‘চুপেট’— প্রয়াত ফ্যাশন ডিজ়াইনার কার্ল লাগারফেল্ডের আদরের পোষ্য এই বার্মিজ় বেড়াল। ছবি: এএফপি।
ধবধবে সাদা গায়ের রঙ। টানা-টানা নীল চোখ। ওই সাদামাটা চাহনি দেখে কে বলবে, বিপুল সম্পত্তির মালকিন সে।
‘চুপেট’— প্রয়াত ফ্যাশন ডিজ়াইনার কার্ল লাগারফেল্ডের আদরের পোষ্য এই বার্মিজ় বেড়াল। ২০১১ সালে মডেল বন্ধু ব্যাপটিস্ট গিয়াবিকোনির বাড়ি থেকে চুপেটকে তুলে নিয়ে এসেছিলেন লাগারফেল্ড। আট বছরের সেই পুষ্যিই লাগারফেল্ডের ২০ কোটি ডলারের বিপুল সম্পত্তির একটি অংশ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে।
মঙ্গলবার মারা গিয়েছেন লাগারফেল্ড। বয়স হয়েছিল ৮৫। ফরাসি ফ্যাশন সংস্থা শ্যানেলের আর্টিস্টিক ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। মৃত্যুর বহু আগেই তিনি দলিল করে রেখেছিলেন। যাতে তাঁর অবর্তমানে কষ্ট পেতে না হয় চুপেটকে। রাজকীয় জীবনযাপনে অভ্যস্ত সে। রুপোর থালায় খাওয়া, আইপ্যাডে খেলা, নরম বিছানায় ঘুম, জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই আদরযত্নে ‘মানুষ’! একটি ফরাসি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লাগারফেল্ড বলেছিলেন, ‘‘চুপেট কিন্তু বড়লোকের মেয়ে। ওর অগাধ সম্পত্তি আছে। আমার কিছু হয়ে গেলে ওর কোনও অভাব হবে না।’’ সত্যিই তাই। আনুমানিক ৪০ লক্ষ ডলার তার নামে রেখে গিয়েছেন লাগারফেল্ড। সেই সঙ্গে প্রাসাদোপম বাড়ি ও প্রচুর পরিচারিকাও।
চুপেটকে নিয়ে বই আছে— ‘চুপেট: দ্য প্রাইভেট লাইফ অব এ হাই-ফ্লাইং ফ্যাশন ক্যাট’। বইজুড়ে তার নানা কায়দার ছবি। কখনও সুপারমডেল লিন্ডা ইভ্যাঞ্জেলিস্টার কোলে তো কখনও মডেল-অভিনেত্রী লেশিশিয়া কাস্তার গায়ে এলিয়ে সে। বইয়ে রয়েছে চুপেটের পছন্দের খাবারের রন্ধন-প্রণালী। সে সব খাবার বাড়িতে বানানো নয়। প্যারিসের সেরা রেস্তরাঁ থেকে আসে চুপেটের জন্য। এর মধ্যে রয়েছে ‘কিং ক্র্যাব’, ‘স্মোকড স্যামন’ এবং ক্যাভিয়ের’। নিজের টেবিল-চেয়ারে বসে রসিয়ে খায় সে।
লাগারফিল্ড বলেছিলেন, ‘‘ওকে বেড়াল ভাববেন না, ও মানুষই। শুধু একটা বিশেষ গুণ আছে, চুপচাপ।’’ বেশ কিছু বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিল চুপেট। কিন্তু সে সব ফিরিয়ে দেওয়া হয়। জবাবে লাগারফিল্ড বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলোকে বলেছিলেন, ‘‘ও অভিজাত বাড়ির মেয়ে। বিজ্ঞাপন করবে কেন!’’
লাগারফিল্ড বলতেন, ‘‘ও আমার পরিবার। আমার পৃথিবী।’’ ফরাসি আইন অনুযায়ী, কোনও পোষ্যের জন্য সম্পত্তি উইল করা যায় না। প্রবীণ ডিজ়াইনারকে সে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেছিলেন, ‘‘তাতে অসুবিধে নেই। আমি তো ফরাসি নই।’’ ইঙ্গিতে ভালই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, চুপেটের নামে ট্রাস্ট করে যথেষ্ট অর্থ রেখে যাবেন। যাতে তাঁর আদরের ‘মেয়েকে’ কখনও অভাব-অনটনে পড়তে না হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy