১৭ ঘণ্টার যুদ্ধ শেষে রফা। বেরোচ্ছেন সিপ্রাস। ছবি: এএপি।
কঠিন লড়াই শেষ। এ বার গ্রিসকে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর পালা।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস ইউরোপীয় ঋণদাতাদের সঙ্গে ১৭ ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠক সেরে রফার পরে এই মন্তব্যই করেছেন। এর জেরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউরোপীয় শীর্ষ ব্যাঙ্ক এবং আইএমএফের থেকে ত্রাণ খাতে ৮৬০০ কোটি ইউরো (৯৬০০ কোটি ডলার) পাওয়ার জন্য কথা শুরু করতে পারবে গ্রিস। অর্থনীতির চাকা সচল রেখে ইউরো মুদ্রা ব্যবহার করে টিকে থাকতে পারবে ইইউ-তেই। বৃহস্পতিবার খুলবে গ্রিসের ব্যাঙ্কগুলি, গত দু’সপ্তাহ ধরে নগদের অভাবে যাদের দরজা বন্ধ। ত্রাণের অর্থ থেকেই ২০ জুলাইয়ের মধ্যে ৭০০ কোটি ইউরোর ধার মেটাতে হবে ইউরোপীয় শীর্ষ ব্যাঙ্ককে। অগস্টের মাঝামাঝি দিতে হবে আরও ৫০০ কোটি।
ত্রাণ পেতে গ্রিসকে মানতে হবে ইউরোপের, মূলত জার্মানির বেঁধে দেওয়া একগুচ্ছ কড়া শর্ত। আর, সেই সংক্রান্ত আইন পার্লামেন্টে পাশ করাতে হবে বুধবারের মধ্যে। জার্মান চান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেলের এককাট্টা মনোভাবেই আপসের পথে হেঁটে সিপ্রাস মেনে নিয়েছেন গ্রিসের ৫ হাজার কোটি ইউরোর সম্পদ ঋণ শোধের জন্য আলাদা করে সরিয়ে রাখার শর্ত। একটি ট্রাস্টের হাতে থাকবে ওই অর্থ। সরকারের অধিকার থাকবে না তাতে। তবে মার্কেল জানান, গ্রিসের ‘স্বার্থে’ ওই তহবিল থেকে আয়ের ১২৫০ কোটি ইউরো লগ্নি করা হবে গ্রিসেই।
এখানেই কূটনীতিকরা কাঠগড়ায় তুলেছেন বামপন্থী সিপ্রাস সরকারের দিকে। সিপ্রাসকে কার্যত আর্থিক স্বাধীনতাকে বলি দিতে হয়েছে বলেই মনে করছেন তাঁরা। কারণ, কড়া শর্ত মানবেন না বলেই গণভোট নেন সিপ্রাস। বলেছিলেন তা মানুষকে আরও বেকারত্বের দিকে ঠেলে দেবে। তাঁর আর্জি মেনেই ‘না’ ভোট দেন গ্রিক জনগণ। তার পরেও ‘মধ্যযুগীয় কায়দায়’ খরচ কমানো, পেনশন ছাঁটাই, কর বসানোর শর্ত আরও বেশি করে চেপেছে বলে মন্তব্য রাজনৈতিক বিরোধীদের। তাঁর সিরিজা পার্টির শ্রমমন্ত্রী পানোস স্কোরলেটিসও বলেন, ‘‘এ সব শর্ত এ বছরেই গ্রিসকে ভোটের দিকে ঠেলে দেবে।’’ আথেন্স জুড়ে সোমবার বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। গ্রিসের আমলাদের ইউনিয়ন প্রতিবাদে বুধবার বন্ধ-ও ডেকেছে।
গ্রিসের যাত্রাপথ যে মসৃণ হবে না, সে ইঙ্গিত দিয়ে আর্থিক সংস্কার দফতরের মন্ত্রী জর্জ কাত্রুগালোস বলেন, ‘‘কোনও রাস্তা খোলা ছিল না। একমাত্র বিকল্প হত থমকে থাকা অর্থনীতিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy