ব্যঙ্গচিত্রে আইএস-বধ!
আয়োজন হয়েছে এমনই এক প্রতিযোগিতার। পশ্চিম এশিয়া জুড়ে দাপিয়ে বেড়ানো কুখ্যাত জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট সংক্ষেপে আইএস তাদের পেশি প্রদর্শনে কী কী করে চলেছে, তা নিয়েই রং-পেন্সিলে রঙ্গ-রসিকতা। খানিক চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা তাদের অপরাধ।
ব্রিটেন থেকে পেরু, ইতালি থেকে অস্ট্রেলিয়া, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অংশ নিয়েছে হাজার খানেক ছবি। প্রথম পর্ব শেষ। বেছে নেওয়া হয়েছে ২৭০টি ছবি। ফাইনালে অংশ নিতে এখন তাই পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে উড়ে আসছেন ব্যঙ্গচিত্র শিল্পীরা আয়োজক দেশ ইরানে।
এক দিকে আইএস কবলিত ইরাক, সিরিয়া। অন্য দিকে জঙ্গি-অধ্যুষিত আফগানিস্তান, পাকিস্তান। মানচিত্রের এমন জায়গায় থেকে ইরানের এই উদ্যোগে চমকে গিয়েছেন অনেকেই। বাছাই হওয়া কোনও ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্রাচীন সৌধ, ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন ভেঙে গুড়িয়ে দিচ্ছে আইএস। কোনও ছবিতে আবার দেখা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ হৃদ্যন্ত্র ও মস্তিষ্কটিকে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে ঢুকে যাচ্ছেন ‘মগজ ধোলাই’ যন্ত্রে। আর তার পর যন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসছে এক এক জন খতরনাক দুর্ধর্ষ জঙ্গি। মাসুদ শোজায়েল তাবাতাই নামে এক শিল্পীর কথায়, ‘‘আইএস সবকিছুতে ধর্মকে টেনে আনছে,
কিন্তু ওদের ধর্ম সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই। একটা যোগ্য জবাব দিতেই এই উদ্যোগ। ’’
নিজেদের ইসলামিক রিপাবলিক বলে দাবি করে যে দেশ, ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে তাদের জেহাদ! অনেকেই এর অন্তর্নিহিত অর্থ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। কারও কারও মতে, ইরান শিয়া-প্রধান দেশ। আর সুন্নি আইএস শিয়াদেরও কাফের বলে তাদের ঘরে ঢুকে কোতল করে যাচ্ছে। শত্রু যখন ঘরের কাছে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তখন তাদের বার্তা দিতেই হয়তো ইরানের এই পদক্ষেপ।
যোগদানকারী শিল্পীরা কিন্তু অনেকেই বেশ ভয়ে। স্বনামে অংশ নিচ্ছেন না প্রতিযোগিতায়। এমনকী ইরানেও আসছেন গোপনে। কারণ, শার্লি এবদো-র ইতিহাস তো রয়েইছে। এ বছরই ৭ জানুয়ারি ফরাসি সাপ্তাহিক পত্রিকাটির অফিসে ঢুকে ১১ জনকে হত্যা করে আল কায়দার দুই জঙ্গি। নিহতদের অনেকেই ছিলেন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী। ব্যঙ্গের পরতে সমালোচনা করে রং-তুলিতে খবর করে শার্লি এবদো। ভ্যাটিকান থেকে ইসলাম, পোপ
থেকে তালিবান, বিতর্কিত কোনও খবরই বাদ দিত না তারা। এমনকী হামলার পরের দিন ব্যঙ্গচিত্রেই জঙ্গিদের জবাব দিয়েছিল শার্লি। পরে হামলার দায় স্বীকার করে আল কায়দার ইয়েমেন শাখা জানায়, ব্যঙ্গচিত্রের বদলা নিতেই তাদের ওই আক্রমণ। জঙ্গিরা তখনই তোপ দাগে, তাদের নিয়ে রসিকতা করলেই মূল্য দিতে হবে। অতএব শার্লি এবদো-র পুনরাবৃত্তি যে ঘটবে না, তার নিশ্চয়তা দেবে কে?
তা ছাড়া আরও বড় ফাঁড়া তো রয়েইছে। প্রতিযোগিতার পরে নির্বাচিত ছবিগুলি নিয়ে প্রদর্শনী হবে। ইরাক এবং সিরিয়ায়। একেবারে আইএসের ডেরায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy