তালিবানের গুলি তাঁর মাথা এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছিল। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ফিরে এসেছিলেন পাকিস্তানের নারী-শিক্ষার মুখ মালালা ইউসুফজাই। এ বার ফেসবুক বার্তায় নিজের দেশের বিরুদ্ধেই তীব্র হতাশা উগরে দিলেন শান্তির নোবেলজয়ী তরুণী। ধর্মবিরোধী ফেসবুক পোস্ট করার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের এক বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পিটিয়ে মারা হয় সাংবাদিকতার ছাত্র মশাল খানকে। সেই ঘটনায় ক্ষুব্ধ মালালার বক্তব্য, গোটা বিশ্বের সামনে পাকিস্তানের নাম কলঙ্কিত করছেন পাকিস্তানিরাই।
আব্দুল ওয়ালি খান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন বছর তেইশের মশাল। গত পরশু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই মশাল ও তাঁর বন্ধু আবদুল্লার উপরে চড়াও হয় তাঁদেরই কিছু সহপাঠী।
অভিযোগ, জনা পঁচিশ পুলিশের সামনেই চলে বেধড়ক মারধর। মশালের দেহ নিথর হয়ে যাওয়ার পরেও তাঁকে গুলি করা হয়। তার পর দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয় উঁচু একটি পোস্টে। মশালের ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, হামলাকারীরা বুঝিয়ে দিয়েছিল, কেউ ধর্মের বিরুদ্ধে গলা তুললে কী হাল করা হবে।
এই ঘটনার প্রতিবাদেই ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেছেন মালালা। তালিবানের একের পর এক হুমকির পর পরিবার নিয়ে তিনি দেশছাড়া বহুদিন। ভিডিও বার্তাটিতে মালালা বলেছেন, ‘‘লোকে বলে পশ্চিমী দেশে ‘ইসলামোফোবিয়া’ রয়েছে। ওরা নাকি আমাদের দেশ ও ধর্মকে কলঙ্কিত করছে। কিন্তু অন্য কেউ ও সব করছে না। আমরা নিজেরাই করছি। নিজেদের দেশ ও ধর্মের নাম খারাপ করার পক্ষে আমরাই যথেষ্ট।’’
নিহত মশালের বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন মালালা। বলেছেন, যে শান্তি আর সহনশীলতার বার্তা মশাল এত দিন দিতে চেয়েছেন, তা থেকে যেন সরে না আসে তাঁর পরিবার। মালালার মতে, সব পাকিস্তানির এখন উচিত, মন দিয়ে ইসলামের পাঠ নেওয়া। কারণ এই ধর্ম শান্তি আর সহনশীলতার কথা বলে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সদ্য-নিযুক্ত শান্তিদূত মালালা আরও বলেন, ‘‘আমরা আমাদের ধর্ম ভুলে গিয়েছি। মূল্যবোধ আর সহনশীলতা কাকে বলে ভুলে গিয়েছি। শান্তিতে আর নিরাপদে বাঁচার অধিকার সব পাকিস্তানির আছে। আর আমরা শুধু লোককে খুন করছি। দেশে কেউ সুরক্ষিত নন।’’ মশালের পরিবার যাতে সুবিচার পায়, দেশের আইনসভার সদস্য এবং রাজনৈতিক দলগুলির কাছে সেই আর্জি রেখেছেন মালালা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy