Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
ভারতে ভোট মরসুম শুরু, কী ভাবছেন প্রবাসীরা?

ভোটারদের জন্য বিনি পয়সার ভোজ সিঙ্গাপুরে

লোক সংখ্যা, ভোটার সংখ্যা, সাংসদ সংখ্যা থেকে শুরু করে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র, এমনকি দলের সংখ্যা— সবই এখানে কম। এ দেশে মোট রাজনৈতিক দল ত্রিশটার মতো, তাদের মধ্যে তিনটি-চারটি দলের মধ্যেই মূলত লড়াই হয়।

তারক দাস
সিঙ্গাপুর শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯ ০১:১৭
Share: Save:

ভারতে ভোটপুজো এসে গিয়েছে। আমরা প্রবাসীরা অফিসে কাজের ফাঁকে বা বাড়ির আড্ডায় আবার জমাটি ভোট-গল্পে মেতে উঠেছি— কে আসতে পারে, কে-ই বা যেতে পারে? হাত-হাতি-ফুল-ফল সব দলের সমর্থকই ঠিক জুটে যাচ্ছে

এই সব আড্ডায়।

লোক সংখ্যা, ভোটার সংখ্যা, সাংসদ সংখ্যা থেকে শুরু করে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র, এমনকি দলের সংখ্যা— সবই এখানে কম। এ দেশে মোট রাজনৈতিক দল ত্রিশটার মতো, তাদের মধ্যে তিনটি-চারটি দলের মধ্যেই মূলত লড়াই হয়। ২০১১ এবং ২০১৫-১৬, দু’টি নির্বাচনের সময়েই এখানে ছিলাম। প্রথম বার তো বুঝতেই পারছিলাম না, ২৪-২৫ লক্ষ ভোটার কী ভাবে এত নিঃশব্দে ভোট দিলেন! ভোটের আগে কোনও দেওয়াল লিখন চোখে পড়েনি, কোনও রাজনৈতিক ছড়া দেখিনি, খবরের কাগজ বা টিভিতে কোনও প্রার্থী প্রচারও করেননি। দু’-একটা সুসজ্জিত ব্যান্যার চোখে পড়েছে বটে, তবে সেগুলো কখনওই দৃশ্য-দূষণের কারণ হয়ে ওঠেনি। এখানকার প্রার্থীরা মূলত সোশ্যাল মিডিয়াকেই তাঁদের প্রচারের প্রধান মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন। তা ছাড়া, তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে দেখা করেন এবং বোঝানোর চেষ্টা করেন, কেন তাঁকেই ভোট দেওয়া উচিত। মাঝেমধ্যে কোনও প্রার্থী পাড়ার ফুড কোর্টে আমন্ত্রণ জানান ভোটারদের। বিনিপয়সায় ভোজের সঙ্গেই চলে প্রার্থীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা।

এখানে এখনও ইভিএম ব্যবহার হয় না, ব্যালটেই ভোট হয়। ভোট দিতে আসেন ৯৪-৯৫ শতাংশ ভোটার, যেটা ভারতে ভাবাই যায় না। ভুতুড়ে ভোটার নেই। ছাপ্পা ভোট নেই। দফায় দফায় ভোটের কোনও প্রশ্ন নেই, একই দিনে ভোট হয়। সাধারণত, সপ্তাহান্তেই ভোট করা হয়, যাতে একটা কাজের দিনও নষ্ট না হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, ভারতের নির্বাচন নিয়ে তাঁদের কোনও ঔৎসুক্য নেই। তবে কয়েক জন শুনে বেশ অবাক হলেন যে, ভারতে সাত দফায় নির্বাচন হবে। কেন এক মাস ধরে ভোট হবে, সেটা স্থানীয় সিঙ্গাপুরবাসীদের বোঝানো অসম্ভব।

সিঙ্গাপুরের যে সব নাগরিক কাজের জন্য বিদেশে আছেন, তাঁরা যাতে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য বিদেশের মাটিতে সিঙ্গাপুর দূতাবাসে ভোটের ব্যবস্থা করা হয়। আমাদের মতো যে সব ভারতীয় বিদেশে থাকে, এবং যারা ভোট দিতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য এ রকম আয়োজন করা যায় না? নিদেনপক্ষে যদি পোস্টাল বা অনলাইন ভোটের ব্যবস্থা করা যায়, তা হলে পাসপোর্ট বা আধার কার্ড নম্বর দিয়ে আমরাও তো ভোট দিতে পারি!

লেখক সিঙ্গাপুরে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE