Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
International News

তিব্বতে বিশাল ধসে আটকে গেল ব্রহ্মপুত্র, ভারতকে সতর্ক করল চিন

আচমকা হড়পা বানে ভেসে যেতে পারে অরুণাচল প্রদেশের একটি বিস্তীর্ণ এলাকা। চিনের সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের কাছ থেকে এই ধসের খবর পাওয়ার পরই সতর্কতা জারি করল অরুণাচল প্রদেশের পূর্ব সিয়াং জেলা প্রশাসন।

ধস নেমে এরকমই হ্রদ তৈরি হয়েছে।

ধস নেমে এরকমই হ্রদ তৈরি হয়েছে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৮ ১৮:৫৬
Share: Save:

তিব্বতে নদী পথ জুড়ে বিশাল পাহাড়ি ধস। আর তার জেরেই আচমকা হড়পা বানে ভেসে যেতে পারে অরুণাচল প্রদেশের একটি বিস্তীর্ণ এলাকা। চিনের সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের কাছ থেকে এই ধসের খবর পাওয়ার পরই সতর্কতা জারি করল অরুণাচল প্রদেশের পূর্ব সিয়াং জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, অরুণাচল প্রদেশের আপার সিয়াং এবং পূর্ব সিয়াং জেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত সিয়াং নদীর জলস্তর গত কয়েক দিনে দু’মিটারেরও বেশি কমে গিয়েছে। আপার সিয়াং-এর জেলাশাসক ডুলি কামডুক বলেন, ‘‘টুটিং-এর কাছে জলস্তর ২ মিটারের বেশি নেমে যায়। তখনই আমরা সন্দেহ করেছিলাম, নদীর উজান পথে কোথাও বাধার সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার চিনের সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের কাছ থেকে রিপোর্ট এসেছে, ধসে নদীর গতিপথ আটকে গিয়েছে।’’

চিনের পাঠানো ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, তিব্বতে ইয়ারলুং সাংপো নদীর গতিপথ বিশাল পাহাড়ি ধসে আটকে গিয়েছে। তার ফলে আচমকা তৈরি হয়ে গিয়েছে বিশাল এক হ্রদ। প্রায় ১৩০ ফুট উঁচু হয়ে জল জমে রয়েছে সেখানে। প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে জলস্তর। যে কোনও সময় সেই বাঁধ ভেঙে ভাসিয়ে দিতে পারে অরুণাচল প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা!

তিব্বতের এই ইয়ারলুং সাংপোই অরুণাচল প্রদেশে সিয়াং নামে প্রবাহিত। সিয়াং আরও নীচে নেমে এসে অসমে নাম নিয়েছে ব্রহ্মপুত্র। অরুণাচল প্রদেশের বিধায়ক নিনং এরিং বলেন, ‘‘নদীর দু’পারে গ্রামগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে, তাঁরা যেন নদীর কাছে না আসেন। টুটিং, ইঙকিয়ং এবং পাসিঘাটের মতো শহরগুলিকেও সতর্ক করা হয়েছে। বন্যার আশঙ্কার পাশাপাশি পরিস্থিতি সঙ্গীন হয়েছে নদী দ্রুত শুকিয়ে যাওয়ায়।’’

আরও পড়ুন: #মিটু অভিযুক্তের আত্মহত্যার চেষ্টা, শেষ মুহূর্তে বাঁচিয়ে দিল পুলিশ

ঘটনার সূত্রপাত বুধবার সকালে। ভারত-চিন সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে লিংজি বলে একটি জায়গায় ইয়ারলুং সাংপোর গতিপথে হঠাৎ করেই ধস নামে। পাহাড়ি উপত্যকার মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর মাঝখানে ধসে পড়ে পাহাড়ের একাংশ। সেই ধসে নদীর গতিপথে কার্যত একটা বাঁধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। ফলে নদীর জল পুরোপুরি আটকে নীচের দিকে নামা বন্ধ হয়ে যায়। গতিপথের পিছন দিকটা সুবিশাল হ্রদের আকার নিয়ে নেয়। আর হ্রদের নীচের দিকে অর্থাৎ যেখানে ধস নেমেছে তার পরবর্তী অংশে শুকিয়ে গিয়েছে নদী।

আরও পড়ুন: আটকে রেখে ১০ দিন ধরে গণধর্ষণ, কোণার্কে উদ্ধার কলকাতার তরুণী

চিনের এমার্জেন্সি সার্ভিসেস জানিয়েছে, উপর থেকে জল নামছে। অথচ সেই জল নদীপথ ধরে নীচে নামতে পারছে না। ফলে ক্রমেই বাড়ছে ওই হ্রদের জলস্তর। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই লেকের জলস্তর দাঁড়িয়েছে ৪০ মিটার বা ১৩০ ফুটেরও বেশি।

কিন্তু ধসের ওই আলগা দেওয়াল যে কোনও সময় ভেঙে যেতে পারে। সেই সময় বিশাল জলরাশি ধেয়ে আসবে নীচের দিকে। সেই বিপদের আশঙ্কাতেই ইয়ারলুং ছাংপো নদীর দুই তীর এবং আশপাশের প্রায় ৬ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে তিব্বতের স্থানীয় প্রশাসন। নদী সংলগ্ন এলাকায় যাতায়াতের উপর জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

হড়পা বানের সঙ্গে ভূমিকম্পের আশঙ্কাও বাড়ছে। কারণ, এ বছরের গোড়ার দিকে একই ভাবে নদীপথ ধসে আটকে যাওয়ার পর তিব্বতে একের পর এক ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছিল।

(আমেরিকা থেকে চিন, ব্রিকস থেকে সার্ক- সব গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE