মর্গ্যান অট্রাগাস। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র।
ভারত-পাকিস্তান দু’দেশকেই নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি বজায় রাখতে বলল আমেরিকা। সেই সঙ্গে জানাল, জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের বিষয়টির উপর নজর রাখছে তারা। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র মর্গ্যান অট্রাগাস বলেন, “দু’দেশকেই বলেছি নিয়ন্ত্রণরেখায় যেন শান্তি বজায় রাখে তারা।”
৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল এবং জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসনিক বিভাজন নিয়ে সোমবারই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য— চিন, আমেরিকা, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছিল ভারত। তাদের কাছে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, বিষয়টি সংসদের বিবেচনাধীন এবং একেবারেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কোনও আন্তর্জাতিক আইন ভাঙা হয়নি। সুশাসন, সামাজিক ন্যায় এবং জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের আর্থিক উন্নয়নই এর মূল লক্ষ্য। ফলে সোমবার বিকেল পর্যন্ত কোনও দেশকেই এ ব্যাপারে মুখ খুলতে দেখা যায়নি।
যে মার্কিন প্রসিডেন্টের মুখে কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার কথা শোনা গিয়েছিল, সেই ডোনাল্ড ট্রাম্পও নীরব। যদিও সোমবার রাতের দিকে আমেরিকার বিদেশ দফতর থেকে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে তারা। জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অট্রাগাস। তিনি বলেন, “জম্মু-কাশ্মীরে আটকের ঘটনা ঘটছে, এমন রিপোর্টও আসছে। বিষয়টা নিয়ে উদ্বিগ্ন আমরা।” কোনও ভাবেই যাতে সেখানে ব্যক্তি অধিকার খর্ব না হয় সে দিকটাও নজর রাখতে বলা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন অট্রাগাস।
সোমবারই রাজ্যসভায় জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল এবং জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসনিক বিভাজনের সিদ্ধান্ত জানান তিনি। ভারত সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করে পাকিস্তান। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং মোদী সরকারের একতরফা সিদ্ধান্ত বলে বিবৃতি দেয় পাক বিদেশমন্ত্রক। পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দেয়, ভারতের এই পদক্ষেপকে ঠেকাতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থাও নেবে তারা।
আরও পড়ুন: শ্রীনগরে ঘাঁটি গেড়ে অজিত ডোভাল, উপত্যকা শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক, রিপোর্ট দিলেন কেন্দ্রকে
আরও পড়ুন: ‘বেআইনি’ বলে নিন্দায় পাকিস্তান, ৩৭০ নিয়ে বাকি সব দেশের মুখে কুলুপ
অন্য দিকে, রাষ্ট্রপুঞ্জও জম্মু-কাশ্মীরের গোটা বিষয়টির উপর নজর রাখছিল। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলকে ঘিরে যে উত্তেজনার আবহ তৈরি হয়েছে তা নিয়ে ভারত-পাকিস্তান দু’দেশকেই সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জ প্রধান আন্তোনিয়ো গুতেরেস। ব্রিটেন, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়ার মতো কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সতর্কবার্তা দিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, কাশ্মীর উপত্যকা ফের অশান্ত হয়ে উঠতে পারে।
কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার সংসদের যৌথ অধিবেশন ডেকেছিলেন পাক প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের পদক্ষেপ কী হবে এটাই ছিল এ দিনের আলোচনার মূল বিষয়। যৌথ অধিবেশন শুরুও হয়। পাক সংবাদ সংস্থা ডন সূত্রে খবর, অধিবেশন শুরু হতেই তা ভেস্তে যায়। অধিবেশনে আসেননি পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও। কেন প্রধানমন্ত্রী অধিবেশনে এলেন না তা নিয়ে হইচই শুরু করে দেন বিরোধীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy