দীর্ঘ দিন ধরেই গভীর মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ফিদেলিতো। বৃহস্পতিবার সকালে (স্থানীয় সময়) আত্মহত্যা করেন তিনি। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে।
আত্মহত্যা করলেন ফিদেল কাস্ত্রোর বড় ছেলে। পুরো নাম ফিদেল অ্যাঞ্জেল কাস্ত্রো দিয়াজ-বালার্ত। বাবার সঙ্গে চেহারার মিল ছিল চোখে পড়ার মতো। সেই কারণেই তাঁকে ‘ফিদেলিতো’ নামে ডাকা হত। তাঁর আত্মঘাতী হওয়ার খবর প্রকাশ করেছে কিউবার সরকারি সংবাদপত্র ‘গ্রানমা’।
‘গ্রানমা’ জানিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই গভীর মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ফিদেলিতো। চিকিত্সা চলছিল। বেশ কয়েক দিন হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন। পরে অবশ্য বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। বৃহস্পতিবার সকালে (স্থানীয় সময়) আত্মহত্যা করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।
ফিদেলিতোর মা মিরতা ডিয়াজ-বালার্ত ফিদেল কাস্ত্রোর প্রথম পক্ষের স্ত্রী। প্রাক্তন কিউবান রাষ্ট্রনেতার এই প্রথম সন্তানের জন্ম ১৯৪৯ সালে। কিউবার বিল্পবের সময়ই মিরতার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায় ফিদেলের। ফিদেলিতোকে নিয়ে মিয়ামি চলে যান তাঁর মা। পরে বাবাকে দেখতে কিউবায় ফিরে আসেন তিনি। অভিযোগ ওঠে, ফিদেলিতোকে নাকি আর তাঁর মায়ের কাছে ফিরে যেতে দেননি তাঁর বাবা ফিদেল কাস্ত্রো। ফিদেলের বিরুদ্ধে তাঁর ছেলেকে অপহরণের অভিযোগও তুলেছিলেন মিরতা।
আরও পড়ুন:
সু চি-র বাড়ি লক্ষ করে পেট্রোল বোমা
মন্ত্রীর ইস্তফায় নাটক ব্রিটেনে
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশোনা করা ফিদেলিতো নিজে ছিলেন একজন পরমাণু পদার্থবিদ। ১৯৮০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি কিউবার জুরাগুয়া পারমাণু বিদ্যুত্ প্রকল্পের প্রধান ছিলেন। ফিদেলের এই স্বপ্নের প্রকল্প নির্ভরশীল ছিল তত্কালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের উপর। সোভিয়েত ভেঙে যাওয়ার পর অনুদান বন্ধ হয়ে যায়। একই সঙ্গে প্ল্যান্টে শুরু হয় বড়সড় যান্ত্রিক গোলমাল। ছেলেকে পদ থেকে বরখাস্ত করেন ক্ষুব্ধ ফিদেল। তবে পরে তিনি ‘কিউবান কাউন্সিল অব স্টেট’-এ বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতা এবং কিউবার ‘অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স’-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি ওই দুই পদে ছিলেন।
ফিদেলের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর পাঁচ সন্তান। প্রত্যেকেই ছেলে। এ ছাড়াও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে ফিদেলের আরও দুই মেয়ে এবং এক ছেলে জন্মায়। ফিদেলিতোই ছিলেন তাঁর নয় সন্তানের মধ্যে সকলের বড়।
ফিদেলিতোর লেখা বেশ কয়েকটি বই রয়েছে। বিজ্ঞানের মঞ্চে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বহু বার প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। তবে বাবার সঙ্গে চেহারার মিল থাকলেও ফিদেলের মতো তেজ এবং শাসকসুলভ মনোভাব নাকি কোনদিনই ফিদোলিতোর মধ্যে প্রকাশ পায়নি। এমনটাই জানিয়েছেন কিউবা সরকারের এক প্রাক্তন আধিকারিক আরতুরো লোপেজ-লেভি। বর্তমানে তিনি টেক্সাসের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক। তাঁর কথায়, ফিদেলিতোর মধ্যে সেই ক্যারিসমা ছিল না যা ফিদেলের মধ্যে ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy