Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বদরাগী সঙ্গীদের নিয়ে নীরব-হোলি

নীরব একা ঘর পেলেও সেই ঘরে আরও এক জন বন্দির থাকার সম্ভাবনাই বেশি বলে জেলসূত্রের খবর।

লন্ডনে নীরব মোদী। —ফাইল চিত্র

লন্ডনে নীরব মোদী। —ফাইল চিত্র

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৯ ০৩:২৫
Share: Save:

হোলি এ বার আর আনন্দে কাটছে না নীরব মোদীর।

কোথায় লন্ডনের ওয়েস্টএন্ড এলাকায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, আর কোথায় ভিড়ে ঠাসাঠাসি ওয়ান্সওয়র্থ! গতকাল, অর্থাৎ হোলির ঠিক আগের দিন থেকে শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমের এই ওয়ান্সওয়র্থ জেলেই ঋণখেলাপি হিরে ব্যবসায়ী।

কেমন এই ওয়ান্সওয়র্থ জেল? মাস কয়েক আগে এই জেল পরিদর্শনে এসে একটি রিপোর্ট দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের প্রধান জেল পরিদর্শক। সেই রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ১৪০০ জনেরও বেশি পুরুষ বন্দি আছে এই জেলে। রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে, ‘‘এই সব বন্দির অনেকেই দাগী অপরাধী। বেশির ভাগই নিরক্ষর বা অল্পশিক্ষিত। এবং বদরাগী।’’ বন্দিরা অনেক সময়ে এতটাই গন্ডগোল শুরু করে যে খুব দরকারেও কোনও রক্ষী একা কোনও বন্দির ঘরে ঢোকেন না। রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, এখানকার শৌচাগারের অবস্থাও যথেষ্ট করুণ। গত এক বছরে এই জেলে ছ’জন আত্মহত্যা করেছেন। নীরব একা ঘর পেলেও সেই ঘরে আরও এক জন বন্দির থাকার সম্ভাবনাই বেশি বলে জেলসূত্রের খবর।

২৯ মার্চ শুরু হবে নীরবের প্রত্যর্পণ মামলা। বিজয় মাল্যের ক্ষেত্রে না পারলেও নীরবের বেলায় তাঁরা ব্যর্থ হবেন না বলে দাবি সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁরা বলছেন, এত দিন ধরে বিজয় মাল্যকে ভারতে ফের পাঠানোর চেষ্টার ফলেই তাঁদের অভিজ্ঞতা হয়ে গিয়েছে, কী ভাবে প্রত্যর্পণ মামলা লড়তে হয়। নীরবের প্রত্যর্পণ মামলা লড়ার সময়ে সেই অভিজ্ঞতা তাঁদের কাজে লাগবে। নীরবের এই জামিন না-পাওয়ার বিষয়টিকেও নিজেদের জয় বলে দেখছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। তাঁদের দাবি, ভারতীয় গোয়েন্দারা ব্রিটিশ গোয়েন্দা দফতর স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে সমানে তথ্য-প্রমাণ দিয়েছিলেন বলেই গতকাল নীরবকে জামিন দেননি ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের বিচারক মারি ম্যালন।

নীরবের আইনজীবীরা যদিও বারবার বলেছেন, ভারতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার আগেই বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে এ দেশে চলে এসেছেন নীরব। এখানে এসে আইনি পথেই ব্যবসা করছেন। জানা গিয়েছে, ভারতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে, ২০১৮-র মার্চে লন্ডনে নতুন একটি সংস্থা নথিভুক্ত করেছিলেন নীরব। সংস্থার নাম ‘ডায়ামন্ড হোল্ডিংস লিমিটেড’। ঘড়ি ও গয়নার হোলসেল বিক্রেতা হিসেবে সংস্থাটিকে নথিভুক্ত করা হয়েছিল। সংস্থাটির ডিরেক্টর হিসেবে নাম ছিল রাজ পটেলের। তাঁর ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ ছিল— ‘৪২ সেন্টার পয়েন্ট টাওয়ার, ১০১-১০৩ নিউ অক্সফোর্ড স্ট্রিট, লন্ডন’, যেটি নীরবের লন্ডনের ফ্ল্যাটের ঠিকানাই। সংস্থাটির ঠিকানা— ‘স্কটিশ প্রভিডেন্ট হাউসিং, ৭৬-৮০ কলেজ রোড, হ্যারো’। এই সব নথি দেখিয়েই নীরবের আইনজীবী হেপবার্ন স্কট প্রত্যর্পণ মামলা লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সূত্রের খবর, স্কট বলবেন, এই প্রত্যপর্ণের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে এবং নীরবকে ভারতে ফেরত পাঠানো হলে তাঁর মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা রয়েছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nirav Modi Holi Holi Celebration London Jail
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE