ক্যালিফোর্নিয়া শ্যুটিংয়ে সন্দেহভাজন বন্দুকবাজ দম্পতী পাকিস্তান বংশোদ্ভূত। বৃহস্পতিবার প্রাথমিক তদন্তের শেষে এমনটাই জানিয়েছে এফবিআই। তাদের-এর সন্দেহ এই দম্পতি ইসলামিক জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিল।
পাঁচ বছর ধরে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজ করছে ফারুক। নরম, ভদ্র স্বভাবের যুবকটিকে সবাই বেশ পছন্দ করত। কিন্তু কী এমন ঘটল আপাত শান্ত সইদ রিজওয়ান ফারুক এই ধরণের হত্যালীলায় মেতে উঠল?
ফারুক দম্পতির এলোপাথাড়ি গুলিতে যারা খুন হয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম ৫২ বছরের নিকোলাস থালাসিনোস। সূত্রে খবর সপ্তাহ দুই আগে এই ইহুদীর সঙ্গে ইসলাম নিয়ে তীব্র বিতর্কে জড়ায় রিজওয়ান।
উৎসবের মরসুমে অফিসে বড়সড় একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অভ্যাগতের সংখ্যা প্রায় ৫০০। অনেকের সঙ্গে সেখানে ছিল সইদ রিজওয়ান ফারুকও। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন সে দিন প্রথম থেকেই বেশ বিরক্ত ছিল ফারুক।
গ্রুপ ছবি তোলার সময় হঠাৎ বেপাত্তা হয়ে যায় ফারুক। ফিরে এল একটু পরেই। হাতে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। সঙ্গে স্ত্রী। তার হাতেও বন্দুক।
মার্কিনি ফারুক গত বছর সৌদি আরব যায়। যখন ফেরে সঙ্গে ছিল স্ত্রী তাশফিন মালিক ও শিশু কন্যা।
ঘটনার দিন ফারুক ও তার স্ত্রী তাদের ছ’মাসের শিশুকন্যাকে ক্যালিফোর্নিয়ায় তাশফিনের মায়ের কাছে রেখে আসে। জানায় তাকা ডাক্তারের কাছে যাচ্ছে।
ফারুক ও তাশকিনের বাড়ি তল্লাসি করে ৫০০০ বুলেট ও ১২টি পাইপ বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এফবিআই-এর দাবি ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখত ফারুক।
বুধবার ক্যালিফোর্নিয়ার সান বার্নার্দিনোর ‘ইনল্যান্ড রিজিওনাল সেন্টার’ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই হামলায় অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ২১। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন গুরুতর জখম দুই পুলিশ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৭৫ রাউন্ডেরও বেশি গুলি চালিয়ে একটা কালো বড় গাড়ি চেপে পালাতে যায় তারা। কিন্তু তাড়া করে ধরে ফেলে পুলিশ।
অনুষ্ঠানের মধ্যে হঠাৎ ঢুকে পড়ে যখন গুলি চালাতে শুরু করে ফারুক ও তার স্ত্রী, তখন তাদের কেউ-ই চিনতে পারেনি। কারণ, দু’জনেরই পরনে ছিল হামলাকারীর কালো পোশাক, মুখ ঢাকা স্কি-মাস্কে। পরে বন্দুকবাজদের পরিচয় জানা গেলে খুবই আশ্চর্য হন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা। কারণ ফারুক অত্যন্ত নম্র স্বভাবের ছেলে বলে পরিচিত ছিল। মাস ছয়েক আগে স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সময় পিতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিল সে। তখন তার জন্য পার্টির আয়োজনও করেছিলেন সহকর্মীরা। ফারুক-তাশফিনের এই হামলায় বিস্মিত তাদের নিকটাত্মীয়েরাও।
সংবাদমাধ্যমে ফারুকদের নাম প্রকাশ্যে আসার পরেই তড়িঘড়ি একটি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন তাশফিনের ভাই ফারহান। তিনি জানান, সপ্তাহখানেক আগে ফারুকের সঙ্গে ফেসবুকে শেষ কথা হয়েছিল তাঁর। বোন আর ভগ্নিপতি কেন এমন করল, কিছুতেই ভেবে পাচ্ছেন না ফারহান। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের কী উদ্দেশ্য ছিল, আমি জানি না। শুধু এইটুকু বলতে পারি যে, এই ঘটনার পরে আমি আর পরিবারের সকলে হতভম্ব!’’ আক্রান্তদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy