লেনিন মোরেনো।—ফাইল চিত্র।
ইকুয়েডরে রীতিমতো চমক দিয়ে ক্ষমতায় এলেন বামপন্থীরা। প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনোই সে দেশের নতুন প্রেসিডেন্ট। ফলে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।
গত কয়েক বছর ধরে ইকুয়েডরেই আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন উইকিলিকস-এর প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জ। ভোটের ফলাফলের উপরে তাঁর ভাগ্য অনেকখানি নির্ভর করছিল। কারণ এ বারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সমীক্ষাগুলি এগিয়ে রেখেছিল মোরেনোর প্রতিদ্বন্দ্বী, কনজারভেটিভ নেতাগুইলেরমো লাসো-কে। আর লাসো হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন, ক্ষমতায় এলে তিরিশ দিনের মধ্যে সুইডেনে প্রত্যর্পণ করানো হবে অ্যাসাঞ্জকে। সেখানেই তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা ঝুলছে।
২০০৭ থেকে ইকুয়েডরে প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট রাফায়েল কোরিয়া। মোরেনো তাঁরই উত্তরসূরি। রাফায়েলই অ্যাসাঞ্জকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তাঁর প্রতি নরম মনোভাব রয়েছে মোরেনো-রও। তাই তিনি ক্ষমতায় আসায় এখন বেশ কয়েক বছরের জন্য অ্যাসাঞ্জ স্বস্তিতে থাকবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরে অ্যাসাঞ্জকে কিছুটা সতর্ক করেছেন মোরেনো। বুঝিয়ে দিয়েছেন, আশ্রিতকে আশ্রিতর মতোই থাকতে হবে। কারণ ভোটের ফল প্রকাশের পরে লাসোকে বিঁধে টুইট করেছিলেন অ্যাসাঞ্জ। তার জবাবেই সাংবাদিক বৈঠকে নতুন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে না ঢুকলেই ভাল করবেন অ্যাসাঞ্জ।’’
১৯ ফেব্রুয়ারি হয়েছিল ভোট। গত সোমবার থেকে গণনা শুরু হয়। দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইটা অবশ্য হাড্ডাহাড্ডিই হয়েছে। ৬১ বছরের লাসো আটচল্লিশ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছেন। মোরেনো পেয়েছেন ৫১.১৬ শতাংশ ভোট। ফলটা মোটামুটি পরিষ্কার হতে থাকে রবিবার থেকেই। মঙ্গলবার রাতে ৯৯ শতাংশ ভোট গণনা হয়ে যাওয়ার পরে ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল কাউন্সিলের তরফে পাবলো পোজো ঘোষণ করে দেন, মোরেনোই হতে চলেছেন দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। তবে এই ফলে সন্তুষ্ট নন লাসো। তাঁর দাবি, বিস্তর কারচুপি করে এই ভোট জিতেছেন মোরেনো। ফলাফল চ্যালেঞ্জ করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে পাবলো জানিয়েছেন, ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সময় রয়েছে লাসোর হাতে। পুনর্গণনার জন্য তার মধ্যেই আবেদন করতে হবে। জেতার পরে বছর চৌষট্টির মোরেনো টুইট করেন, ‘‘ইকুয়েডরের সব নাগরিককে ধন্যবাদ। যাঁরা আমাদের ভোট দেননি, তাঁদেরও। দেশের গণতন্ত্র আরও পোক্ত হলো।’’
২০০৭ থেকে ’১৩ সাল পর্যন্ত লাতিন আমেরিকার এই তেল সমৃদ্ধ দেশের ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ সামলেছেন মোরেনো। ২০১২ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল তাঁর নাম। কিন্তু পুরস্কার জোটেনি সদা হুইলচেয়ারে বন্দি এই নেতার। রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিবন্ধী বিষয়ক বিশেষ দূত ছিলেন এক সময়। মে মাসে আনুষ্ঠানিক ভাবে দেশের সর্বোচ্চ পদে বসতে চলেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy