জামাল খাশোগি।—ফাইল চিত্র।
আমেরিকায় প্রশিক্ষণ নিয়েছিল সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির খুনিরা, দাবি মার্কিন সংবাদপত্র দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের। এই পত্রিকাতেই কর্মরত ছিলেন খাশোগি। সৌদির যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের কট্টর সমালোচক বলেও পরিচিত ছিলেন তিনি। গত বছর অক্টোবরে ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে তাঁকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ।
প্রাক্তন সহকর্মীর হত্যার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে একাধিক মার্কিন ও সৌদি সূত্রের সাক্ষাত্কার নেন দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক ডেভিড ইগনেসিয়াস। সেখান থেকে উঠে আসা তথ্য নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন তিনি। তা থেকে জানা গিয়েছে, গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরবের মধ্যে সহযোগিতা রয়েছে। তারই সুযোগ নেয় খাশোগির খুনিদের মধ্যে কয়েকজন।আরকানসাসের টিয়ার-১ গ্রুপ সংস্থার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেয় তারা।
সৌদি গোয়েন্দা এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণে বিশেষ পরিষেবা দেয় মার্কিন সরকার, যার মধ্যে অন্যতম হল তাদের গুপ্তচরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। গোটা পরিষেবার তত্বাবধানে রয়েছে কালপেপার ন্যাশনাল সিকিওরিটি সলিউশনস সংস্থা। তাতে যুক্ত রয়েছেন মার্কিন গুপ্তচরবাহিনী সিআইএ-র কিছু প্রাক্তন আধিকারিকও। সৌদি গুপ্তচর সংস্থার ডেপুটি আহমেদ আল-আসিরিকেও এই প্রকল্পে যুক্ত করা হয়েছিল, খাশোগি হত্যা মামলায় এই মুহূর্তে সৌদি আরবে শুনানি চলছে যাঁর।
আরও পড়ুন: খাশোগি খুনের খবর রুখতে অ্যামাজন কর্তার ফোন হ্যাক করিয়েছিল সৌদি সরকার!
সিআইএ-র তরফে এ বিষয়ে বিভিন্ন মার্কিন সংস্থাকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন ডেভিড ইগনেসিয়াস। তাঁর কথায়, মার্কিন বিদেশ দফতরের লাইসেন্স বাগিয়ে টিয়ার-১ গ্রুপ বিশেষ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলে সতর্ক করেছিল সিআইএ। তখনও খাশোগি হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। তাই তাতে বিশেষ আমল দেওয়া হয়নি। তবে জামাল খাশোগির হত্যার পর থেকে সৌদি সরকারের জন্য চালু ওই বিশেষ পরিষেবা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতাও বন্ধ রাখা হয়েছে আপাতত। যে টিয়ার-১ সংস্থা থেকে খাশোগির খুনিরা প্রশিক্ষণ নিয়েছিল, সেটি নিউইয়র্কের বেসরকারি বিনিয়োগ সংস্থা সারবারুশ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের মালিকানাধীন। খাশোগির খুনিদের টিয়ার-১ গ্রুপ প্রশিক্ষণ দিয়েছিল কিনা, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি তারা।
খাশোগি-হত্যার শেষ মুহূর্তের একটি অডিয়ো টেপ ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। তাতে মৃত্যুর আগে খাশোগির আর্তনাদ থেকে, তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কাটার আওয়াজ সবই ধরা পড়েছে। তবে শুরুতে খাশোগিকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল না বলে জানিয়েছেন ডেভিড ইগনেসিয়াস। তাঁর দাবি, সৌদি আরবে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে তাঁকে জেলবন্দি করাই লক্ষ্য ছিল প্রথমে। সেই মতো প্রথমে স্নায়ু অবশ করার ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় তাঁকে। শ্বাসরোধ করে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করা হয় পরে।
আরও পড়ুন: খাশোগিকে ‘বুলেট’!
জামাল খাশোগির হত্যায় শুরু থেকেই সৌদির যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের নাম উঠছে। তিনিই লোক পাঠিয়ে কট্টর সমালোচক খাশোগিকে খুন করিয়েছেন বলে অভিযোগ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে সৌদি প্রশাসন। বরং তাদের নিয়ন্ত্রণে না থাকা গুপ্তচররাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে পাল্টা দাবি করেছে। সেই মতো ১১ জন সন্দেহভাজনের শুনানি চলছে সৌদি আদালতে।
(আমেরিকা থেকে চিন, ব্রিকস থেকে সার্ক- সব গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy