Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Iran

পাশে চেয়ে ইরানের বার্তা, চাপে ভারত

পরিস্থিতি শীঘ্রই হাতের বাইরে চলে যেতে পারে, ইরান এ কথা বিলক্ষণ জানে।

নরেন্দ্র মোদী ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি।—ছবি পিটিআই।

নরেন্দ্র মোদী ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৫৬
Share: Save:

ইরাকে মার্কিন ঘাঁটি নিশানা করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরে পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা বহু গুণ বেড়ে গেল। আর এই সংঘাতময় পরিস্থিতিতে ভারতকে পাশে পেতে প্রকাশ্যে বার্তা দিল তেহরান। ভারতে ইরানের রাষ্ট্রদূত আলি চেগেনি আজ জানিয়েছেন, আমেরিকার সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে ভারতের শান্তি প্রয়াসকে স্বাগত জানাচ্ছেন তাঁরা।

পরিস্থিতি শীঘ্রই হাতের বাইরে চলে যেতে পারে, ইরান এ কথা বিলক্ষণ জানে। কূটনীতিকদের মতে, কিছুটা সে কারণেই ভারতের পাশাপাশি আমেরিকার কৌশলগত অংশীদার আরও কিছু দেশের কাছে শান্তি উদ্যোগের বার্তা পাঠানো শুরু করেছে তেহরান। আপাতত ইরানি দূতের এই আহ্বানে টুঁ শব্দ করেনি নয়াদিল্লি। সাউথ ব্লক সূত্রের মতে, আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে সংঘাত যে হারে বাড়ছে, তাতে বেশি দিন হাত গুটিয়ে বসে থাকাটাও যে সম্ভব নয়, সেটা স্পষ্ট। কোন পথে এর মোকাবিলা করা হবে, তা নতুন বছরে মোদী সরকারের বিদেশনীতির পক্ষে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে চলেছে বলেই কূটনৈতিক শিবিরের অনুমান।

ইরানের রাষ্ট্রদূত আলি চেগেনি আজ বলেন, ‘‘সাধারণত গোটা বিশ্বে শান্তি বজায় রাখতে ভারত খুবই ভাল ভূমিকা পালন করে। এই অঞ্চলের প্রতিনিধিও তারা। উত্তেজনা কমাতে সমস্ত রাষ্ট্রের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। বিশেষ করে ভারতকে, কারণ ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র।’’ এর পরে চেগেনি বলেন, ‘‘আমরা যুদ্ধের পক্ষে নই। শান্তির পক্ষে ভারতের যে কোনও উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।’’

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ইরানের এই বার্তার পরে ভারতের উপর চাপ বাড়ল। কারণ গত কয়েক দিন ইরানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে যেমন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের কথা হয়েছে, তেমনই আমেরিকাও ভারতকে ইরানের সঙ্গ পরিত্যাগ করার জন্য ক্রমাগত চাপ দিয়ে চলেছে। সে দেশের বিদেশসচিব মাইক পম্পেও ভারতের হবু বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এবং বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে দু’বার এবং খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন।

তেলের দাম নিয়ে মোদী সরকার আরও বড় চাপে। ইতিমধ্যেই অশোধিত তেলের দাম ব্যারেল পিছু ৭০ ডলার ছুঁয়েছে। পেট্রল ডিজেলের দাম বাড়ছে ভারতে। ইরানে থেকে তেলের আমদানি কমে গিয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে তেলের জোগান হয়তো কম হচ্ছে না, কিন্তু বর্ধিত দাম চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সাউথ ব্লকের। তার মধ্যে ইরানের জবাবি আক্রমণে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পেট্রলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান আজ বলেন, ‘‘কী দ্রুত পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে সবাই দেখছেন। ভারতে কী প্রভাব পড়তে পারে, তা অনুমেয়। বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর সমস্ত তেল উৎপাদনকারী দেশের বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতর, পেট্রলিয়াম মন্ত্রক, অর্থ মন্ত্রক, বাণিজ্য মন্ত্রক ঘটনার দিকে নজর রাখছে। কী ভাবে তা সামাল দেওয়া যায়, তা নিয়ে লাগাতার আলোচনাও চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Conflict Iran USA India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE