Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জেলেই লায়লার অনশন বিক্ষোভ

সিরিয়ায় কুর্দিশ জনজাতি অধ্যুষিত আফরিন শহরে তুরস্কের সেনা অভিযানের বিরুদ্ধে মুখ খুলে গত বছর জানুয়ারিতে গ্রেফতার হন লায়লা।

সে দিন: জেলে যাওয়ার আগে মেয়ের সঙ্গে কুর্দ নেত্রী লায়লা গুভেন।

সে দিন: জেলে যাওয়ার আগে মেয়ের সঙ্গে কুর্দ নেত্রী লায়লা গুভেন।

সংবাদ সংস্থা
ইস্তানবুল শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:১২
Share: Save:

সপ্তাহ দুয়েক আগে তবু হাঁটতে পারতেন। আজ সেই ক্ষমতাটুকুও হারিয়েছেন তিনি। তাতে অবশ্য দাবি থেকে এক চুলও নড়েননি তুরস্কের রাজনৈতিক বন্দি লায়লা গুভেন। অনশন বিক্ষোভের ৯০ দিন কাটিয়ে এখনও সংকল্পে অটুট ৫৫ বছরের এই নেত্রী।

সিরিয়ায় কুর্দিশ জনজাতি অধ্যুষিত আফরিন শহরে তুরস্কের সেনা অভিযানের বিরুদ্ধে মুখ খুলে গত বছর জানুয়ারিতে গ্রেফতার হন লায়লা। উস্কানিমূলক আচরণ, জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এই নেত্রীকে একশো বছরেরও বেশি কারাদণ্ড দিয়েছে সে দেশের আদালত। লায়লা ডেমোক্র্যাটিক সোসাইটি কংগ্রেসেরও অন্যতম নেত্রী। যে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তুরস্ক সরকার বারবার কুর্দিশ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। জঙ্গি নেতা আবদুল্লা ওকালানকে জেলের মধ্যে বিচ্ছিন্ন রাখার প্রতিবাদে গত নভেম্বরে অনশন শুরু করেন লায়লা।

১৯৯৯ থেকে জেলবন্দি জঙ্গিনেতা ওকালান। ২০১৬-র পর থেকে তাঁর সঙ্গে বাইরের কারও দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি দেখা করতে পারেননি পরিবার বা আইনজীবীরাও। তাঁর বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছিল তুরস্ক সরকারও। ওকালানের অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন লায়লা এর পরেই অনশনে নামার সিদ্ধান্ত নেন। লায়লার সেই আন্দোলন এখন গতি পাচ্ছে। তুরস্কের বিভিন্ন জেলে লায়লার সমর্থনে অন্তত ২৫০ রাজনৈতিক বন্দি অনশন শুরু করেছেন। বিভিন্ন শহরে তাঁর সমর্থনে পথে নেমেছে মানুষ। গত রবিবার ব্যাপক পুলিশি পাহারার মধ্যেও ইস্তানবুলের রাস্তায় নামেন কয়েক হাজার মানুষ। একটি সূত্রে খবর, সম্প্রতি ওকালানের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি পেয়েছেন তাঁর ভাই।

তুরস্ক, সিরিয়া, ইরাক, ইরান, আর্মেনিয়ার একাংশ জুড়ে কুর্দ জনজাতির বাস। তুরস্কে নিজেদের স্বাধীন ভূ-খণ্ডের দাবিতে গত তিন দশক ধরেই আন্দোলন চালাচ্ছে তারা। আবদুল্লা ওকালানও এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে জেলে গিয়েছিলেন।

লায়লার লড়াই শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে। আগেও জেলে গিয়েছেন। কিন্তু এ বারের অনশনে তাঁর শরীর ক্রমশ ভাঙছে। সম্প্রতি লায়লার সঙ্গে একটি সাদা-কালো ছবি পোস্ট করে মেয়ে সাবিহা তেমজিকান লেখে, ‘‘ছেড়ে যেয়ো না মা।’’ সাবিহা জানান, ৮ নভেম্বর থেকে নুন-চিনির জল ছাড়া কিছুই মুখে তোলেননি মা। গা-বমি, মাথা ব্যথা, জ্বর, রক্তচাপ ওঠানামা— নানা সমস্যায় ভুগছেন। এই ক’দিনে ১০ কেজি ওজন কমেছে। দুর্বল শরীর। তবু জোর করে তাঁকে কিছু খাওয়াতে পারেননি জেল কর্তৃপক্ষ। সাবিহা বললেন, ‘‘খারাপ লাগছে। কিন্তু শান্তির দাবিতে মায়ের এই লড়াই। কুর্দদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। চাইলেও বাধা দিতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE