Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভোট ফুরোতেই পাক সন্ত্রাস নিয়ে চুপ কেন্দ্র

রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, ভোট শেষ। রাত পোহালেই ফলাফল। প্রচারের সময় উরি থেকে বালাকোটের বীরত্ব ছাতি ফুলিয়ে বলার প্রয়োজন ছিল বিজেপির। এখন সেই প্রয়োজন ফুরিয়েছে।

পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির সঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বুধবার বিশকেকে এসসিও-র বৈঠকে। ছবি: বিদেশ মন্ত্রক

পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির সঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বুধবার বিশকেকে এসসিও-র বৈঠকে। ছবি: বিদেশ মন্ত্রক

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৯ ০২:৫৩
Share: Save:

ভোটের প্রচারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লাগাতার ‘যুদ্ধং দেহি’ মনোভাব নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদীরা। কিন্তু ভোট শেষের পরে আজ একই মঞ্চে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশিকে পেয়েও প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে বিঁধল না সাউথ ব্লক। কিরঘিজস্তানে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর বিদেশমন্ত্রীদের সম্মেলনে আজ বক্তৃতা দিলেন সুষমা স্বরাজ। সেখানে চাবাহার করিডর থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের অন্তর্ভূক্তি— সব নিয়ে বিশদে বললেও আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস নিয়ে নিয়ে হিরন্ময় নীরবতাই বজায় রাখলেন তিনি। কথা বললেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির সঙ্গেও। যা দেখে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার টুইট, ‘ভোট শেষ। পুলওয়ামার শহিদদের ভুলে গিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা শুরু।’

রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, ভোট শেষ। রাত পোহালেই ফলাফল। প্রচারের সময় উরি থেকে বালাকোটের বীরত্ব ছাতি ফুলিয়ে বলার প্রয়োজন ছিল বিজেপির। এখন সেই প্রয়োজন ফুরিয়েছে। বরং কৌশল হল, এর পরে সরকার গড়লে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত নয়, আলোচনার পথ খোলারই চেষ্টা শুরু করবেন মোদী। আগামী মাসের মাঝামাঝি এসসিও-র শীর্ষ সম্মেলন। সেখানে ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী যাবেন। থাকবেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও। জিতবেন ধরে নিয়ে সেখানে পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতিও নাকি শুরু করেছেন মোদী। সূত্রের বক্তব্য, ভোট শেষ হওয়ার পরে আর যুদ্ধের জিগির নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ফেরানোর পুরনো অবস্থানেই ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মোদী। আন্তর্জাতিক মঞ্চে শান্তির দূত হিসেবে নিজেকে তুলে ধরাই তাঁর লক্ষ্য।

আজ এক বারই পুলওয়ামা হামলার কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী। সেটিও মৃদু ভাবে। সুষমা বলেছেন, ‘‘শ্রীলঙ্কার ভাইবোনেদের জন্য পূর্ণ ভালবাসা রয়েছে। সম্প্রতি তাঁরা সন্ত্রাসবাদের ভয়ঙ্কর রূপ দেখেছেন। পুলওয়ামা হামলার আঘাত আমাদের মনে তাজা। প্রতিবেশী দেশে এই ঘটনা ঘটতে দেখে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা আরও সংকল্পবদ্ধ।’’

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এই প্রেক্ষিত আগেই রচিত হয়ে গিয়েছিল। জিতবেন ধরে নিয়ে এক দিকে যেমন শান্তির পায়রা ওড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন মোদী, তেমনই ইমরানও জানিয়ে দেন, মোদী ফিরলে দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিজেপির মতো কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল ক্ষমতায় থাকলে পাকিস্তানেরও সুবিধে। কারণ সে ক্ষেত্রে নিজেদের অনেক ভারত-বিরোধী পদক্ষেপকে মান্যতা দেওয়ার পথ খুলে যায় পাক সরকারের কাছেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE