বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানে এ ভাবেই গভীর খাদ তৈরি হয়েছিল। —ফাইল চিত্র
পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানে কত জন নিহত হয়েছিল, তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজার অবসান হয়নি। তার মধ্যেই এ বার ইতালির এক মহিলা সাংবাদিক দাবি করলেন, ১৩০ থেকে ১৭০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছিল বালাকোটে। একটি ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে সাংবাদিক ফ্রান্সেসকা মরিনোর আরও দাবি, বায়ুসেনার হামলায় গুরুতর জখম এখনও অন্তত ৪৫ জনের এখনও চিকিৎসা চলছে। নিহতদের মধ্যে জইশ-ই-মহম্মদের প্রশিক্ষকও রয়েছে। তবে এখনও পাক সেনার নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি, দাবি মরিনোর।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় ৪০ জন জওয়ান নিহত হওয়ার পর ভারত-পাক সীমান্তে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই প্রেক্ষিতেই ২৬ ফেব্রুয়ারি বালাকোটে ঢুকে বিমান হানা চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। প্রায় ১০০০ কেজি বোমা ফেলা হয় বলে বায়ুসেনার তরফে দাবি করা হয় সেই সময়। ওই হামলাতেই ১৩০ থেকে ১৭০ জন জঙ্গি নিহত হয় বলে দাবি করেছেন মরিনো।
‘স্ট্রিনজার এশিয়া’ নামে একটি ম্যাগাজিনের ওই প্রতিবেদনে মরিনো লিখেছেন, ‘‘বালাকোট থেকে শিনকিয়ারি শহরের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এই শিনকিয়ারিতেই রয়েছে পাক সেনার ‘জুনিয়র লিডার্স অ্যাকাডেমি’। সেখান থেকে হামলার কেন্দ্রস্থলে পৌঁছতে ৩৫-৪০ মিনিট সময় লাগে। কিন্তু ওই দিন ঘটনাস্থলে পাক সেনা পৌঁছয় সকাল ছ’টা নাগাদ। হামলার প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর। আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হরকত-উল-মুজাহিদিনের ক্যাম্পে।’’
আরও পড়ুন: ‘দিদি, আপনার থাপ্পড়ও আমার কাছে আশীর্বাদ’, পুরুলিয়ায় মমতাকে জবাব মোদীর
আরও পড়ুন: ‘সায়েন্টিফিক রিগিং’-এর অভিযোগে ধর্নায় বিজেপি, মিলল ৯০ শতাংশ বুথে বাহিনীর আশ্বাস
ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানে ঘটনাস্থলেই অনেকের মৃত্যু হয়েছিল। স্থানীয় সূত্র উদ্ধৃত করে মরিনোর দাবি, ‘‘চিকিৎসা চলাকালীন মারা গিয়েছিলেন আরও অন্তত ২০ জন। এ ছাড়া সেনার তত্ত্বাবধানে ওই ক্যাম্পেই এখনও চিকিৎসা চলছে ৪৫ জনের। পাক সেনার চিকিৎসকরাই তাঁদের চিকিৎসা করছেন । আর যাঁদের উদ্ধার করা হয়েছিল, তাঁরা এখনও পাক সেনার হেফাজতে রয়েছেন।’’
কিন্তু এত জঙ্গির মৃত্যু হলে সেই খবর প্রকাশ্যে এল না কেন? মরিনো দাবি করেছেন, নিহতদের মধ্যে ১১ জন জইশ প্রশিক্ষক ছিল। তার মধ্যে আবার দু’জন ছিল আফগানিস্তানের। জইশ জঙ্গিদের একটি বাহিনী নিহতদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মোটা টাকা দিয়ে এসেছে ক্ষতিপূরণের নামে। তাঁদের ভয় দেখিয়ে মুখ খুলতে বারণ করেছে জঙ্গিরা। ফলে মৃতদের পরিবার সূত্রেও পুরো খবর পাওয়া সম্ভব হয়নি।’’
অভিযানের পরেও জঙ্গি শিবির বন্ধ হয়নি, দাবি করেছেন মরিনো। লিখেছেন, জইশ জঙ্গিদের ঘাঁটি যে পাহাড়ে, তার পাদদেশেই রয়েছে ‘ব্লু পাইন’ হোটেল। সেখান থেকেই শুরু হচ্ছে জঙ্গি শিবিরের ওঠার রাস্তা। সেখানে এখনও একটি সাইনবোর্ড রয়েছে। তবে সেখান জইশের সমস্ত নাম-নিশানা মুছে ফেলা হয়েছে। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ঘোষিত জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের নামও।’’
রাতারাতি কী ভাবে ভারতীয় অভিযানের ক্ষয়ক্ষতির প্রমাণ ধুয়ে মুছে সাফ করতে চেয়েছিল পাকিস্তান, সেটা বোঝাতে প্রতিবেদনে বালাকোটে জইশ ঘাঁটির কাছাকাছি বিসিয়ান টাউনশিপের কিছু মানুষের কথা বলেছেন মরিনো। তাঁর বক্তব্য, ‘‘২৬ ফেব্রুয়ারি রাতের অন্ধকারে কুনহার নদীতে বহু গাড়ির ধ্বংসাবশেষ ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে ওই গ্রামের অনেকেই দাবি করেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy