Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

জোর কম্পন এ বার পাপুয়া নিউ গিনিতেও

নেপালে প্রকৃতির মারের পর মার চলছেই। তারই মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে ভূমিকম্প এ বার অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের অন্তর্গত পাপুয়া নিউ গিনিতে। একটি প্লেট পিছলে অন্য প্লেটের মধ্যে ঢুকে যাওয়ায় মঙ্গলবার ভোরে কেঁপে ওঠে প্রশান্ত মহাসাগরের ওই দ্বীপরাষ্ট্র। কম্পনের উৎস সেখানকার নিউ ব্রিটেন এলাকার কাছে মাটির অল্প নীচে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৭.৫।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৫ ০৩:৪৮
Share: Save:

নেপালে প্রকৃতির মারের পর মার চলছেই। তারই মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে ভূমিকম্প এ বার অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের অন্তর্গত পাপুয়া নিউ গিনিতে। একটি প্লেট পিছলে অন্য প্লেটের মধ্যে ঢুকে যাওয়ায় মঙ্গলবার ভোরে কেঁপে ওঠে প্রশান্ত মহাসাগরের ওই দ্বীপরাষ্ট্র। কম্পনের উৎস সেখানকার নিউ ব্রিটেন এলাকার কাছে মাটির অল্প নীচে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৭.৫।

পাপুয়া নিউ গিনির ওই এলাকা জনবিরল। তাই এত তীব্র কম্পনেও প্রাণহানি বা অন্য রকম ক্ষয়ক্ষতির খবর বিশেষ নেই। তবে ভূমিকম্পের পরে পরেই অস্ট্রেলিয়া উপকূলে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়। বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয় গোটা ইন্দোনেশিয়া উপকূলেও।

ভূবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পাপুয়া নিউ গিনির ওই এলাকা অতিমাত্রায় ভূকম্পপ্রবণ। এতটাই যে, ওখানে ছোট ও মাঝারি মাত্রার কম্পন হয়েই চলেছে। মার্কিন ভূ-সর্বেক্ষণ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানাচ্ছে, এর আগে, গত ২৯ মার্চও ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপেছিল পাপুয়া নিউ গিনি। এ দিনও সমমাত্রার কম্পন হয়েছে। ইউএসজিএস জানাচ্ছে, ওই দু’টি ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পের মাঝখানে এক মাসের কিছু বেশি সময়ে মোট ২৫ বার কেঁপেছে পাপুয়া নিউ গিনি! ওই সব কম্পনের মাত্রা ছিল পাঁচের উপরে। গত ৩০ এপ্রিল এবং ১ মে যথাক্রমে ৬.৭ এবং ৬.৮ মাত্রার দু’টি কম্পন অনুভূত হয়েছে সেখানে।

পাপুয়া নিউ গিনিতে এত ঘনঘন ভূমিকম্পের কারণ কী?

ভূবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ভারতের হিমালয় জুড়ে ইন্ডিয়ান প্লেটটি প্রতিনিয়ত ইউরেশিয়ান প্লেটের নীচে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এর ফলে দু’টি প্লেট যে-সব জায়গায় কাছাকাছি এসেছে, সেখানে তৈরি হয়েছে অজস্র ফাটল। সেই সব ফাটলে ক্রমাগত শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে। শক্তিতে পরিপূর্ণ বা সম্পৃক্ত হয়ে যাওয়ার পরেও কোনও ফাটল যখন আরও শক্তি সংগ্রহের চেষ্টা করে, তখন একটি প্লেট অন্য প্লেটের নীচে ঢুকে যায়। নেপালে এ ভাবেই ভারতীয় প্লেট পিছলে ইউরোশিয়ান প্লেটের নীচে ঢুকে যাওয়ায় ২৫ এপ্রিল ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। তাতে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ দিনও সেখানে কম্পন অনুভূত হয়েছে।

পাপুয়া নিউ গিনিতে কম্পনের কারণ হিসেবে ইউএসজিএস জানায়, সেখানে অস্ট্রেলীয় প্লেটটি পিছলে ঢুকে গিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেটের মধ্যে। ওই অঞ্চলে অস্ট্রেলীয় প্লেট এবং প্রশন্ত মহাসাগরীয় প্লেটের মধ্যে সব সময়েই পরস্পরের মধ্যে ঢুকে যাওয়ার লড়াই চলছে। তারই জেরে অঞ্চলটি অতিমাত্রায় ভূকম্পপ্রবণ হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক কালে পাপুয়া নিউ গিনিতে সব থেকে বড় ভূমিকম্প হয়েছে ১৯৯১ সালের জুলাইয়ে। মাত্রা ছিল ৮.১। ২০০০ সালের নভেম্বরে ৭.৮ মাত্রার ভূকম্প হয়েছিল ওই দ্বীপে। তার পরে এ বছর ৭.৫ মাত্রার দু’টি ভূমিকম্প হল পাপুয়া নিউ গিনিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE