Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

নববর্ষেও উত্তাল হংকং, চলল কাঁদানে গ্যাস

টানা ছ’মাস চলা বিক্ষোভের ছবিটা পাল্টালো না নতুন বছরের প্রথম দিনেও।

হংকংয়ের রাস্তায়। রয়টার্স

হংকংয়ের রাস্তায়। রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
হংকং শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৩২
Share: Save:

টানা ছ’মাস চলা বিক্ষোভের ছবিটা পাল্টালো না নতুন বছরের প্রথম দিনেও। প্রতিবাদের মাধ্যমেই নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা। সেই মতো আজ নানা প্রদেশে বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল গণতন্ত্রকামী সংগঠনগুলি। অভিযোগ সেখানেই কাদানো গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। চলে রবার বুলেটও। পুলিশের পাল্টা অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা তাদের লক্ষ্য করে অজস্র বোতল বোমা ছুড়েছে।

আজ সকাল থেকেই ভিক্টোরিয়া পার্কে জড়ো হয়েছিলেন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। কালো পোশাক। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মুখোশ ছিল অনেকেরই মুখে। উদ্দেশ্য ছিল, মিছিল করে কজ়ওয়ে বে দিয়ে হংকংয়ের মূল দ্বীপে যাওয়া। অনেকেই সেখানে স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে শামিল হন। অনেকের হাতেই ছিল পোস্টার-ব্যানার। কোথাও লেখা, ‘হংকংকে স্বাধীন করো’ কোথাও ‘স্বাধীনতা বিনামূল্যে আসে না’।

কিন্তু গোলমাল শুরু হয় ওয়ানচাই বার প্রদেশে। একটি বহুজাতিক ব্যাঙ্কের চত্বরে কিছু বিক্ষোভকারী জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ করে হংকং পুলিশ। পরিস্থিতি সামলাতে সেখানেই প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে তারা। বিক্ষোভকারীদের পাল্টা অভিযোগ, আন্দোলনের জন্য চাঁদা তুলতে ওই নির্দিষ্ট ব্যাঙ্কেরই একটি অ্যাকাউন্ট এত দিন ব্যবহার করা হচ্ছিল। কাউকে কিছু না-জানিয়ে আচমকাই সেই অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারই প্রতিবাদ জানানো হচ্ছিল আজ। ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেন তাঁরা। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও অ্যাকাউন্ট বন্ধের অভিযোগ মানতে চাননি। পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে মুহূর্তে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। পরিস্থিতি সামলাতে রবার ছোড়ে পুলিশ। তবে আজকের ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই বলেই জানিয়েছে পুলিশ।

বিক্ষোভ কর্মসূচির অন্যতম সংগঠক জিমি শাম আন্দোলনকারীদের তরফে জানালেন, হংকং প্রশাসনের অনড় মনোভাবের জন্যই বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘২০১৯-এর দাবি নিয়ে ২০২০ সালেও আমাদের গলা ফাটাতে হচ্ছে, এটা খুবই দুঃখজনক পরিস্থিতি। আমরা জানি, আরও কঠিন দিন আসছে, আমাদের উপরে পুলিশি নির্যাতন আরও বাড়বে। কিন্তু আমরাও প্রস্তুত।’’ মা ও দু’বছরের সন্তানকে নিয়ে আজ মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন টুং নামেএক যুবক। বললেন, ‘‘শুভ নববর্ষ বলার মতো অবস্থায় আমরা নেই। হংকংয়ের মানুষ আনন্দে নেই। পুলিশি অত্যাচারের নিরপেক্ষ তদন্ত না-হলে আর প্রশাসন আমাদের পাঁচ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত এখানকার মানুষের জীবনে শান্তি ফিরবে না।’’ চিনা আধিপত্যের বিরুদ্ধে আরও গভীর আন্দোলনের বার্তা দিয়ে রেখেছেন সংগঠকেরাও।

তবে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বার্তায় হংকংয়ের পরিস্থিতি নিয়ে আরও এক বার মুখ খুলেছেন চিনের প্রেসিডেন্ট। শি চিনফিং দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া এক বার্তায় জানিয়েছেন, হংকংয়ের মানুষের সমৃদ্ধি আর এলাকার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বেজিং বদ্ধপরিকর। এ নিয়ে তৃতীয় কোনও পক্ষের হস্তক্ষেপ যে চিন বরদাস্ত করবে না, তা-ও ফের স্পষ্ট করেছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hong Kong Protest Against China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE