Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
International News

ইনি লন্ডনের প্রথম বাঙালি কাউন্সিলর

লেবার পার্টির টিকিটে ভোটে লড়ে লন্ডনের নিউহ্যাম বরোর কাউন্সিলর হয়েছেন রহিত কে দাশগুপ্ত। ৩০ বছর বয়সে। লন্ডনের পুর নির্বাচনে কলকাতার রহিত ভোট পেয়েছেন ৭০ শতাংশ।

রহিত কে দাশগুপ্ত।-ফাইল চিত্র।

রহিত কে দাশগুপ্ত।-ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৮ ১৫:৪৩
Share: Save:

এই প্রথম লন্ডনের কোনও এলাকার জনপ্রতিনিধি হলেন কলকাতার এক বাঙালি সন্তান।

লেবার পার্টির টিকিটে ভোটে লড়ে লন্ডনের নিউহ্যাম বরোর কাউন্সিলর হয়েছেন রহিত কে দাশগুপ্ত। ৩০ বছর বয়সে। লন্ডনের পুর নির্বাচনে কলকাতার রহিত ভোট পেয়েছেন ৭০ শতাংশ।

পড়াশোনায় বরাবরই ব্রিলিয়্যান্ট রহিত কোনও পরীক্ষাতেই ৭০ শতাংশের কম নম্বর পাননি।

কলকাতার সেন্ট জেমস স্কুল থেকে বেরিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে স্নাতক হওয়ার পর রহিত স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়াশোনা করতে চলে যান লন্ডনে।

বিশিষ্ট রাজনীতিক গর্ডন ব্রাউনের মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রহিত ব্রিটেনের রাজনীতিতে ঢুকে পড়েন আজ থেকে ৯ বছর আগে। ২০০৯ সালে।

গত বছরেই রহিত ‘কিস্তিমাত’ করার চেষ্টা করেছিলেন লেবার পার্টির টিকিটে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিউ হ্যাম্পশায়ার আসনে দাঁড়িয়ে। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র টোরি (কনজারভেটিভ) পার্টির এক জবরদস্ত প্রার্থী। সে বার অবশ্য ভোটে উতরোতে পারেননি রহিত।

অধুনা ব্রিটেনের লাফবরো বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রিজের লেকচারার রহিত এর আগে পড়িয়েছেন লন্ডনের আরও দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়, সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় আর শিল্পকলা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১৪ সালে প্রকাশিত বই ‘মাসক্যুলিনিটি অ্যান্ড ইট্‌স চ্যালেঞ্জেস ইন ইন্ডিয়া’-র সহ লেখক রহিতের লেখা প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে ইকনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইক্‌লি (ইপিডব্লিউ), সাউথ এশিয়ান হিস্ট্রি অ্যান্ড কালচার এবং ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ নিউ মিডিয়া টেকনোলজিসের মতো বিখ্যাত পত্রপত্রিকায়।

লন্ডনের পুরভোটে দাঁড়ানোর আগে থেকেই মা জয়শ্রী ও বাবা মুকুট দাশগুপ্ত তাঁকে উৎসাহ দিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন রহিত। তাঁর কথায়, ‘‘মা বলেছেন, আমার কঠিন পরিশ্রমের জয় হয়েছে। ওঁরা ভোটের ফলাফল জানার উৎকণ্ঠায় অনেক দিন ভাল ভাবে ঘুমোতেও পারেননি।’’

রহিতই জানিয়েছেন, তাঁর পরিবার বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী। যদিও তাঁর মা বা বাবা কেউই কোনও দিন সক্রিয় ভাবে রাজনীতি করেননি।

ভারতে হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনীতির যে উত্থানে যথেষ্টই হতাশ রহিত। বলেছেন, ‘‘আমি বিজেপি-র এই হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনীতির বিরোধী। আমার জন্ম একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশে (ভারত)। তাই সেই দেশে ধর্মনিরপেক্ষতা আক্রমণের মুখে পড়লে আমার খুব রাগ হয়। পশ্চিমবঙ্গে সেই জাতীয়তাবাদ প্রশ্রয় পাচ্ছে না দেখে আমি আনন্দিত।’’

তবে দমদম মেট্রো-কাণ্ডের পর কলকাতার মানুষের সচেতনতা সম্পর্কে অনেকটা হতাশও হয়েছেন রহিত। তাঁর কথায়, ‘‘অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় কলকাতা বরাবরই উদার ও মুক্ত চিন্তার দুর্গ বলে পরিচিত হয়ে এসেছে। সেই কলকাতায় দমদম মেট্রো-কাণ্ড একেবারেই অনভিপ্রেত। নীতি-পুলিশদের মেনে নেওয়া যায় না।’’

লন্ডনের একটি এলাকার কাউন্সিলর হওয়ার পর এখন তাঁর লক্ষ্যটা কী?

রহিত বলেছেন, ‘‘যাঁদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, তাঁদের মাথার উপর ছাদের ব্যবস্থা করাটাই আমার প্রধান লক্ষ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE