মেহুল চোক্সী। —ফাইল চিত্র।
পুলিশ তাঁকে ছাড়পত্র দিয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে ছিল না কোনও অভিযোগ। ভারত সরকারে তরফে এমন সদর্থক পদক্ষেপের পরই মেহুল চোক্সীকে প্রথমে ভিসা দেওয়া হয়েছিল। পরে দেওয়া হয় নাগরিকত্বও। সম্প্রতি অ্যান্টিগা প্রশাসনের তরফে এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।
অ্যান্টিগায় বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব বিষয়ক দফতর থেকে জারি করা ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চোক্সী সম্পর্কে মুম্বইয়ের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বা পুলিশের তরফে কোনও রকম বিরূপ মন্তব্য করা হয়নি। প্রতিক্ষেত্রেই তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। আর তার পরই অ্যান্টিগায় প্রবেশের বিষয় অনুমতি দেওয়া হয়।
গত বছর নভেম্বর মাসে অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছিল মেহুলকে। সে দেশের সরকারের বক্তব্য, সেই সময়ে ভারতের কাছে সবিস্তার মেহুল সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা চলছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু সে সময় কোনও অভিযোগ ছিল না বলেই ভারতের তরফে জানানো হয়।
নভেম্বরে অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব পাওয়ার পরে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পিএনবি-প্রতারণার ঘটনা সামনে আসার আগেই ভারত ছেড়ে চম্পট দেন মেহুল। ১৫ জানুয়ারি অ্যান্টিগায় নাগরিক হওয়ার শপথ নেন তিনি। এর ঠিক পরেই, ২৯ জানুয়ারি সিবিআই তাঁর ও নীরব মোদীর বিরুদ্ধে ১৩,৫০০ কোটি টাকার জালিয়াতির মামলা রুজু করে।
আরও পড়ুন: আর ‘দেবশিশু’ নয়, মাধ্যমিকে ফেল সেই হরিয়ানার প্রিন্স
চোক্সীর বিরুদ্ধে মে মাসে চার্জশিট দাখিল করেছে সিবিআই। জারি হয় জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা। তাঁকে দেশে ফেরাতে রেড কর্নার নোটিস জারির জন্য ইন্টারপোলে যায় সিবিআই। সেই নোটিস নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার জানতে পারে, ক্যারিবিয়ান দেশ অ্যান্টিগায় আশ্রয় নিয়েছেন পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি) কেলেঙ্কারির অন্যতম অভিযুক্ত মেহুল চোক্সী। সূত্রের খবর, আমেরিকা থেকে সেখানে যান তিনি। রয়েছে অ্যান্টিগার পাসপোর্টও। সরকারি সূত্রের খবর, ইন্টারপোলের জারি করা ‘ডিফিউশন’ নোটিসের ভিত্তিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে অ্যান্টিগার কর্তৃপক্ষ জানায়, গত জুলাই মাসে সে দেশে পৌঁছেছেন গীতাঞ্জলি জেমসের কর্ণধার।
আরও পড়ুন: ভারতের নির্বাচন প্রভাবিত করতে পারে রাশিয়া, হুঁশিয়ারি অক্সফোর্ড বিশেষজ্ঞের
এ খবর জানার পর পলাতক হিরে ব্যবসায়ী চোক্সীর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে অ্যান্টিগাকে আবেদন জানায় ভারত। অ্যান্টিগায় থাকাকালীন স্থল, জল এবং আকাশপথে চোক্সী যাতে যাতায়াত করতে না পারেন, সে জন্য ওই দেশের প্রশাসনের কাছে আবেদন করে নয়াদিল্লি।
ভারতের সঙ্গে অ্যান্টিগার কোনও প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় মেহুলকে ভারতে ফেরানো যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই অ্যান্টিগার প্রধানমন্ত্রী গ্যাস্টন ব্রাউন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আগে জানলে মেহুলকে নাগরিকত্ব দেওয়া হত না। কিন্তু আমাদের কাছে মেহুল সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট ধারণা ছিল না।’’ তবে মেহুলকে ফেরাতে ভারতকে সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত বলে অ্যান্টিগা সরকার জানায়। ভারতের এই আবেদনও খতিয়ে দেখা হবে জানিয়েছে সে দেশের সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy