। তাঁর ভাই জেফ ফ্লরিডার কম্পাস লেকের বাসিন্দা। মাইকেলের হানার পর থেকে ভাইয়ের কোনও খোঁজ পাচ্ছেন না মেগান। বুধবার এক বন্ধুকে জেফ জানিয়েছিলেন, তাঁর বাড়ির দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। রাস্তায় জল ক্রমশ বাড়ছে। সেই শেষ পাওয়া খবর। মেগান বলেন,

‘‘শুধু এটুকু যদি জানতে পারি যে ও নিরাপদে আছে, তা হলেই শান্তি। ঘরবাড়ি, গাড়ি চলে গেলে আবার পাওয়া যাবে। ওঁরা যেন অক্ষত থাকে।’’ গ্যারাজের ছাউনি ভেঙে জর্জিয়ার সেমিনোল কাউন্টিতে ১১ বছরের এক বালিকার মৃত্যু হয়েছে। দ্বিতীয় মৃত্যুটি হয়েছে ফ্লরিডার গ্রিনবরোতে। সেখানে গাছ পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির।

প্রতিবেশীদের জন্য বাড়ির দরজা খুলে দিয়েছেন পানামা সিটির স্প্রিংফিল্ড ক্যালাওয়ের বাসিন্দা রব গোল্ডিং। তাঁর পড়শিদের অনেকেই চোখের সামনে দেখেছেন বাড়ির ছাদ উড়ে যেতে। পথেঘাটে সর্বত্র ধ্বংসের চিহ্ন। টানা তিন ঘণ্টা মাইকেলের দাপটে রাস্তায় পড়ে গাছ, স্যাটেলাইট ডিশ থেকে ট্র্যাফিক লাইটপোস্ট। কোথাও কোথাও রাস্তার উপরে সমুদ্রস্রোত। বাড়ির মাথা ছুঁইছুঁই জল।

এ দিন হোয়াইট হাউসের ‘ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি’ প্রধান ব্রোক লং প্রেস বিবৃতিতে জানান, ১৮৫১ সালের পর থেকে এত ভয়াবহ হারিকেন দেখেনি ফ্লরিডা প্যানহ্যান্ডেল। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘খুব শীঘ্র আমি ফ্লরিডায় যাব। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, সবাই যেন নিরাপদে থাকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hurricane Michael Florida
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE