Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মুখে প্রশস্তি, হাত মেলালেন মোদী-চিনফিং

শুক্রবার জার্মানির হামবুর্গে জি-২০ বৈঠকের পাশে ব্রিকসের দেশগুলিকে নিয়ে মোদী ও শি সংক্ষিপ্ত বৈঠকও করেন। পরস্পরের প্রশংসা করে বিবৃতিও দেন তাঁরা। ডোকা লা থেকে সেনা সরানোর জন্য ভারতকে যে ভাবে লাগাতার হুমকি দিয়ে আসছে ড্রাগন, সেই পরিস্থিতিতে আজকের সৌজন্যের এই ছবি বিশেষ তাৎপর্যের।

সহাস্য: হামবুর্গে নরেন্দ্র মোদী এবং শি চিনফিং। ছবি: বিদেশ মন্ত্রক।

সহাস্য: হামবুর্গে নরেন্দ্র মোদী এবং শি চিনফিং। ছবি: বিদেশ মন্ত্রক।

সংবাদ সংস্থা
হামবুর্গ শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ০৪:৪৫
Share: Save:

সিকিম সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যেই নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে হাত মেলালেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। শুক্রবার জার্মানির হামবুর্গে জি-২০ বৈঠকের পাশে ব্রিকসের দেশগুলিকে নিয়ে মোদী ও শি সংক্ষিপ্ত বৈঠকও করেন। পরস্পরের প্রশংসা করে বিবৃতিও দেন তাঁরা। ডোকা লা থেকে সেনা সরানোর জন্য ভারতকে যে ভাবে লাগাতার হুমকি দিয়ে আসছে ড্রাগন, সেই পরিস্থিতিতে আজকের সৌজন্যের এই ছবি বিশেষ তাৎপর্যের।

সিকিম সীমান্তে টানাপড়েনের মধ্যে যুদ্ধের উত্তেজনা বাড়ছিল। বিশেষ করে চিনের সরকারি সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’ রোজই নানা ভাবে ভারতকে কটাক্ষ করছিল। বাস্তব পরিস্থিতিও ক্রমশই জটিল হয়ে পড়ছিল। ডোকা লা-য় প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে মুখোমুখি রয়েছে দু’দেশের সেনা, যা ১৯৬২ সালের পরে কখনও ঘটেনি। এই পরিস্থিতিতেই শি-মোদীর এই মোলাকাত পরিস্থিতিকে কিছুটা স্বাভাবিক করল বলেই ভারতের কূটনীতিকদের একাংশের দাবি।

হামবুর্গে জি-২০ বৈঠকের পাশে ব্রিকসের দেশগুলি (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা) আজ আলাদা ভাবে আলোচনায় বসেছিল। এই সময়ে মোদী ও শি পরস্পরের প্রতি শুভেচ্ছা জানান, করমর্দন করেন। তাঁদের মুখে ছিল পরস্পরের প্রতি প্রশংসা। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল বাগলে পরে জানিয়েছেন, ‘‘বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নরেন্দ্র মোদী ও শি চিনফিং-এর আলোচনা হয়েছে।’’ চিনের প্রেসিডেন্টের আগেই বক্তৃতা দেন মোদী। বলেন, প্রেসিডেন্ট চিনফিংয়ের নেতৃত্বে ব্রিকসের কাজে গতি এসেছে। এ বছরের শেষে চিনের জিয়ামেনে ব্রিকসের শীর্ষ বৈঠক বসার কথা। সেই বৈঠকের জন্য ভারতের তরফে সহযোগিতার আশ্বাসও দেন মোদী। আর বৈঠকের শেষে শি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে ভারত। গত বছর গোয়ায় ব্রিকসের দেশগুলির শীর্ষ বৈঠকের কথাও টেনে আনেন তিনি। নয়াদিল্লির প্রশংসা করে বলেন, ভারতের নেতৃত্বে ব্রিকসের মঞ্চ গতি পেয়েছে। আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভারতের সাফল্য কামনা করে বক্তব্য রাখেন চিনফিং।

আরও পড়ুন:মার্কসের দেশে জি-২০ বৈঠক শুরু, হামবুর্গ জ্বলছে বাম বিক্ষোভের আগুনে


গত কয়েক দিনে ডোকা লা-য় দুই দেশই সেনা জমায়েত বাড়িয়েছে। এর মধ্যেই পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলে বেজিংয়ের পক্ষে গত কাল জানানো হয়, হামবুর্গে শি ও মোদীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে না। নয়াদিল্লি যদিও কখনওই এই জাতীয় বৈঠকের সম্ভাবনার কথা জানায়নি। বরং সাউথ ব্লকের তরফে শুরুতে জানানো হয়েছিল, হামবুর্গে ব্রিকসের রাষ্ট্রনেতারা আলোচনায় বসবেন। সেখানেই কথা হবে মোদী ও চিনফিং-এর। কিন্তু তিন দিন আগে চিনই দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সম্ভাবনার কথা জানায়। সেই বক্তব্য থেকে কাল সরে আসে বেজিং। যা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে নতুন করে টানাপড়েনের সৃষ্টি হয়। আজ হাত মেলানোর ছবিটা পরিস্থিতিকে সামান্য হলেও স্বাভাবিক করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই ভারত মহাসাগরে আমেরিকা, জাপানের সঙ্গে ভারতের যৌথ নৌ মহড়া নিয়েও আজ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বেজিং। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জেং শুয়াং বলেছেন, ‘‘ওই দেশগুলির পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে চিনের আপত্তি নেই। তবে আশা করছি, বিশেষ কোনও দেশকে নিশানা করে এই মহড়া হচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE