Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
নাবালকদের জন্য ‘খাঁচা’

শরণার্থী শিশুর সঙ্কট নিয়ে সরব ট্রাম্পের স্ত্রী

দক্ষিণ টেক্সাসের ওই গুদামঘরটিতে পর পর ধাতব বেড়া দিয়ে তৈরি হয়েছে খাঁচা। আর খাঁচার মধ্যে বাচ্চাগুলো!

বিচ্ছিন্ন: মার্কিন সীমান্ত নজরদারি বাহিনীর ধাতব খাঁচায় শরণার্থী শিশুরা। টেক্সাসের রিও গ্র্যান্ড সিটিতে। ছবি: রয়টার্স

বিচ্ছিন্ন: মার্কিন সীমান্ত নজরদারি বাহিনীর ধাতব খাঁচায় শরণার্থী শিশুরা। টেক্সাসের রিও গ্র্যান্ড সিটিতে। ছবি: রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৮ ০৩:২৫
Share: Save:

গুদামঘরে ঠাসা কয়েকশো শরণার্থী শিশু। বাবা-মায়েদের অপেক্ষায়। দক্ষিণ টেক্সাসের ওই গুদামঘরটিতে পর পর ধাতব বেড়া দিয়ে তৈরি হয়েছে খাঁচা। আর খাঁচার মধ্যে বাচ্চাগুলো! রবিবার এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই ফের ট্রাম্প প্রশাসনের দিকে আঙুল উঠেছে। যদিও ট্রাম্পের দাবি, তাঁর আগের জমানায় ডেমোক্র্যাটদের ভুল নীতির জন্যই শরণার্থী শিশুদের নিয়ে এ ধরনের ‘সমস্যা’ দেখা দিচ্ছে।

আর কিছুটা ব্যতিক্রমী পথে হেঁটে এই বিতর্কে সরব হয়েছেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পও। সাধারণত রাজনৈতিক কোনও বিষয়ে যাঁকে মুখ খুলতে দেখা যায় না। তাই মেলানিয়ার প্রতিক্রিয়ায় অবাক অনেকেই। বহু দিন ধরে ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া অভিবাসন আইনের মাসুল গুনতে হচ্ছে শরণার্থী শিশুদের। মেক্সিকো সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে আপত্তি উঠেছে প্রবল। গত রবিবার ছিল ফাদার্স ডে। সন্তানদের কাছ থেকে জোর করে বাবা-মাকে দূরে সরিয়ে রাখায় আর এক প্রস্ত সমালোচনার মুখে ট্রাম্প।

এই পরিস্থিতিতে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া তাঁর মুখপাত্রের মাধ্যমে জানিয়েছেন, পরিবারের থেকে শিশুদের এ ভাবে আলাদা হয়ে যাওয়া কিছুতেই মানতে পারছেন না তিনি। সরাসরি ট্রাম্পের নীতির নিন্দা না করে মেলানিয়ার প্রস্তাব, সফল অভিবাসন সংস্কারের জন্য শেষ পর্যন্ত দু’পক্ষই (রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট) একসঙ্গে বসুক। ফার্স্ট লেডির মুখপাত্র স্টিফানি গ্রিশাম এক মার্কিন চ্যানেলে বলেছেন, ‘‘ফার্স্ট লেডি মনে করেন, আমরা অবশ্যই আইন মেনে চলব। তবে আমাদের মানবিকতার সঙ্গেই প্রশাসন চালাতে হবে।’’

আরও পড়ুন: সীমান্ত সমস্যায় নয়া প্রস্তাব চিনের

মেলানিয়ার মতোই মুখ খুলেছেন প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি লরা বুশ। রিপাবলিকান প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের স্ত্রী এবং টেক্সাসের বাসিন্দা লরা একটি মার্কিন দৈনিকে বলেছেন, ‘‘আন্তর্জাতিক সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা অবশ্যই জরুরি। কিন্তু ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নিষ্ঠুর, অনৈতিক। আমার অসম্ভব কষ্ট হচ্ছে।’’

টেক্সাসের গুদামঘরের যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সচিব। তাঁর দাবি, সংবাদমাধ্যম এবং রাজনীতিকরা ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন। যদিও সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দিয়েছিল মার্কিন সীমান্ত নজরদারি বাহিনীই। সচিব বলেছেন, ‘‘সীমান্তে পরিবারকে আলাদা করে দেওয়ার কোনও নীতি আমাদের নেই। নাবালকদের সাময়িক ভাবে হেফাজতে রাখা হয় নিগ্রহ, পাচার, বা অপরাধীদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য। অতীত প্রশাসন থেকেই এমনটা হয়ে আসছে। বাবা-মায়ের কাছ থেকে বাচ্চাকে তখনই আলাদা করা হয় যখন দেখা যায় শিশুটির কোনও বিপদ হতে পারে বা তার বাবা-মা কোনও অপরাধ করেছেন।’’

ট্রাম্পের কড়া অভিবাসন নীতি নিয়ে আপত্তি উঠলেও তিনি এখনও সঙ্কটের দায় চাপাচ্ছেন ডেমোক্র্যাটদের উপরেই। তিনি বলছেন, তিনিও চান, বিচ্ছিন্ন করার এই প্রক্রিয়া শেষ হোক। এই সূত্রে সোমবার একের পর এক টুইট করতে থাকেন প্রেসিডেন্ট। বলেন, ‘‘ডেমোক্র্যাটদের উচিত রিপাবলিকানদের সঙ্গে বসে সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে কিছু একটা সমাধান বার করা। ভোট হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে কোনও লাভ নেই। কারণ আপনারা হারতে চলেছেন।’’

নিজের অভিবাসন নীতির পক্ষে যুক্তি দিতে, কোনও রকম পরিসংখ্যান না দিয়েই ট্রাম্প দাবি করেন, ‘‘জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ভ্রান্ত অভিবাসন নীতির জন্যই তাঁদের দেশে অপরাধ বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। ইউরোপে অভিবাসীদের নিয়ে যে কাণ্ড হচ্ছে, তা আমি কখনওই আমাদের দেশে হতে দেব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE