Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ভারতকেও বিঁধলেন ওবামা

দৃশ্যতই কিছুটা ‘ডিগবাজি’ খেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা! ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে হাত মিলিয়ে ‘এক সুরে’ কথা বলার পরের দিনেই।ওবামা বললেন, ‘‘ভারতীয় উপমহাদেশে যে পারমাণবিক হামলার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, তা কমাতে ভারত ও পাকিস্তানকে যৌথ ভাবেই উদ্যোগী হতে হবে। দু’পক্ষের কাছে থেকেই আমরা সেই উদ্যোগটা দেখতে চাই। দু’টি দেশই যে ভাবে সামরিক শক্তি বাড়িয়ে চলেছে, তাতে এখন তাদের প্রমাণ করতে হবে, তারা ভুল কিছু করছে না। ভুল পথে হাঁটছে না।’’

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৬ ১৭:২১
Share: Save:

দৃশ্যতই কিছুটা ‘ডিগবাজি’ খেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা!

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে হাত মিলিয়ে ‘এক সুরে’ কথা বলার পরের দিনেই।

সামনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাই প্রকাশ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করলেন। আর সেটা করতে গিয়েই কিছুটা ‘ডিগবাজি’ খেয়ে বসলেন আমেরিকার ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট!

শনিবার ওয়াশিংটনে ‘নিউক্লিয়ার সিকিওরিটি’ সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে ওবামা বললেন, ‘‘ভারতীয় উপমহাদেশে যে পারমাণবিক হামলার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, তা কমাতে ভারত ও পাকিস্তানকে যৌথ ভাবেই উদ্যোগী হতে হবে। দু’পক্ষের কাছে থেকেই আমরা সেই উদ্যোগটা দেখতে চাই। দু’টি দেশই যে ভাবে সামরিক শক্তি বাড়িয়ে চলেছে, তাতে এখন তাদের প্রমাণ করতে হবে, তারা ভুল কিছু করছে না। ভুল পথে হাঁটছে না।’’

কূটনীতিকদের বক্তব্য, ভারতের ‘পথ’টা ভুল নয় বলেই গত কাল প্রধানমন্ত্রী মোদীর সুরে সুর মিলিয়ে এই উপমহাদেশে শান্তির লক্ষ্যে ভারতের ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ওবামা এ ব্যাপারে দু’টি দেশকেই তাদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেওয়ায় অনেকেই বিস্মিত। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফেও উষ্মা প্রকাশ করা হয়েছে।

সামনে হঠাৎ করে এসে যাওয়া সুযোগটা সঙ্গে সঙ্গে কাজে লাগিয়েছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের বিদেশ সচিব আইজাজ চৌধুরী বলেছেন, ‘‘গত ৪০ বছর ধরে পাকিস্তান খুব বিচার- বিবেচনা করেই পারমামবিক অস্ত্রশস্ত্র বানাচ্ছে। যেচে কারও ক্ষতি করার জন্য সে সব বানাচ্ছে না।

আরও পড়ুন- মাসুদকে নিষিদ্ধ করতে দিল না চিন, বেনজির কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের

তবে কূটনীতিকরা এও বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ দিনের বক্তব্যের মূল লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানই।

ওবামা তাঁর ভাষণে বলেছেন, ‘‘কোনও কোনও দেশ যে ভাবে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র সম্ভার বাড়িয়ে চলেছে, তাতে উদ্বেগের কারণ রয়েছে যথেষ্টই। ওই দেশগুলি ছোট ছোট ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র বানিয়ে চলেছে বা সে সব মজুত করছে। কিন্তু ওই সব অস্ত্রের বেশ কিছুটা চুরি হয়ে যাচ্ছে। বা তা হাত বদলে চলে যাচ্ছে অন্য হাতে!’’

কূটনীতিকদের একাংশের বক্তব্য, পাকিস্তানের কথা মাথায় রেখেই এটা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কারণ, পাকিস্তানই অন্যতম প্রধান দেশ, যারা গত কয়েক বছর ধরে ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্রই বানিয়ে চলেছে। কারণ হিসেবে বলছে, ভারতের জন্যই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে ইসলামাবাদকে এ সব বানাতে হচ্ছে। যদিও আমেরিকা সহ পাশ্চাত্যের দেশগুলি বহু দিন ধরেই বলে আসছে, সেই সব অস্ত্রের একটা অংশ চলে যাচ্ছে আল-কায়দা বা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির হাতে।

কিন্তু রিপাবলিকানদের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে ‘ভারত-বন্ধু’ বলে পরিচিত আমেরিকার ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট কী ভাবে ভারত আর পাকিস্তানকে একই পংক্তিতে বসিয়ে ফেললেন, তা নিয়ে নানা মহলে যথেষ্টই বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। কংগ্রেসের মুখপাত্র মনীশ তিওয়ারি বলেছেন, ‘‘দু’টি দেশকে একই ভাবে দেখাটা মোটেই ঠিক নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE