সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের ভূমিকায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গোড়া থেকেই খাপ্পা। গত সপ্তাহে পাকিস্তান সফরে গিয়ে এ নিয়ে দু’-চার কথা শুনিয়ে এসেছেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো। এ বার মুখ খুললেন ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন। জানালেন, সন্ত্রাস দমনে ইসলামাবাদের তরফে সম্পূর্ণ সাহায্য চাইছে আমেরিকা। আর এ যে নেহাত কথার কথা নয়, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়ে বল্টন বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইটা আমেরিকার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চাইব পাকিস্তানও আমাদের পাশে দাঁড়াক।’’
নওয়াজ় শরিফের পাকিস্তানকে ‘প্রতারক’ বলে বছরের শুরুটা করেছিলেন ট্রাম্প। শরিফের জায়গায় মাসখানেক হল ক্ষমতায় এসেছেন ইমরান খান। কিন্তু পরিস্থিতি তাতে বদলায়নি বলেই অভিযোগ আমেরিকার। সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তান কিছুই করছে না— এই অভিযোগে চলতি মাসের গোড়াতেই তাদের বরাদ্দ ৩০ কোটি ডলার সামরিক অনুদান বন্ধের সুপারিশ করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। পম্পেয়ো তার পর-পরই পাকিস্তান সফরে যান। জঙ্গি দমনে ইমরান সরকারকে আরও সক্রিয় হওয়ার ডাক দেন তিনি। আমেরিকা যে কিছুতেই পাকিস্তানকে ‘জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য’ হিসেবে মেনে নেবে না, তা-ও স্পষ্ট করে দেন।
ধারাবাহিক এই চাপের মুখে এখন পাকিস্তান কী করে, সে দিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব। ইমরান যদিও দিন চারেক আগেই রাওয়ালপিন্ডিতে পাক সেনার এক অনুষ্ঠানে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর দেশ ভবিষ্যতে আর কারও হয়ে যুদ্ধে জড়াবে না। আর এ ক্ষেত্রে পাক প্রধানমন্ত্রী কারও নাম না করলেও, তাঁর নিশানায় যে আমেরিকা, সেটা স্পষ্টই বোঝা গিয়েছিল। কারণ, আফগানিস্তানে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তান তাদের সঙ্গ দিচ্ছে না বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে ওয়াশিংটন। আর পাকিস্তানও তা বারবার অস্বীকার করে এসেছে। তাই এমন একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আমেরিকার এই ধারাবাহিক চাপ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহলের একটা বড় অংশ। বিশেষত আমেরিকা যখন ঋণের ভারে ঝুঁকে থাকা পাকিস্তানকে বরাদ্দ বাতিলের হুমকিও দিয়েছে।
ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বল্টন আরও একটা ব্যাপারে সাবধান করে দিতে চেয়েছেন পাকিস্তানকে। তাঁর কথায়, ‘‘পাকিস্তান পরমাণু শক্তিধর দেশ। তাই জঙ্গি দমনে সক্রিয় পদক্ষেপ না-সেই অস্ত্র বেহাত হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে পাকিস্তানেরই। গোটা উপমহাদেশটাকেই জঙ্গিরা হুমকির মুখে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। আশা করব, পাকিস্তানের নয়া সরকার বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই দেখবে। ইসলামাবাদকে নিজের দায়বদ্ধতা পালন করতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy