Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Facebook

ফেসবুক থেকে জাকারবার্গের পদত্যাগ চাইছেন বিনিয়োগকারীরা!

ফের বিপাকে ফেসবুক কর্ণধার মার্ক জাকারবার্গ। সংস্থার চেয়ারম্যান পদ থেকে তাঁর অপসারণ চাইছেন বিনিয়োগকারীরা।

মার্ক জাকারবার্গের পদত্যাগের দাবি উঠছে। ছবি: এএফপি।

মার্ক জাকারবার্গের পদত্যাগের দাবি উঠছে। ছবি: এএফপি।

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৮ ১৬:১৪
Share: Save:

নির্বাচনী বিতর্কের রেশ কাটেনি এখনও। টানাপড়েন চলছে ভুয়ো খবর ছড়ানো নিয়েও। তারমধ্যেই ফের বিপাকে ফেসবুক কর্ণধার মার্ক জাকারবার্গ। সংস্থার চেয়ারম্যান পদ থেকে তাঁর অপসারণ চাইছেন বিনিয়োগকারীরা। দাবি তুলছেন পদত্যাগেরও। কোনও ভাবে ফাঁকফোকর গলে যাতে বেরিয়ে যেতে না পারেন, সে জন্য রীতিমতো চাপও তৈরি করছেন তাঁরা।

ব্যবসা দাঁড় করাতে অনেক সময় জনসংযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থার সাহায্য নেন ব্যবসায়ীরা। যাতে তাঁদের ব্যবসার প্রচার হয়। বিক্রিবাটা বাড়ে। সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা বাড়াতে এবং যাবতীয় বিতর্ক ঝেড়ে ফেলে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি গড়তে সম্প্রতি রিপাবলিকান পার্টির ঘনিষ্ঠ ‘ডিফাইনার্স পাবলিক অ্যাফেয়ার্স’ সংস্থাকে নিয়োগ করেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এমনটাই লেখা হয়েছে মার্কিন সংবাদপত্র ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর একটি প্রতিবেদনে। সেখানে দাবি করা হয়, প্রতিদ্বন্দ্বীদের উপর নজর রাখা এবং তাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোই ছিল ওই সংস্থার কাজ। ফেসবুকের ভাবমূর্তি উদ্ধারেও নেমেছিল তারা। যাতে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার মাধ্যমে গ্রাহকদের তথ্য চুরি এবং মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ সংক্রান্ত যাবতীয় বিতর্ক কাটিয়ে ওঠা যায়।

তাদের নিশানায় ছিলেন মার্কিন কোটিপতি জর্জ সোরোসও। মার্কিন কংগ্রেসে শুনানি চলাকালীন জাকারবার্গ ও ফেসবুকের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন তিনি। সোরোস এবং ফেসবুকের প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থাগুলির মধ্যে আর্থিক লেনদেন রয়েছে বলে প্রমাণ করতে চেয়েছিল তারা। সেই মতো একটি রিপোর্টও সামনে আনা হয়। সংবাদমাধ্যমকেও চাপ দেওয়া হচ্ছিল বিষয়টি তুলে ধরতে। তবে বুধবার মার্কিন সংবাদপত্র ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এ প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনই ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ফেসবুকের তরফে ‘ডিফাইনার্স পাবলিক অ্যাফেয়ার্স’-কে নিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরা হয় ওই প্রতিবেদনে। তার পর থেকেই সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছেন ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এবং স্যর নিক ক্লেগ। সংস্থার আন্তর্জাতিক নীতি এবং যোগাযোগ বিভাগের প্রধান হিসাবে গতমাসেই নিযুক্ত হন নিক।

আরও পড়ুন: আকাশ থেকেই ধ্বংস করা যাবে শত্রু ডুবোজাহাজ, অ্যান্টি সাবমেরিন চপার কিনবে ভারত​

আরও পড়ুন: #মিটু প্রতিবাদ কি শুধুই এলিটদের, কী বলছে কলকাতা?​

দু’জনের উপরই বেজায় চটেছেন বিনিয়োগকারীরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম জোনাস ক্রোন। ‘ট্রিলিয়াম অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট’ সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট তিনি। ফেসবুকে ৮৫ লক্ষ পাউন্ড অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৮ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার অংশীদার ওই সংস্থা। সম্প্রতি জাকারবার্গকে ফোন করেন তিনি। সরাসরি বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলেন। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘নিজেদের আহামরি কিছু ভাবতে শুরু করেছে ফেসবুক। যেন বাকিদের চেয়ে স্পেশ্যাল ওরা। যা একেবারেই ঠিক নয়। একটা সংস্থার বই আর কিছু তো নয়! তাই চেয়ারম্যান আর সিইও পদের মধ্যে পার্থক্য থাকা দরকার। খবরটা চোখে আসার পর আমাদের সংস্থার আধিকারিকদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। ওদের সঙ্গে কাজ করতে আর ইচ্ছুক নই আমরা।’’

যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জাকারবার্গ। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘শুরুতে ওই সংস্থাকে নিয়োগের কথা জানতামই না আমি। যে মুহূর্তে জানতে পারি, সঙ্গে সঙ্গে টিমের সকলের সঙ্গে কথা বলি। ওদের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করি। এই মুহূর্তে ওই সংস্থার সঙ্গে কোনও যোগ নেই আমাদের।’’ এই ধরনের কোন কোন সংস্থা ফেসবুকের হয়ে কাজ করছে, তাদের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের সংযোগ রয়েছে, স্যর নিককে তা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করতে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

তবে তাতেও সন্তুষ্ট নন বিনিয়োগকারীরা। ২০০৪ সালে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই নিজের হাতে সংস্থার নিয়ন্ত্রণ রেখেছেন জাকারবার্গ। চেয়ারম্যানের পদ সামলানোর পাশাপাশি সংস্থার সিইও তিনি । এ বার তাতে বদল চাইছেন বিনিয়োগকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Facebook Mark Zuckerberg Social Media Tech
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE