Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্যালিফর্নিয়ায় বার-এ হামলা, বন্দুকবাজ-সহ নিহত ১৩

দক্ষিণ ক্যালিফর্নিয়ার শহর থাউজ্যান্ড ওকস-এর জনপ্রিয় এই বার-এ নাচ-গান-গল্পের ছবিটা বুধবার রাতে বদলে যায় দুঃস্বপ্নে।

আতঙ্কিত: দক্ষিণ ক্যালিফর্নিয়ার ‘বর্ডারলাইন বার অ্যান্ড গ্রিল’-এ গুলি হামলার পরে। ছবি: এপি।

আতঙ্কিত: দক্ষিণ ক্যালিফর্নিয়ার ‘বর্ডারলাইন বার অ্যান্ড গ্রিল’-এ গুলি হামলার পরে। ছবি: এপি।

সংবাদ সংস্থা
সান ফ্রান্সিসকো শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৫১
Share: Save:

আলো-আঁধারি আবহ। ‘বর্ডারলাইন বার অ্যান্ড গ্রিল’-এর ডান্স ফ্লোরে কেউ তখন নাচছে। কেউ গল্প করছে। নাচতে নাচতেই হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়ল কয়েক জন। মিউজিকের মধ্যে গুলির আওয়াজে সম্বিৎ ফেরে বাকিদের।

দক্ষিণ ক্যালিফর্নিয়ার শহর থাউজ্যান্ড ওকস-এর জনপ্রিয় এই বার-এ নাচ-গান-গল্পের ছবিটা বুধবার রাতে বদলে যায় দুঃস্বপ্নে। কলেজপড়ুয়াদের ভিড় ঠাসা বার-এ বন্দুকবাজের এলোপাথাড়ি গুলি কেড়ে নেয় অন্তত ১২টি প্রাণ। পরে অবশ্য মারা যায় সেই বন্দুকবাজও। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৩।

প্রাক্তন মেরিন ওই আততায়ীর নাম ইয়ান ডেভিড লং। বয়স ২৮ বছর। বার-এর ভিতরে পড়েছিল তারও দেহ। ভেঞ্চুরার কান্ট্রি শেরিফ জিওফ ডিন জানান, ঘটনায় সন্ত্রাসের সম্ভাবনা এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী হোল্ডেন হারা বলেছেন, ‘‘দুম করে দাড়িওয়ালা এক ব্যক্তি এগিয়ে এল। পরনে ছিল কালো ট্রেঞ্চকোট। হাতে অস্ত্র। সেকেন্ডের মধ্যে গুলি চালানো শুরু করে দেয় সে।’’ বাসিন্দাদের দাবি, এই এলাকাটি মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ। এই ঘটনায় তাই স্তম্ভিত অনেকেই।

দু’সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে ফের বন্দুকবাজের কবলে আমেরিকা। লস অ্যাঞ্জেলেসের শহরতলি এলাকার এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন রন হেলাস নামে এক পুলিশ অফিসার। শেরিফ জিওফ ডিনের দাবি, আততায়ী প্রথমে বেশ কয়েকটি স্মোক গ্রেনেড ছোড়ে বার-এর ভিতরে। তার পরে স্থানীয় সময় রাত ১১টা ২০ নাগাদ সে গুলি চালাতে শুরু করে। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে ডিন বলেছেন, ‘‘ভয়াবহ দৃশ্য। রক্তে ভাসছে গোটা বার।’’

ক্যালিফর্নিয়া লুথেরান ইউনিভার্সিটি-র অদূরেই এই বার। বুধবার রাতে সেখানে কলেজ পড়ুয়াদের ‘কান্ট্রি নাইট’ উপলক্ষে ভিড় জমে ভালই। বছর কুড়ির কলেজপড়ুয়া ম্যাট ওয়েনারস্ট্রন প্রায়শই যান ওই বার-এ। তিনি জানিয়েছেন, যে পিস্তল থেকে গুলি চালানো হয়েছে, তাতে ১০-১৫ রাউন্ড ম্যাগাজিন ছিল। ম্যাটের কথায়, ‘‘সেমি অটোম্যাটিক ওই অস্ত্র থেকে লোকটা যত বার পেরেছে, যেখানে পেরেছে গুলি চালিয়ে গিয়েছে। বাদ যায়নি স্পিকারও। যখন সে পিস্তলে ফের গুলি ভরছিল, সেই সময়টুকুর মধ্যে আমরা কোনওমতে বেরিয়ে যাই। আর ফিরে দেখিনি।’’ বার-এর স্টুলে উঠে সোজা জানলা দিয়ে ঝাঁপ মেরে আত্মরক্ষা করেন অনেকেই। কেউ আবার শৌচাগারে ঢুকে বাঁচার চেষ্টা করেছেন। আর এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, আততায়ী অন্তত ৩০ বার গুলি চালিয়েছে। পুলিশ আসার পরেও গুলির শব্দ শোনা গিয়েছে।

পুলিশে ২৯ বছর কাজ করেছেন নিহত অফিসার রন হেলাস। এ ভাবে তাঁর মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না সহকর্মীরা। শীর্ষ স্তরের অফিসাররা বলছেন, ৫৪ বছর বয়সি রন বার-এ ঢুকেই গুলিতে প্রাণ হারান। উনি হিরো। ওঁর মতো অফিসার হয় না। গুলির শব্দ শুনে এগিয়ে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন। ওই টুকু সময়ের মধ্যেই বাঁচিয়ে দিয়েছেন বেশ কয়েক জনকে। তাঁর খবর শুনে প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। মাত্র দশ দিন আগে পিটসবার্গের সিনাগগে বন্দুকবাজের হামলায় নিহত হন ১১ জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE