Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
সিরিয়া-সিদ্ধান্তে অনড়

হঠাৎ হাজির! ট্রাম্পের বিমান নামল ইরাকে

কোথাও কোনও খবর ছিল না। কেউ টেরও পাননি। আচমকাই ইরাকের আল-আসাদ মার্কিন সেনাঘাঁটিতে নামল গাঢ় কালো রঙের ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’। বিমান থেকে নামলেন সস্ত্রীক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নিজস্বী: ইরাকের আল-আসাদ বিমান ঘাঁটিতে মার্কিন সেনার সঙ্গে ডোনাল্ড ও মেলানিয়া ট্রাম্প। এএফপি

নিজস্বী: ইরাকের আল-আসাদ বিমান ঘাঁটিতে মার্কিন সেনার সঙ্গে ডোনাল্ড ও মেলানিয়া ট্রাম্প। এএফপি

সংবাদ সংস্থা
আল-আসাদ (ইরাক) শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:১৩
Share: Save:

কোথাও কোনও খবর ছিল না। কেউ টেরও পাননি। আচমকাই ইরাকের আল-আসাদ মার্কিন সেনাঘাঁটিতে নামল গাঢ় কালো রঙের ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’। বিমান থেকে নামলেন সস্ত্রীক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে কখনও ইরাকের মার্কিন সেনাঘাঁটিতে যাননি ট্রাম্প। সেই নিয়ে প্রভূত সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ থেকে বারাক ওবামা, আগের প্রেসিডেন্টরা মাঝেমধ্যেই বিদেশের মাটিতে কর্মরত মার্কিন বাহিনীকে চাঙ্গা করতে হাজির হয়ে যেতেন সেই দেশে। এক মাত্র ট্রাম্পই গত দু’বছরে এক বারের জন্যেও ইরাকে পা ফেলেননি। সম্প্রতি সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ সরিয়ে নেওয়া কিংবা আফগানিস্তানের মাটি থেকে সেনা কমানোর কথা ঘোষণার পরে যে বিতর্ক শুরু হয়েছিল, তাতে গুঞ্জন ওঠে, ট্রাম্প হয়তো এ বার আগের প্রেসিডেন্টদের পথে হাঁটবেন। হলও তাই। সে সঙ্গে ইরাক সফরেই বুঝিয়ে দিলেন, তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। জানালেন, সিরিয়া থেকে সেনা সরানো হবেই। পশ্চিম এশিয়ার ‘পুলিশ’ নয় আমেরিকা।

ট্রাম্পের ইরাক সফর ছিল চমকে ঠাসা। স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধে সওয়া সাতটা নাগাদ আল-আসাদ সেনাঘাঁটিতে নামেন ট্রাম্প। ছিলেন মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তার মধ্যেই জানান, খুব ‘ক্লান্তিকর’ সফর। বলেন, ‘‘অনেক ধরনের উড়ানের অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু এই সফর...। গোটা বিমান ঘুটঘুটে অন্ধকার। সব জানলা বন্ধ।’’ সেনাকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি স্পেশ্যাল ফোর্সের ১০০ জনের একটি দলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ইরাকের প্রেসিডেন্ট আদেল আব্দেল মেহদি-র সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল। কিন্তু তা-ও বাতিল করে দেন ট্রাম্প। শুধু ফোনে কথা বলেই দায়িত্ব সারেন।

এর পরেই স্বমেজাজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের কাছে জানান, এই মুহূর্তে আমেরিকার নীতি হল বিভিন্ন দেশের সেনা-জোট থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়া। মার্কিন নাগরিকদের কাছে এ হল ‘পশ্চিম এশিয়ার অন্তহীন যুদ্ধ’। বলেন, ‘‘আমাদের ঘাড়ে সব বোঝা ফেলে দেওয়া হবে, এটা ঠিক নয়।

আর কোনও দেশকে আমাদের সেনাবাহিনী ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে রয়েছে মার্কিন সেনা। সে এমন দেশ, লোকে নাম শোনেনি। সত্যি কথা বলতে কী, এটা খুব বোকা-বোকা ব্যাপার।’’

এর পরেই সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল সিরিয়া নিয়ে। সিরিয়া থেকে সেনা সরানোর কথা বলেই আসছেন ট্রাম্প। সম্প্রতি টুইটারে এ-ও দাবি করেন, সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ কাবু করেছে আমেরিকা। তাই সে দেশ থেকে মার্কিন বাহিনী সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত এবং জোরকদমে শুরু করতে চান তিনি। কিন্তু ট্রাম্প সেনা সরানোর কথা জানালেও, শোনা যাচ্ছিল হয়তো এখনই তা কার্যকর হবে না। যদিও ট্রাম্প আজ স্পষ্ট বলেন, ‘‘আর সময় দেওয়া যাবে না। যথেষ্ট হয়েছে।’’

মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর তোলা নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে ট্রাম্পের মতানৈক্যে মার্কিন সরকার আপাতত ‘শাট ডাউন’। কূটনীতিকদের একাংশের মতে, সে দিক থেকে নজর ঘোরাতে ইরাকের এই ঝটিকা-সফরে ভালই চাল দিলেন ট্রাম্প।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Donald Trump Melania Trump US Military Camp Iraq
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE