Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পণ্ডিতদের পুনর্বাসন নিয়ে মন্তব্যে বিতর্ক 

সম্প্রতি আমেরিকায় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে সন্দীপবাবুর করা মন্তব্যের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যাওয়ার পরে শুরু হয় বিতর্ক।

সন্দীপ চক্রবর্তী

সন্দীপ চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৩২
Share: Save:

বিশেষ মর্যাদা ‌লোপের পরে যখন গোটা বিশ্বের নজর জম্মু-কাশ্মীরের উপরে কেন্দ্রীভূত, তখন নিউ ইয়র্কে ভারতীয় কনসাল জেনারেল সন্দীপ চক্রবর্তীর মন্তব্য নিয়ে ঘরে বাইরে বিতর্ক তৈরি হল।

সম্প্রতি আমেরিকায় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে সন্দীপবাবুর করা মন্তব্যের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যাওয়ার পরে শুরু হয় বিতর্ক। যেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘শ্রোতাদের মধ্যে কেউ ইজ়রায়েলের কথা বললেন। ইহুদিদের প্রসঙ্গ তুললেন। ওঁরা নিজেদের সংস্কৃতিকে নিজেদের ভূখণ্ডের বাইরেও দু’হাজার বছর ধরে টিকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন। আমি মনে করি, একই ভাবে টিকিয়ে রাখতে হবে কাশ্মীরি সংস্কৃতিকেও। কাশ্মীরের সংস্কৃতিই ভারতের সংস্কৃতি। হিন্দু সংস্কৃতি।’’ এখানেই না থেমে ভিডিয়োয় তাঁকে পণ্ডিতদের উদ্দেশে‌ বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনারা অদূর ভবিষ্যতে কাশ্মীর ফিরে পাবেন। এমন ঘটনা বিশ্বে আরও ঘটেছে। আমাদের সরকারও ইজ়রায়েলের মডেলে বসতি তৈরি করবে যাতে হিন্দু বাসিন্দারা কাশ্মীরে ফিরে যেতে পারে।’’

এই ভিডিয়োটিকে পোস্ট করে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান টুইট করে তোপ দেগেছেন দিল্লির বিরুদ্ধে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই থেকেই বোঝা যাচ্ছে ভারত সরকারের আরএসএস-পন্থী মানসিকতা কত দূর পর্যন্ত ফাসিস্ত হতে পারে। তারা জম্মু- কাশ্মীরে ধারাবাহিক ভাবে ১০০ দিন নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে। এমন চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার মুখোমুখি এর আগে কাশ্মীরিরা হননি। শক্তিশালী দেশগুলি নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থের কথা ভেবে মুখ বুজে বসে রয়েছে।’’

এই বিতর্ক নিয়ে বারবার প্রশ্ন করা সত্ত্বেও মুখ খোলেনি বিদেশ মন্ত্রক। পরে সন্দীপ চক্রবর্তী শুধু টুইট করেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার মন্তব্যকে ভুল প্রসঙ্গে দেখানো হয়েছে।’’ তবে কোন মন্তব্যকে ভুল প্রসঙ্গে দেখানো হয়েছে তা বলেননি তিনি। ভিডিয়োটিই ততক্ষণে ছড়িয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে তাঁকে পণ্ডিতদের উদ্দেশে বলতে দেখা গিয়েছে, ‘‘আমি বিশ্বাস করি নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভাল হবে। আপনারা আপনাদের জীবদ্দশায় ফিরে যেতে পারবেন কাশ্মীরে। ইজ়রায়েল পারলে আমরাও পারব।’’

কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, এ ব্যাপারে ভারতের সনাতন অবস্থানের বাইরে গিয়েই কথা বলেছেন ভারতীয় আমলা। কাশ্মীর এবং প্যালেস্তাইনের তুলনার প্রশ্নে দিল্লি বারবার অনীহাই দেখিয়েছে। ইজ়রায়েলের উদ্বাস্তু নীতির সমালোচনা করে রাষ্ট্রপুঞ্জে যে প্রস্তাব আনা হয়েছিল ভারত তার পক্ষেই ভোট দিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা বিশ্বের সামনে যখন জম্মু-কাশ্মীর প্রসঙ্গে নিজেদের উদার এবং উন্নয়নমুখী ভাবমূর্তিকে তুলে ধরতে ব্যগ্র মোদী সরকার, তখন নতুন করে উপত্যকা নিয়ে বিতর্ক উস্কে দেওয়াটা (তা-ও আবার আমেরিকার মাটিতে) আদৌ অভিপ্রেত ছিল না সাউথ ব্লকের কাছে। বিষয়টি নিয়ে নীরব থাকাটাই তাই শ্রেয় বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE