হাতরায় এ ভাবেই ভাঙচুর চালাল আইএস। পরে তারা সেই ভিডিও ছেড়ে দিল ইন্টারনেটে।
মসুল, নিমরুদ ও নিনেভের পর ফের এক ঐতিহাসিক শহরে হামলা ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীর। এ বার জঙ্গিদের হাতুড়ি ও গোলাগুলিতে ধুলোয় মিশল ইরাকের অন্তত দু’হাজার বছরের প্রাচীন শহর হাতরা। হামলার পরে, শহরের বিস্তীর্ণ এলাকার দেওয়াল জুড়ে শুধুই ধ্বংসের চিহ্ন। আর গুলিতে ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে বহু প্রাচীন স্থাপত্য, মূর্তি ও প্রত্নসামগ্রী।
গত কালই এই হামলার ভিডিও প্রকাশ করেছে জঙ্গিরা। স্থানীয়দের অবশ্য দাবি, মাস খানেক আগেই এই হামলা চালায় জঙ্গিরা। সাত মিনিটের এই ভিডিওতে আপাদমস্তক কালো পোশাকে ঢাকা এক জঙ্গিকে দেখা গিয়েছে সিঁড়ি বেয়ে দেওয়ালের উপর উঠে অক্লান্ত ভাবে হাতুড়ি চালাতে। দেওয়াল ভাঙতে ভাঙতে একেবারে মাটিতে মিশে যাওয়ার পরই থেমেছে হাতুড়ি। একাধিক প্রত্নসামগ্রীকে নিশানায় রেখে এলোপাথাড়ি গুলিও চলেছে। জঙ্গিদের বার্তা, পৌত্তলিকতা মুছে ফেলতেই এই হামলা। রাজধানী মসুল থেকে ১১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এই শহরের অবস্থান। ১৯৮৭ সালে হাতরাকে ঐতিহাসিক শহরের তকমা দেয় ইউনেস্কো।
ভিডিওতে জঙ্গিদের যে উল্লাস নজরে এসেছে, প্রত্নতাত্ত্বিকদের আশঙ্কা— এই হামলার পরে প্রাচীন সভ্যতার কোনও নিদর্শনই আর হয়তো হাতরায় খুঁজে পাওয়া যাবে না। শহরটি যে হেতু দীর্ঘদিন ধরেই আইএসের দখলে, তাই এখনও পর্যন্ত জঙ্গি হানায় হাতরা ঠিক কতটা ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তা নিয়ে আজ স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেনি প্রশাসন।
স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, এই মুহূর্তে ইরাক ও সিরিয়ার এক তৃতীয়াংশ জঙ্গিদের কবলে। এক এক করে গ্রন্থাগার, জাদুঘর আর প্রত্ন নিদর্শনের উপর আঘাত হানছে জঙ্গিরা। ইরাকের সুপ্রাচীন ইতিহাস মুছে ফেলতেই সম্প্রতি সম্প্রতি একটি সরকারি গ্রন্থাগারের ১০ হাজারেরও বেশি বই পুড়িয়ে দেয় তারা। এর দিন কয়েকের মধ্যেই হামলা চলে মসুলের জাদুঘরের স্থাপত্য, মূর্তি ও প্রত্ন নিদর্শনের উপর। বুলডোজারের ধাক্কায় ধুলোয় মেশে নিমরুদের প্রায় তিন হাজার বছরের সুপ্রাচীন সভ্যতা। মানবাধিকার সংগঠনগুলি আশঙ্কা, এ বার জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে অ্যাসিরীয় সভ্যতার বাকি নিদর্শনগুলিতেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy