Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পর্ন-তারকাকে ঘুষ! ট্রাম্পের বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যেও বিতর্ক

ভোটের আগে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ডলারের ‘ইনাম’ পর্নস্টারকে। খুশি হয়ে নয়. মুখ বন্ধ রাখতে। স্টেফানি ক্লিফোর্ডের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্কের কথা ধামাচাপা দিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মুখে ট্রাম্প তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে ওই ঘুষ দিয়েছিলেন বলে আজ দাবি করেছে একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম।

ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১০
Share: Save:

অস্বস্তি ঘরে। ধিক্কার বাইরে থেকেও। জোড়া বিপত্তিতে কার্যত জেরবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ভোটের আগে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ডলারের ‘ইনাম’ পর্নস্টারকে। খুশি হয়ে নয়. মুখ বন্ধ রাখতে। স্টেফানি ক্লিফোর্ডের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্কের কথা ধামাচাপা দিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মুখে ট্রাম্প তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে ওই ঘুষ দিয়েছিলেন বলে আজ দাবি করেছে একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম।

আফ্রিকার দেশগুলি সম্পর্কে ট্রাম্পের কটু মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে আগেই। তার মধ্যে আজ স্টেফানিকে ঘুষ দেওয়ার খবর ফাঁস হতেই শোরগোল পড়ে যায়। ওঠে নানা রকম প্রশ্ন। যেমন, স্টেফানির সঙ্গে কত দিনের সম্পর্ক ট্রাম্পের? নিয়মিত যোগযোগ রাখতেন কি? প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ২০০৬-এ ক্যালিফোর্নিয়ায় দু’জনের সাক্ষাত হয়েছিল। এ-ও বলা হয়েছে, ট্রাম্পের তরফে লস অ্যাঞ্জেলেসের সিটি ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক মারফত অর্থ পৌঁছেছিল স্টেফানির কাছে। যাতে ওই সম্পর্কের কথা ফাঁস না হয়, বিরোধীরা বাড়তি হাতিয়ার না পায় ভোটের মুখে। স্টেফানির দাবি, এটি অপপ্রচার মাত্র। একই দাবি ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেনেরও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ট্রাম্পকে অপদস্থ করতে এমন গুজব তো ২০১১ থেকেই রটানো হচ্ছে।’’ খবরটির সত্যতা জানতে চেয়েছে হোয়াইট হাউস।

এ তো গেল ঘরের কথা। ট্রাম্প শিবিরে অস্বস্তি বাড়িয়েছে আফ্রিকার দেশগুলি সম্পর্কে ট্রাম্পের (ছাপার অযোগ্য) অশ্লীল মন্তব্য ঘিরেও। ঘটনা গত বৃহস্পতিবারের। ওভাল অফিসে অভিবাসন-কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প আফ্রিকার দেশগুলি প্রসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘এই নোংরা দেশগুলি থেকে এত লোক আসে কেন আমাদের দেশে। হাইতি থেকে এত লোক আসার কী দরকার? সব ক’টাকে বার করে দিন।’’ এই সূত্রেই তিনি একটি কদর্য শব্দ ব্যবহার করেন।

এ নিয়ে প্রায় সব দেশ ও সোশ্যাল মিডিয়া মুখর হতেই, ভোল বদলান প্রেসিডেন্ট। গত কাল টুইটে ওই শব্দ ব্যবহারের কথা অস্বীকার করে জানান, কঠিন শব্দ প্রয়োগ করলেও অশালীন কিছুই বলেননি। কিন্তু বরফ গলেনি এতে। ট্রাম্পকে ‘বর্ণবিদ্বেষী’ তকমা দিয়ে ফুঁসছে আফ্রিকান ইউনিয়ন। এই অপমানের হিল্লে হোক, ক্ষমা চাইতে হবে ট্রাম্পকে— দাবি জানাচ্ছে আফ্রিকান ইউনিয়নভুক্ত ৫৫টি দেশ। আইনি পথে হাঁটতে চাইছে সেনেগাল। বৎসোয়ানা এরই মধ্যে সমন পাঠিয়েছে সে দেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে। ক্ষুব্ধ রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার দফতরের মুখপাত্র রুপার্ট কলভিল বলেছেন, ‘‘আপনার যতই রাগ থাক, একটা মহাদেশের সব দেশের মানুষকে নোংরা বলতে পারেন না। কৃষ্ণাঙ্গ মানেই প্রবেশ নিষিদ্ধ— এটা তো বর্ণবিদ্বেষই।’’

জানা গিয়েছে, সে দিনের বৈঠকেই ট্রাম্প মেধাভিত্তিক অভিবাসনের উপর জোর দিয়ে বলেন, ‘‘আমেরিকাকে সমৃদ্ধ করে তোলার ক্ষেত্রে এশীয় অভিবাসীদের ভূমিকা অনেক বেশি। এদের আগে ঢুকতে দিতে হবে। প্রাধান্য দিতে হবে নরওয়ের মতো দেশকেও।’’ আফ্রিকা কী দোষ করল— প্রশ্ন উঠেছে মার্কিন মুলুকেই। ডেমোক্র্যাট নেতা সেড্রিক রিচমন্ডের কথায়, ‘‘প্রমাণ হল, আমেরিকাকে মহান নয়, ফের শ্বেতাঙ্গই বানাতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE